প্রতি বছর অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষা নেবে বিটিআরসি

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৩৬ | প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৩২

দেশে অ্যামেচার রেডিও ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বাড়াতে প্রতি বছর অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ। আজ সকালে বিটিআরসি ভবনে ২০১৭ সালের অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই পরিকল্পনার কথা জানান।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ বলেন, ‘অ্যামেচার রেডিও ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য প্রতি বছর পরীক্ষা নেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি ন্যানো স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এছাড়াও শিগগিরই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎপেক্ষণ করা হবে। এ দেশের শৌখিন হ্যাম অপারেটরা মহাকাশ গবেষণায় সুযোগ পাবেন।’

প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় মানুষের পাশে অ্যামেচার রেডিও ব্যবহারকারীদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা হ্যাম রেডিও ব্যবহারের অনুমতি পাবেন তাদের আমি আহ্বান করবো বাংলাদেশের যেকোনো প্রকৃতিক দূর্যোগের সময় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যে অংশ নেবেন।’

সভায় আবেদনকারীরা বিটিআরসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, অ্যামেচার রেডিও পরিচালনার জন্য বিটিআরসি বাৎসরিক ফি ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করেছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতের তুলনায় এই ফি বেশি। এছাড়াও আবেদনকারীর পক্ষ থেকে বলা হয়, একজন অ্যামেচার রেডিও ব্যবহারকারী অবাণিজ্যিকভাবে তার কার্যক্রম চালাচ্ছে। অথচ এই রেডিও সেট আমদানী করার সময় অত্যাধিক আমদানী শুল্ক দিতে হয়। এতে করে অ্যামেচার রেডিও চর্চা ব্যাহত হচ্ছে। তাই আমদানী শুল্ক প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়।

বিটিআরসির কর্তারা এসব মৌখিক আবেদন গুরুত্বের সঙ্গে শোনেন এবং পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

এর আগে সকাল ১১টায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নেন আবেদনকারীরা।

অ্যামেচার রেডিও সাধারণত নির্দিষ্ট বেতার তরঙ্গে নিজস্ব বিনোদন, অবাণিজ্যিকভাবে তথ্য আদান প্রদান, গবেষণা, ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ এবং জরুরি অবস্থায় ব্যবহৃত একটি টেলিযোগাযোগ সার্ভিস। ‘অ্যামেচার’ শব্দটি সাধারণত আর্থিক সংশ্লিষ্টতাবিহীন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহী ব্যবহারকারীকে বাণিজ্যিক ব্রডকাস্টিং, জননিরাপত্তা প্রদানকারী সংস্থা অথবা পেশাদার টু-ওয়ে সার্ভিস হতে পৃথক করার জন্য ব্যবহার করা হয়। প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা জরুরি অবস্থায় অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে ভূমিকা রাখে।

১৯৯১ সালে সাবেক বাংলাদেশ তরঙ্গ ও বেতার বোর্ডের ১৮তম সভায় এদেশে প্রথম অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস প্রবর্তণের জন্য লাইসেন্স প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর ১৯৯৫ সালে প্রথম অ্যামেচার রেডিও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বিটিআরসি হতে ২০০৩, ২০০৮ এবং সর্বশেষ ২০১৩ সালে অ্যামেচার রেডিও পরীক্ষা নেয়া হয়।

২০১৩ সালের পরীক্ষায় ১৬৬ জন অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১৪৭ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হন। বর্তমানে ২৯৭ জন ব্যক্তি অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স গ্রহণ করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই রেডিও পরিচালনা করছেন। দেশে অ্যামেচার রেডিও ব্যবহারকারীদের নিয়ে একটি সংগঠন আছে। যার নাম বাংলাদেশ অ্যামেচার রেডিও লিগ। সংগঠনটি অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদনকারীদের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য সকল ধরনের সহযোগিতা করে আসছে।

অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষা ২০১৭ অংশগ্রহণ করার জন্য ২৫৯ জন আবেদন করেন। তারমধ্যে ২৫৪ জন পরিক্ষার্থীর আবেদন যাচাই বাছাই শেষে গৃহিত হয়।

অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরিক্ষার্থীগণকে বিটিআরসি হতে অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস সার্টিফিকেট দেয়া হবে। পরবর্তীতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের অনুকূলে কল সাইন এবং অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স দেয়া হবে।

মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুফি মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন, পরিচালক স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট, আশীষ কুমার কুণ্ডু, পরিচালক, অর্থ হিসাব ও রাজস্ব, আফতাব মো. রাশেদুল ওয়াদুদ, পরিচালক প্রশাসন এবং কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :