তিন আসামির স্বীকারোক্তি

গণধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করা হয় তরুণীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
| আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ২৩:১৩ | প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ২৩:০৯

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করে মরদেহ মধুপুর বনে ফেলে রেখে যাওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম, গোলাম কিবরিয়া ও মো. শামছুল হক পৃথক পৃথকভাবে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে তারা চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।

টাঙ্গাইল কোর্ট ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হলেন- বাসের চালকের সহকারী ময়মনসিংহ জেলার মির্জাপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে আকরাম, এমদাদুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও মুক্তাগাছা উপজেলার নন্দীবাড়ি গ্রামের খোরশেদের ছেলে শামীম হোসেন। এছাড়া মধুপুর থানায় আটক অপর দুইজন হচ্ছে বাসের চালক হাবিব ও সুপারভাইজার সফর।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই দিন বাসে অন্য যাত্রীরা সিরাজগঞ্জ মোড় এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নেমে যান। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার সময় রূপা একাই বাসে ছিলেন। বাসটি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কাছাকাছি এলে বাসের সহকারী শামীম জোর করে রূপাকে বাসের পেছনের সিটে নিয়ে যায়। এ সময় রূপা সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও মুঠোফোন শামীমকে দিয়ে তার ক্ষতি না করতে অনুরোধ করেন। অনুরোধ উপেক্ষা করে শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর তাকে ধর্ষণ করে। চিৎকার করলে ধর্ষকরা তাঁর মুখ চেপে ধরে। একপর্যায়ে ঘাড় মটকে হত্যার পর মরদেহ মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকার রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের সড়কের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে মধুপুর থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর পরদিন বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহ শহরের কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। ওইদিন পুলিশ কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

সোমবার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আছানবাড়ি গ্রামের হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে মরদেহের ছবি দেখে তরুণীকে তাদের আত্মীয় জাকিয়া সুলতানা রুপা (২৭) বলে শনাক্ত করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কে চলাচলকারী ছোঁয়া পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩৯৬৩) চালক, সুপারভাইজার ও তিন হেলপারকে আটক করা হয়।

পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত তরুণী বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে মাস্টার্স করে ঢাকার আইডিয়াল ল কলেজে এলএলবি শেষ পর্বে পড়াশোনা করছিলেন। পাশাপাশি তিনি ইউনিলিভার বাংলাদেশের শেরপুর অফিসে চাকরি করতেন। ঘটনার আগের দিন তিনি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য শেরপুর থেকে বগুড়া যান এবং পরীক্ষা শেষে ওই বাসে ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুর যাওয়ার সময় তাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে।

ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/আরকে/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :