খুলনা-১: আ.লীগে ‘কমন’ প্রার্থী হটাতে তৃতীয় মুখ

ব্যুরো প্রধান, খুলনা
| আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০১৭, ০৮:২০ | প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট ২০১৭, ০৮:০৮

সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খুলনা-১ আসনে বরাবরই আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় লাভ করে আসছেন। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে খ্যাত এলাকাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন বলেও পরিচিত। ফলে এখানে মনোনয়ন পেতে দলের নেতাদের মধ্যে এক ধরনের মরিয়া ভাব দেখা যায়।

জাতীয় নির্বাচনের এখনো প্রায় দেড় বছর বাকি থাকলেও এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের তিন মনোনয়নপ্রত্যাশী জোর নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন ‘কমন’ প্রার্থী রয়েছেন যারা গত ২০ বছরে মনোনয়ন পেলে তো করেছেনই, না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। এই কমন প্রার্থী হটাতে এবার প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন তৃতীয় মুখ।

তারা তিনজনই সংসদীয় এলাকায় নানা কৌশলে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও বিভিন্ন সভা-সমাবেশ এমনকি পরিচিত মহলেও নিজেকে প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছেন তারা।

তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বলে এই আসনে বরাবর দলের মনোনয়ন পেয়ে আসছেন সংখ্যালঘুদের কেউ। ঘুরেফিরে পঞ্চানন বিশ্বাস ও ননী গোপাল পেয়েছেন দলের মনোনয়ন। আবার মনোনয়ন না পেয়ে দুজনই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছেন। জয়-পরাজয়ও এই দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে।

দলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এই ৯৯ নম্বর সংসদীয় আসনে এবার দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দুই ‘কমন’ প্রার্থীর সঙ্গে লড়বেন আরো একজন- দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল হোসেন। তিন প্রার্থীই আগামী নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছেন।

গত নির্বাচনগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট না পেয়ে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন পঞ্চানন বিশ্বাস। ওই নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থী শেখ হারুনুর রশীদকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। পরে অবশ্য আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সংস্কারপন্থী হওয়ার অভিযোগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পঞ্চাননকে মনোনয়ন দেয়নি দল। মনোনয়ন পাওয়া ননী গোপাল ম-ল এক লাখ ২০ হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী আমীর এজাজ খান। তিনি পেয়েছিলেন ৬৮ হাজার ৪২ ভোট। আমীর এজাজ খান আগামী নির্বাচনে আবার বিএনপির মনোনয়ন পাবেন বলে জানা গেছে।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার মনোনয়নবঞ্চিত থাকতে হয় ননী গোপালকে। ওই নির্বাচনে আবার দলীয় মনোনয়ন পান পঞ্চানন। ৬৬ হাজার ৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ননী গোপাল ভোট পান ৩৪ হাজার ৫২৭টি।

ননী গোপাল ও পঞ্চানন দুজনই এলাকায় জনপ্রিয় হলেও তাদের বিরুদ্ধে আছে দখলের অভিযোগ। ননীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিদ্যালয়ে নিয়োগ-বাণিজ্য, খাসজমি দখলের। আর পঞ্চানন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অন্যের জমি দখলের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়। এই মামলার সাত আসামির তিনজনই তার পরিবারের সদস্য। এসব অভিযোগ অবশ্য বরাবর অস্বীকার করে আসছেন ননী ও পঞ্চানন।

এই দুজনকে পেছনে ফেলে দলীয় মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন যে শেখ আবুল হোসেন, তার বিরুদ্ধেও খাসজমি দখল করে হ্যাচারি নির্মাণ, অন্যের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব কিছুই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে দাবি করছেন শেখ আবুল হোসেন। তিনি বলেন, “আমি দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছি। এটা আমার প্রতিপক্ষ মেনে নিতে পারেনি। ফলে তারা আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি যাতে আগামীতে সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পাই সে জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :