দরিদ্র কলেজছাত্রীর পাশে মির্জাপুরের ইউএনও

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট ২০১৭, ১২:২২

কাজী মারিয়া আক্তার। মির্জাপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের বরটিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুল মান্নানের মেয়ে মারিয়া। ২০১৭ সালে ড. আয়েশা রাজিয়া খোন্দকার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাসের পর মির্জাপুর কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি হন তিনি। অভাবের সংসার হলেও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে মেধাবী মারিয়া। তার স্বপ্নপূরণে বর্গাচাষী বাবা আব্দুল মান্নানের সমর্থন থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া তার বাবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় কলেজে ভর্তি হলেও গত দুই মাসেও বই কিনতে পারেননি।

নিজের দুরবস্থার কথা বান্ধবী মীম আক্তারকে জানায় মারিয়া। মীমের পরামর্শে বৃহস্পতিবার সকালে সহযোগিতা পেতে নিজেই হাজির হন মির্জাপুরের ইউএনও ইসরাত সাদমীনের কাছে। ইউএনও’র কাছে তুলে ধরেন পরিবারের দুরবস্থা ও নিজের স্বপ্নের কথা।

ইউএনও আন্তরিকতার সঙ্গে মারিয়ার কথা শুনেন এবং তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ওই সময় ইউএনও ইসরাত সাদমীন মারিয়ার বই কেনার জন্য এক হাজার টাকা দেন এবং কলেজে বিনা বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করাও আশ্বাস দেন।

কিছু দিন আগে মারিয়ার বান্ধবী মীম আক্তার নিজের বিয়ে বন্ধ করতে সহযোগিতা চেয়ে ইউএনও ইসরাত সামদীনের মোবাইলে এসএমএস পাঠায়। এসএমএস পেয়ে ইউএনও মীমের বাড়িতে হাজির হয়ে বন্ধ করেন বাল্যবিয়ে।

ইচ্ছা থাকা সত্বেও আর্থিক অনটনের কারণে মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করে বিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে মীমের মা ইউএনও ইসরাত সাদমীনকে জানায়। একথা জানার পর মীমের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়ারসহ তার মাকে একটি সেলাই মেশিন দেয়া ও ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করেন ইউএনও সাদমীন। সেই মীমের পরামর্শে বৃহস্পতিবার ইউএনও সাদমীনের অফিসে যান মারিয়া।

নগদ টাকা পেয়ে ও কলেজে বিনা বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাসে কাজী মারিয়া আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। কলেজছাত্রী মারিয়া জানায়, তাদের কোনো জায়গা সম্পত্তি নেই। তার বাবা একজন বর্গাচাষী এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। দুই ভাই বোনের মধ্যে তিনি বড়। লেখাপড়া শিখে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় মারিয়া। তার স্বপ্নপূরণে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন মারিয়া।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন বলেন, তিনি যোগদানের পর পরই অসহায় ও নির্যাতিতাদের সহযোগিতার জন্য ‘কন্যা সাহসিকা নামে একটি সেল’ খুলেছেন। এই সেলের মাধ্যমে ইতোমধ্যে মীম আক্তারসহ অনেকের বাল্যবিয়ে বন্ধ ও আর্থিক সহযোগিতা ও পুনর্বাসন করা হয়েছে। সহযোগিতা পাওয়া মীমের পরামর্শে কলেজ ছাত্রী মারিয়া আমার কাছে আসে। তার লেখাপড়ার ইচ্ছা শক্তি দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি এবং লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।

ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :