৪০ লাখ রুপির হীরা ফিরিয়ে দিল কিশোর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ আগস্ট ২০১৭, ২০:৩২ | প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০১৭, ২০:২৬

ভারতের গুজরাট রাজ্যের মাহিদাপুরার ডায়মন্ড স্ট্রিটে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্র বিশাল। খেলতে খেলতে বল চলে যায় রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায়। বলটা কুড়াতে গিয়েছিল বিশাল। কিন্তু তার হাত আটকে যায় একটা প্যাকেটের ওপর। একটি বাইকের চাকার পাশে পড়েছিল প্যাকেটটা। বিশাল সেটা কৌতুহলবশত তুলে পকেটে ভরে নেয়।

খেলাশেষে বাড়িতে গিয়ে একান্তে প্যাকেটটা খুলতেই চোখ বিস্ফারিত হয়ে যায় বিশালের। ভাবে, ঠিক দেখছি তো! হ্যাঁ, ঠিকই দেখেছিল সে। হীরেতে ভর্তি ছিল প্যাকেটটা। বিষয়টা যেমন বন্ধুদের অগোচরে রেখেছিল, তেমনই বাড়িতেও প্যাকেট সম্পর্কে কাউকে কিছু বলেনি বিশাল। সে জানায়, শুধু মনে হচ্ছিল এই প্যাকেটের মালিককে যেভাবেই হোক এটা ফেরত দিতে হবে। সে দিন রাতের মতো তার খাওয়া-ঘুম সব উড়ে গিয়েছিল। শুধু ভোরের আলো ফোটার প্রহর গুণছিল সে। যেখানে প্যাকেটটা পেয়েছিল পর পর দু’দিন সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল বিশাল। কিন্তু মালিকের হদিস পায়নি। তৃতীয় দিন যখন সে ওই পার্কিংয়ের কাছে দাঁড়িয়েছিল, এক ব্যক্তিকে ফোনে হীরের একটি প্যাকেটের কথা কারও সঙ্গে আলোচনা করতে শোনে সে।

বিশাল বলেন, ‘আমি লোকটাকে অনুসরণ করলাম। তারপর তাকে ডেকে প্যাকেটটা দেখাতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন তিনি। তাকে বললাম, প্যাকেটটা আমার কাছেই রেখে দিয়েছিলাম আসল মালিকের হাতে তুলে দেব বলে।’

ডায়মন্ড স্ট্রিটের বিখ্যাত হীরা ব্যবসায়ী মনসুখ সাভালিয়াই প্যাকেটটি হারিয়ে ফেলেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘প্যাকেটটা যে ফিরে পাব তা আশাই করিনি। এই ছেলেটাই আমাকে ও আমার পরিবারকে বাঁচিয়ে দিল। না হলে এই দেনা শোধ করতে ঘরবাড়ি বিক্রি করে দিতে হত!’

বিশালের সততায় খুব খুশি ডায়মন্ড স্ট্রিটের ব্যবসায়ীরা। এই সততার পুরস্কারও দেয়া হয় তাকে। সাভালিয়া নিজে ৩০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও ১১ হাজার টাকা পুরস্কার দেয় বিশালকে। সাভালিয়া জানান, মোট ৭০০ ক্যারেটের হীরা ছিল ওই প্যাকেটে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৪০ লাখ রুপি।

খুব একটা সচ্ছল পরিবারের ছেলে নয় বিশাল। মা সেলাইযের কাজ করে, বাবা একটি দোকানের প্রহরী। এত মূল্যবান জিনিস পেয়ে কীভাবে লোভ সামলাল সে? বিশালের স্পষ্ট জবাব, একটা ৫০ টাকার নোটই তাকে শিক্ষা গিয়েছে।

বিশাল জানায়, অনেক দিন আগে মা তাকে ৫০ টাকার নোট দিয়ে কিছু কিনতে পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেটা অসাবধানতাবশত হারিয়ে যায়। টাকা হারিয়ে খুব মুষড়ে পড়েছিল সে।

‘তখন একটা উপলব্ধি হয়েছিল, ৫০ টাকা হারিয়েই এমন অবস্থা আমার, যার কোনও মূল্যবান জিনিস হারায় সে ব্যক্তির মনের অবস্থা কী হবে তা হলে?’ এই উপলব্ধিই তাকে শিখিয়েছে কোনও হারিয়ে যাওয়া বস্তু পেলে সেটা সেই মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :