ইয়াসমিন ট্রাজেডি দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০১৭, ০৯:২৯

আজ ২৪ আগস্ট। পুলিশ হেফাজতে কিশোরী ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার ২২ বছরপূর্তি দিবস। ১৯৯৫ সালের এই দিনে দিনাজপুরে কয়েকজন বিপদগামী পুলিশ সদস্য কিশোরী ইয়াসমিনকে ধর্ষণ ও হত্যা করে, বাংলাদেশের ইতিহাসে যা জঘন্যতম একটি ঘটনা।

সেদিনের ওই ঘটনার পর উত্তাল হয়ে পড়েছিল দিনাজপুর। বিক্ষুব্ধ জনতা এক হয়ে দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানা, তিনটি পুলিশ ফাঁড়ি, কাস্টমস গোডাউন, চারটি পত্রিকা অফিসসহ বেশ কিছু স্থাপনা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সামু, সিরাজ ও কাদের নামে তিনজন। আহত হয়েছিল শতাধিক মানুষ।

সেদিনের ওই ঘটনার পর থেকে দিনটি ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। কিন্তু এখনো নারী নির্যাতন বন্ধ হয়নি এখনও। ইয়াসমিনের মা শরিফা খাতুন দেশের সকল রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক সংগঠনের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং সামাজিক আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

সেদিন যা ঘটেছিল

২৪ আগস্ট ১৯৯৫। স্থান, দশ মাইল মোড়। সময় ভোর চারটা। দিনাজপুর শহর অভিমুখে ফেরার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তরুণী ইয়াসমিন। ফজরের নামাজ পড়তে বের হওয়া স্থানীয় মুসল্লিরা নিরাপদে যেতে তাকে তুলে দিলেন একটি পুলিশ ভ্যানে। মুসল্লিরা কোতোয়ালি পুলিশকে অনুরোধ করলেন তরুণীকে দিনাজপুরে পৌঁছে দিতে। কিন্তু পুলিশ ভ্যানে উঠেই ইয়াসমিনকে বিদায় নিতে হয় পৃথিবী থেকে। ১০ মাইল থেকে দিনাজপুর শহরে আসার পথে ব্রাক স্কুলের সামনে ভোরে পুলিশ ভ্যানে থাকা তিন পুলিশ সদস্য এসআই মইনুল, কনস্টেবল সাত্তার ও অমৃত ইয়াসমিনের শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে চলন্ত পিকআপ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করে।

ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরপর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দিনাজপুরের জনতা। বিক্ষুব্ধ হাজার হাজার জনতা কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করে। লুট হয় কাস্টমস গোডাউনসহ শহরের বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের অনেক মালামাল। জ্বালিয়ে দেয়া হয় চারটি পত্রিকা অফিস ও প্রেসক্লাব।

২৭ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা রাজপথে নেমে এসে সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তার বদলি এবং দোষী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করলে জনতার উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে। এ ঘটনায় সামু, কাদের ও সিরাজ নিহত হয়। আহত হয় আরও শতাধিক ব্যক্তি।

নিরাপত্তাজনিত কারণে ইয়াসমিন হত্যা মামলাটি দিনাজপুর থেকে স্থানান্তর করা হয় রংপুরে। রংপুর বিশেষ আদালতে ইয়াসমিন হত্যা মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিন পুলিশ সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়।

এরপর থেকে প্রতিবছরের ২৪ আগস্ট এই দিনটিকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। ইয়াসমিনকে স্মরণে দিনাজপুরের দশ মাইল এলাকায় তৈরি করা হয়েছে ইয়াসমিন স্মরণী। দিবসটি পালনে ইয়াসমিনের পরিবার এবং বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী দোয়া মাহফিল, কবর জিয়ারত ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

ঢাকাটাইমস/২৪আগস্ট/এসএ/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :