চট্টগ্রাম মহানগরে আটটি পশুর হাট, ৩৬৭ স্থানে জবাই

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০১৭, ১৪:১৭

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশুর হাট ইজারা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

করপোরেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতবারের মতো এবারো চট্টগ্রাম মহানগরীতে স্থায়ী দুটি পশুর হাটের পাশাপাশি অস্থায়ী ছয়টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে। তবে এরমধ্যে কমল মহাজন হাট ও সল্ট গোলা রেলক্রসিংয়ে পশুর হাট বসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

নগরীর সাগরিকা ও বিবির হাট স্থায়ী পশুর হাট ছাড়াও কর্ণফুলী পশু বাজার, স্টিল মিল পশুবাজার, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চবিদ্যালয় মাঠ (কাটগড়) বাজার, পোস্তারপাড় স্কুল মাঠে পশুর বাজার বসছে এবার।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চসিকের এস্টেট শাখার সহকারী এস্টেট অফিসার এখলাস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ছয়টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে দুটি হাটের দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করেও কোনো ইজারাদার পাওয়া যায়নি। ফলে এ পশুর হাট দুটি নিয়ে একটু জটিলতা থেকে গেছে। এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দুএকদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যদি কোনো ইজারাদার পাওয়া না যায় তাহলে এবারে এ বাজার দুটি বসবে না। কেননা ইজারা না হলে হাট দুটির বৈধতা থাকবে না।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় পশুর হাট বসাতে দেয়া হবে না। যত্রতত্র পশু জবাইও করতে পারবেন না নগরবাসী। চসিক নির্ধারিত প্রায় ৩৬৭টি স্থানে পশু জবাই করতে হবে তাদের।

চসিক সূত্র জানায়, কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ঈদের দিনেই বর্জ্য অপসারণ শেষ করতে এবার করপোরেশনের নিয়মিত দুই হাজার কর্মচারীর পাশাপাশি আরও প্রায় দুই হাজার শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ঈদের দিন সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত নির্ধারিত স্থানগুলো থেকে ২০০ গাড়ির মাধ্যমে তারা বর্জ্য সংগ্রহ করবে।

সূত্র আরও জানায়, চট্টগ্রামে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাট নিয়ে বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। দুটি অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করেও কোনো ইজারাদার পায়নি করপোরেশন। ইজারাদার না পাওয়া চসিকের অস্থায়ী বাজার দুটি হচ্ছে কমল মহাজন হাট ও সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন অস্থায়ী পশুর হাট। তবে অস্থায়ী অপর চারটি পশুর হাটের ইজারা এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

চার হাটের ইজারা দেয়া হয়েছে তিন কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকায়। সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন স্থানের জন্য তিনটি দরপত্র বিক্রি হলেও কমল মহাজন হাট পশু বাজারের জন্য একটি দরপত্রও বিক্রি হয়নি। এ ছাড়া সল্টগোলা রেল ক্রসিংয়ের জন্য তিনটি দরপত্র জমা হলেও কাঙ্ক্ষিত দর পায়নি চসিক। ফলে এ দুটি পশু বাজারের জন্য তৃতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হতে পারে বলে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ২৩ বা ২৪ আগস্ট থেকে হাটগুলোতে পশু বিক্রির কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সল্টগোলা রেলক্রসিং পশুর হাটের জন্য তিনটি দরপত্র জমা হলেও তাতে কাঙ্ক্ষিত দর পায়নি চসিকের রাজস্ব বিভাগ। এই হাটের জন্য সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২২ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু রাজস্ব বিভাগের কাঙ্ক্ষিত দর ছিল ৪০ লাখ তিন হাজার ১৭৬ টাকা। অথচ গত বছর এ পশুর হাটের ইজারা দেয়া হয়েছিল ৪৪ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা।

কমল মহাজন পশুর হাটের জন্য রাজস্ব বিভাগের কাঙ্ক্ষিত দর ছিল এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। গত বছর এই হাট ইজারা দেয়া হয়েছিল ৫১ হাজার টাকায়। এ দুটি অস্থায়ী পশুর হাটে সিটি করপোরেশন যদি কোনো ইজারাদার না পায় তাহলে বাজার দুটিতে পশু বেচা-বিক্রি করা যাবে না। আইন অনুযায়ী ইজারা ছাড়া বা করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া নগরীর কোথাও বাজার বসানো যাবে না। এ হিসেবে ইজারাদার না পেলে এ বাজার দুটিতে পশুর বাজার বসবে না।

সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নগরীর ছয়টি অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য ২৬ জুলাই দরপত্র আহ্বান করেছিল চসিক। ছয়টি বাজারের মধ্যে চারটি বাজারের জন্য মোট ৩৯টি দরপত্র বিক্রি হলেও বাক্সে জমা পড়েছিল মাত্র ১৮টি। জমাকৃত চারটি বাজারের দরপত্রের বিপরীতে কাঙ্ক্ষিত দর পেয়েছে। চারটি অস্থায়ী বাজারের ইজারার বিপরীতে তিন কোটি ৬১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৮৬ টাকার দর পেয়েছে সিটি করপোরেশন।

এরমধ্যে কর্ণফুলী পশু বাজারের জন্য (নূর নগর হাউজিং) সর্বোচ্চ দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা, স্টিল মিল পশুবাজারের জন্য সর্বোচ্চ ৯২ লাখ এক হাজার টাকা, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চবিদ্যালয় মাঠ (কাটগড়) বাজারের জন্য সর্বোচ্চ ৩৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা ও পোস্তারপাড় স্কুল মাঠে ছাগল বাজারের জন্য দর উঠেছে ১৮ লাখ পাঁচ হাজার ৭৮৬ টাকা।

(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/আইকে/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা