লিফট-সিসিইউ সুবিধাসহ সুন্দরবন-১১ এর যাত্রা

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৭, ২৩:৫১ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৭, ০০:৩৪

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে যুক্ত হচ্ছে লিফট ও হৃদরোগীদের জন্য সিসিইউ (বেড) সুবিধাসহ বিলাশ বহুল লঞ্চ এমভি সুন্দরবন-১১। বেসরকারি লঞ্চ কোম্পানি সুন্দরবন নেভিগেশন গ্রুপের লঞ্চটি ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই রুটে যাত্রী বহন শুরু করবে। 

শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচাটায় বরিশাল নৌবন্দরের লঞ্চ ঘাটে এক দোয়া মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে লঞ্চটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। 

দোয়া মোনাজাত পরিচালানা করেন শার্ষীনা দরবারের পীর মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মহিবুলল্লাগ। অনুষ্ঠানে বরিশাল জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিআইডব্লিউএসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সমাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। দুই একদিনের মধ্যে লঞ্চটিতে যাত্রী বহন শুরু হবে। ইতিমধ্যে লঞ্চটি পরীক্ষামূলকভাবে নদীতে ভাসানো হয়েছিলো। 

সুন্দরবন নেভিগেশন গ্রুপের পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, সুন্দরবন-৭ লঞ্চটি পুনর্নিমাণ করে সুন্দরবন-১১তে রুপান্তর করা হয়েছে। তবে সুন্দরবন-৭ এর চেয়ে এ লঞ্চ প্রায় ৭০ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট বেশি প্রস্থ। এটি বরিশাল নগরীর বেলতলার নিজস্ব শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়েছে। 

সুন্দরবন শিপ ইয়ার্ড সূত্র জানায়, আধুনিক সুযোগ সুবিধার মধ্যে সুন্দরবন-১১-তে থাকছে নিচতলার সামনের অংশে হৃদরোগীদের জন্য একশয্যা বিশিষ্ট স্বয়ংক্রিয় সিসিইউ মনিটর বেড। অক্সিজেনের পাশাপাশি চিকিৎসা সুবিধাও পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে ওপরে-নিচে চলাচলের জন্য ছয়জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন লিফট।

লঞ্চটির অঙ্গসজ্জা ও আলোক সজ্জায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। অঙ্গসজ্জা ও আলোক সজ্জা দৃষ্টি নন্দন করতে এলইডি ও সাধারণ মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার বৈদুতিক বাতির সংযোজন করা হয়েছে। ডুপ্লেক্স কেবিন ও ফুডকোর্টসহ পুরো লঞ্চটিতে প্রযুক্তির ছোঁয়া আনা হয়েছে। লঞ্চে কেবিনের যাত্রীদের জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পৃথক দুইটি ডাইনিং রুম ও অভ্যর্থনা কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। যা অন্য কোনো লঞ্চেই নেই।  

২৯৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৪ ফুট প্রস্থের লঞ্চের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় রয়েছে প্রথম শ্রেণির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একক ও ডাবল মিলিয়ে ৯৩ টি কেবিন ও ৪৪ টি সোফা। এছাড়া ১টি ডুপ্লেক্স কেবিন, ছয়টি ভিআইপি, চার টি সেমি-ভিআইপি, দুটি সৌখিন ও ১১টি ফ্যামিলি কেবিন। লঞ্চে যাত্রীসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে ৩৯ টি টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। লঞ্চের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার ডেকের যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট ও আলাদা ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

লঞ্চের ডেক থেকে কেবিন, সোফা, ভিআইপি কেবিন সবখানেই যাত্রীদের বিনোদনের জন্য থাকছে এলইডি টেলিভিশন। তৃতীয় তলার ফুডকোর্টে থাকবে যাত্রীদের জন্য বাহারি ধরনের স্ন্যাকস ও খাবার। চতুর্থ তলাটি হুইল হাউজ (চালকের কক্ষ) হিসেবেই ব্যবহৃত হবে। নিরাপত্তার জন্য পুরো নৌযানটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। থাকবে পর্যপ্ত নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী ও আনসার সদস্য। 

এতে ২টি মূল ইঞ্জিন ছাড়াও পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস নিশ্চিতকরণে শক্তিশালী জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আছে হাইড্রোলিক ও ম্যানুয়াল চালনা পদ্বতি, আধুনিক রাডার ও জিপিআরএস পদ্ধতি, ফগ লাইট, আধুনিক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি, লাইফ জ্যাকেট, বয়া। লঞ্চটিতে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা প্রায় একহাজার দুইশ জন।

(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/টিটি/ইএস)