ত্রাণের চাল বেচে খাওয়ার স্যালাইন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৭, ১২:০৫ | প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০১৭, ১১:৪৯

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর মধ্য গড্ডিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র লাবু হোসেন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার প্রচণ্ড ডায়রিয়া দেখা দেয়। ঘরে কোনো টাকা না থাকায় তার দাদি ছকিনা বেগম ত্রাণের চাল বিক্রি করে ওষুধ ও স্যালাইন এনে খাওয়ালে সুস্থ হয়ে উঠে লাবু। ওই উপজেলার চর সির্ন্দুনা গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, পানিবন্দি হওয়ার পর আমরা দুইবার করে ত্রাণ সহায়তা পেলেও চিকিৎসাসেবা পারছি না। শৌচাগারগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নারীরা। আমাদের এলাকায় কোনো মেডিকেল টিম দেখা যায়নি। ফলে নারী ও শিশুরা বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

উপজেলার চর গড্ডিমারী গ্রামের জেলহাস আলী বলেন, আমার বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় আমি দুইদিন ১০ কেজি করে চাল পেয়েছি। কিন্তু আমার পরিবারের কয়েকজনের ডায়রিয়া, চর্মরোগ দেখা দিলেও কোনো সরকারি ওষুধ পাইনি।

এই অভিযোগ শুধু জেলহাস আলীর নয়, বন্যাকবলিত এলাকার অনেকের একই অভিযোগ। তারা অনেকেই বন্যার্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে গঠিত মেডিকেল টিমের কোনো পরামর্শ কিংবা ওষুধ পাননি।

বন্যার্ত এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, বয়স্করা ত্রাণ সহায়তা পেলেও শিশুদের উপযুক্ত কোনো খাবার নেই। শিশুরা শুধু মায়ের বুকের দুধের ওপর টিকে আছে। বাধ্য হয়ে অনেক শিশুকে বড়দের খাবারই খাওয়ানো হচ্ছে। এতে তাদের পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এছাড়া উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের ফলে বন্যার পানি ভয়াবহ রকম দূষিত হয়ে পড়ছে। ফলে পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিমগুলোর কার্যক্রম চোখে পড়র মতো নয়। এসব মেডিকেল টিম খাবার স্যালাইন বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করছে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় কম।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রের ইনচার্জ লিপি পারভীন ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমত বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে চেষ্টা করছি। তবে সংকটের কারণে সবাইকে ওষুধ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. আমিরুজ্জমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, বন্যাদুর্গতদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৫৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, একাধিক মেডিকেল টিমের লিডার হিসেবে একজন করে চিকিৎসক রয়েছেন। এসব চিকিৎসক মেডিকেল টিম ও হাসপাতাল দুটোই দেখছেন। আমরা শুধু পাতলা পায়খানা ও খোসপাঁচড়া (চুলকানি) জাতীয় রোগী ছাড়া তেমন কোনো রোগী পাইনি।

(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :