১০৫ বছর ধরে পিরিয়ডকালীন ছুটি চালু এই স্কুলে

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৭, ১৭:২২ | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০১৭, ১৭:২৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পিরিয়ডের সময় মেয়েদের ছুটি দেয়া উচিত কি না এই নিয়ে যখন বিশ্বজোড়া তর্ক-বিতর্ক চলছে, ঠিক তখনই জানা গেল চমকে দেবার মতো এক তথ্য। ভারতের কেরালা রাজ্যের একটি ছোট্ট স্কুল তাদের ছাত্রীদের পিরিয়ডের ছুটি দিয়ে আসছে ১০৫ বছর আগে থেকে।

এরনাকুলামের ত্রিপুনিতুরার সরকারি স্কুল। ১৯১২ সাল থেকে ছাত্রীদের পিরিয়ডের ছুটি নেয়ার চল রয়েছে এই স্কুলে। বার্ষিক পরীক্ষার সময় ছাত্রীরা পিরিয়ডের ছুটি নিতে পারে। পরীক্ষার সময় পিরিয়ড হলে সেই ছাত্রী পরেও পরীক্ষা দিতে পারে।

ইতিহাসবিদ পি ভাস্করানুন্নি তার ‘কেরালা ইন দ্য নাইনটিনথ সেঞ্চুরি’ বইটিতে লিখেছেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পিরিয়ডের ছুটি অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তার যুক্তি ছিল, পিরিয়ড চলাকালীন গরহাজির থাকেন স্কুলের ছাত্রী ও শিক্ষিকারা। ১৯৮৮ সালে কেরালা সাহিত্য একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত এই বইটিকে দক্ষিণি রাজ্যের বিশ্বাসযোগ্য ইতিহাসের ধারক হিসেবে গণ্য করা হয়।

ওই বইতে বলা হয়েছে, সেই সময়কার শিক্ষাআইন অনুযায়ী বার্ষিক পরীক্ষায় বসার জন্য ৩০০ দিনের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ছিল ছাত্রছাত্রীদের জন্য। তাতে লেখা আছে, ‘ত্রিপুনিতুরা স্কুলের শিক্ষিকা ও ছাত্রীরা পিরিয়ডের সময় স্কুলে যেতেন না।’ এ জন্যই ১৯১২ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক ভিপি বিশ্বনাথ আইয়ার মেয়েদের পিরিয়ডের ছুটি মঞ্জুর করার জন্য ত্রিশূরের স্কুল পরিদর্শকের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন।

বইটিতে দাবি করা হয়েছে, ঠিক পাঁচদিনের মাথায় এই আর্জি মেনে নেয় কর্তৃপক্ষ। বইতে লেখা আছে, ‘২৪ জানুয়ারি শিক্ষা কর্মকর্তা নির্দেশিকা জারি করে বলেন যে ছাত্রীরা পিরিয়ডের জন্য বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারবে না, তাদের পরীক্ষা পরে এক সময়ে নেয়া হবে।’

১০০ বছর আগে যখন পিরিয়ড নিয়ে মানুষের মধ্যে সাংঘাতিক ট্যাবু ছিল, তখন এই সিদ্ধান্ত সত্যিই প্রশংসনীয়। এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর কেরালা বিধানসভার চলতি অধিবেশনে কংগ্রেস বিধায়ক কেএস সাবারিনাথন নারী কর্মীদের ‘পিরিয়ড লিভ’ মঞ্জুর করার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন মহলের মতামত নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

সূত্র: এই সময়

(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/এসআই)