সন্তান খোঁজ না নিলেও শতবর্ষী মায়ের পাশে ‘ঠিকানা’

রেজাউল করিম, টাঙ্গাইল
| আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০১৭, ১৯:৩১ | প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৫৯

সন্তানদের অবহেলার টাঙ্গাইলের বাসাইলে শতবর্ষী বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছে সেবামূলক সংগঠন ঠিকানা। স্থানীয় পৌরসভার মেয়রও আশ্বাস দিয়েছেন সম্ভব সব কিছু করার। বলেছেন, ছেলে মেয়েরা যেন এই মায়ের দেখাশোনা করে-সে চেষ্টা করছেন তিনি।

শুক্রবার ঢাকাটাইমসে ‘আমার বেটা-বেটিগো জানি আল্লাহ এতো বুড়া না বানায়’ শিরোনামে শবতর্ষী বৃদ্ধা ময়মন বেগমকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এর পরেই তার সাহায্যে এগিয়ে আসে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন।

ময়মন বেগমের স্বামী মারা গেছেন ১৯৮৮ সালে। তিন সন্তানের একজন ক্যান্সারে মারা গেছেন। এখন এক ছেলে আর এক মেয়ে থাকলেও তারা তাদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। মায়ের খোঁজ নেন না কেউ।

ঝুপড়ি ঘরে কোনো রকমে বেঁচে থাকা ময়মন এই বন্যায় চূড়ান্ত অসহায় অবস্থায় পড়েন। প্রথমে আশ্রয়কেন্দ্রে এবং পরে একজনের হাত ধরে এক স্বজনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু তারা তাকে রাখতে রাজি না হওয়ার পর বাসাইল হাসপাতালের পরিত্যক্ত ভবনে তাকে ফেলে যায়।

ময়মন বেগমের এই দুর্দশার খবরে তার পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় সেবামূলক সংগঠন ‘ঠিকানা’। সংগঠনটির সদস্য এনায়েত করিম বিজয় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বন্যার পানি নেমে গেলেই আমরা তার ঘরটি মেরামত করে দেব।’

সংগঠনটির সভাপতি মাসুদুজ্জামান রুমেল বলেন, ‘আমাদের সংগঠনটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমরা বৃদ্ধার দায়িত্ব নিয়েছি। নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা করেছি। পাশে আরেকটি পরিবার রয়েছে। ওই পরিবারের হাতে খাবার রান্না করে দেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে টাকা দিয়েছি। নিয়মিত আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।’

আরো পড়ুন- ‘আমার বেটা-বেটিগো জানি আল্লাহ এতো বুড়া না বানায়’

ময়মনের দুর্দশার খবর প্রকাশের পর অনেকেই শনিবার হাসপাতালের ওই পরিত্যক্ত কক্ষে যান, তার খাবারের ব্যবস্থা করেন। বাসাইলের পৌর মেয়র মজিবর রহমানও কিছু গুড়-চিড়া পাঠান।

মেয়র ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আপনার ফোন পেয়েই আমি লোক পাঠিয়েছিলাম। ওরা দেখে আসছে। শুকনো খাবার গুড়-চিড়াও দিয়ে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি বৃদ্ধার ছেলে মেয়েদের সাথে কথা বলেছি। ওরা যেন ভরণপোষণ করে সে ব্যাপারে চেষ্টা করছি।’ অসহায় এই বৃদ্ধা জন্য আপনার পক্ষ থেকে গুড়-চিড়া এটা যথেষ্ট কিনা-জানতে মেয়র বলে, ‘হাসপাতালের পাশের বাড়ির লোকজনদেরকে আমি বলে দিয়েছি উনার যা লাগে তোমরা আমাকে বলবে।’

ময়মন বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কয়জন লোক আইয়্যা (এসে) গুড় চিড়া কিন্যা দিছে।’ আপনি এখন কী চান-জানতে চাইলে ময়মেন বেগম বলেন, ‘দুই সন্ধ্যা (বেলা) খাউন আর ছাপড়া (একচালা) ঘরটা হজু (মেরামত) কইর‌্যা দিলেই অব (হবে)।’ খাবারের বিষয়ে বলেন, ‘এক লোক (ঠিকানা সংগঠন) আইয়্যা খাউন জুডাইয়্যা দিছে।’

ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :