জঙ্গিদের ঠেকাতে আবাসিক হোটেলে আট দফা নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০১৭, ২১:৫৬
রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেল

নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও জঙ্গি হামলা ঠেকাতে রাজধানীর আবাসিক হোটেলগুলোকে আট দফা নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার। পান্থপথের হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে অভিযানের পর এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

পুলিশের দেয়া নির্দেশনা না মানলে হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাড়ির মালিকদের সচেতনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে এখন রাজধানীতে বাসা ভাড়া নিতে পারছে না জঙ্গিরা। তাই তারা রাজধানীতে সক্রিয় হতে পারছে না জঙ্গি সংগঠনগুলো। ফলে ঢাকার বাইরে থেকে হামলার সব প্রস্তুতি নিয়ে আবাসিক হোটেলে থেকে বড় হামলার পরিকল্পনা করছে। হোটেলগুলোর দুর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থাকে ব্যবহার করে রাজধানীতে আবারো বড় হামলা চালানোর শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এ কারণেই এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

গত ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা জারি করেন পুলিশ কমিশনার। গতকাল শনিবার পুলিশ কমিশনারের এই নির্দেশনা ডিএমপির থানাগুলোতে পৌঁছে যায়। ওই দিনই সংশ্লিষ্ট থানার সব আবাসিক হোটেলে তা জানিয়ে দেয়া হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে বাড়ির মালিকরা ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া কাউকে বাসা ভাড়া দিচ্ছেন না। আবার সন্দেহ হলে গ্রামের বাড়িতে পর্যন্ত খোঁজখবর নিচ্ছেন। বাড়ির মালিকদের এমন সচেতনতায় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা বাসা ভাড়া নিতে পারছে না। এ সুযোগে তারা আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে। তারা আরও জানান, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা হোটেল মালিকদের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তা যথাযথভাবে পালনের অনুরোধ করা হয়েছে। কোনো হোটেল মালিক এসব নির্দেশনা না মানলে তারা কঠোর হবে বলেও জানান।

যা রয়েছে আট দফা নির্দেশনায়

আবাসিক হোটেলে বোর্ডার প্রবেশের সময়ে তার ছবি তুলতে হবে। বোর্ডারের জাতীয় পরিচয়পত্র পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইন্সের কপি সংগ্রহ করতে হবে। বোর্ডারের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা এবং ফোন নম্বর রাখতে হবে। বোর্ডারের দেয়া মোবাইল নম্বরে তাৎক্ষণিক কল করে এর সঠিকতা যাচাই করতে হবে। আর্চওয়ে দিয়ে দেহ তল্লাশি করতে হবে। আর্চওয়ে না থাকলে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে। বোর্ডার যতবার হোটেলে প্রবেশ করবে ততবারই দেহ তল্লাশি করতে হবে। সব লাগেজ স্ক্যানার দিয়ে চেক করতে হবে। স্ক্যানার না থাকলে ম্যানুয়াল চেকের ব্যবস্থা করতে হবে।

বোর্ডার হোটেলে অবস্থানকালে যতবার লাগেজ, ব্যাগ, মালামাল নিয়ে প্রবেশ করবে ততবারই ওই লাগেজ, ব্যাগ, মালামাল স্ক্যান ও ম্যানুয়াল চেক করতে হবে। কোনো অতিথি এলে অনুরূপভাবে তার দেহ ও ব্যাগ তল্লাশি করতে হবে। সিসি ক্যামেরা (রাতের ছবি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন) স্থাপন করতে হবে এবং হোটেলের চার পাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। ভেহিকেল স্ক্যানার দিয়ে গাড়ি চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার ওই চিঠিতে উল্লেখ করেন, ১৫ আগস্ট পান্থপথে হোটেল ওলিওতে আশ্রয় নেয়া এক জঙ্গি পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছে। আত্মঘাতী ওই জঙ্গি বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরণ নিয়ে ওই হোটেলে অবস্থান করছিল। জাতীয় শোক দিবসে শোক শোভাযাত্রায় আত্মঘাতী হামলা করে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটাতে ওই জঙ্গি হোটেলে অবস্থান করছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ঢাকা মহানগরীকে জঙ্গিমুক্ত করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ঢাকায় বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করে ‘সিআইএমএস’ সফটওয়্যারে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এতে সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রবণতা কমছে। কিন্তু রাজধানীর আবাসিক হোটেলে আগতদের তথ্য সংগ্রহ, দেহ ও লাগেজ তল্লাশি ইত্যাদি কার্যক্রম না করাতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে। উল্লিখিত নির্দেশনা মানা হলে জঙ্গিদের আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নেয়া কঠিন হবে।

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :