ব্যাংকে কোনো কেরানির প্রয়োজন নেই: অর্থমন্ত্রী
ঋণ প্রস্তাব আরও ভালোভাবে যাচাইয়ের তাগিদ দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘ব্যাংকের পক্ষে যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে রকম অফিসার প্রয়োজন। তিনি না পারলে আরেকজনের কাছে দিয়ে দেবেন। ব্যাংকে কোনো কেরানির প্রয়োজন নেই। ব্যাংকে যারা কাজ করেন তাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার উপযোগী হতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৬৩ সালে আমার ব্যাংকব্যবস্থায় কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তখন দেখেছি সেখানে কোনো কেরানি ছিল না। পৃথিবীর কোনো দেশে ব্যাংকে কেরানি নেই।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের অবস্থা পর্যালোচনা: চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপায়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
ব্যাংকিং ট্রেনিংয়ের জন্য সব ব্যাংক মিলে একটি ইনস্টিটিউট করার পরামর্শ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘৩০টি জেলায় ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করা হলে সেখানে ব্যাংকাররা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এতে করে বিভিন্ন ব্যাংকের কাজের মান সম্পর্কে তারা জানতে পারবেন। তাদের প্রশিক্ষণটা আরও ভালো হবে বলে আমি মনে করি।’
মুহিত বলেন, ‘আমাদের গড় ডিভল্টরেট (শ্রেণিকৃত ও খেলাপি ঋণ) ১০ থেকে ১১ শতাংশ, এটা খারাপ নয়। কিন্তু সরকারি ব্যাংকের ২৭ শতাংশ ডিভল্ট ঋণ এটা লজ্জা লাগে। এটা কমিয়ে আনতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ঋণের আবলোপন মানে শেষ হয়ে যাওয়া নয়। সেটা আদায় করতে হবে। সেটা আদায়ের দায়িত্ব ব্যাংকের।’
মুহিত বলেন, ‘দুটি ব্যাংক একত্রিতকরণ (মার্জার) এর ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা করে দিতে হবে। যাতে কেউ মার্জার করতে চাইলে সে সময় কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয়। তারা যেন প্রয়োজনীয় গাইডলাইন পায়।’
ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার ক্ষেত্রে জমির দলিল দেয়া হয় সেটা অনেক সময় ভুয়া থাকে। এ সম্পর্কে মুহিত বলেন, ‘ঋণ গ্রহীতারা অনেক সময় জমি দেখায় যা অনেক ক্ষেত্রে আর পাওয়া যায় না। তাই এর জন্য একটা সেন্ট্রাল ডাটাবেজ তৈরি করা উচিত। তাহলে আর ভুল তথ্য দিতে পারবে না। তাদের মধ্যে ভয় কাজ করবে যে এটার জন্য একটা সেন্ট্রাল ডাটাবেজ আছে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ বাংকের গভর্নর ফজলে করিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।
কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান। তিনি তাতে ব্যাংকব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
(ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/জেআর/জেবি)