বৃষ্টি উপেক্ষা করে সদরঘাটমুখী জনস্রোত
ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে পা ফেলানোর জায়গা নেই রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। স্রোতের মতো মানুষ এখন ছুটছে সদরঘাটের দিকে। প্রতিটি লঞ্চ যাত্রীতে ঠাসা অবস্থায় ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। তবে ঘরমুখো এই যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে বৃষ্টি। সকালে এক ঘণ্টার বেশি বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে। এতে বিপাকে পড়ে ঘরমুখো যাত্রীরা।
সরকারি ছুটি শুরু হবে আগামীকাল থেকে। শেষ কর্মদিবসের সকাল থেকেই বাড়িমুখী মানুষের চাপ বাড়তে থাকে সদরঘাটে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এই ঈদে লঞ্চে ঢাকা ছাড়বেন।
সাধারণত দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চগুলো সন্ধ্যায় সদরঘাট ছেড়ে যায়। তবে এখন নির্ধারিত কোনো সময় নেই। যাত্রী ভরলেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো।
সদরঘাট ঘুরে দেখা যায়, যেসব লঞ্চ বেলা ১১টায় ছাড়ার কথা সেগুলো সকাল নয়টায় কানায় কানায় ভরা। আবার যেগুলো দুপুর একটায় ছাড়ার কথা সে লঞ্চগুলোতে ১১টায়ই পা ফেলার জায়গা নেই। কেউ কাপড় বা চাদর দিয়ে জায়গা রাখছে, আবার কেউ পাটি দিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে। বৃষ্টি সত্ত্বেও লঞ্চের ছাদে মানুষ ছাতা মাথায় দিয়ে বসে আছে। আবার কেউ কেউ ছাতা ছাড়াই দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে।
নির্ধারিত সময়ের অপেক্ষা করছে না লঞ্চগুলো। ঘাটে ভিড়ছে আর প্রতিযোগিতা করে যাত্রীরা লঞ্চে উঠছে। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর লঞ্চগুলো সময়ের আগেই ছেড়ে যাচ্ছে। সুরভী ৭, পারাবত ৯, ১১, অভিযান ৭, সুন্দরবন ২, ৮, কর্ণফুলি ৪, এম ভি ফারহান ৭, ৮, ৯, পূবালী ১, সাব্বির ৩, তাসরিফ ১, ৪, রাজহংস ২, মর্নিংসান, ফারুক শিপিং লাইন্স, এম ভি টিপু ১২ এসব লঞ্চ সময়ের অনেক আগেই ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
ফরহাদ নামে এক যাত্রী যাবেন বরিশালে। বৃষ্টিতে তার সারা শরীর ভিজে গেছে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পরিবার নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ঢাকাটাইমসকে ফরহাদ বলেন, ‘আগে থেকেই জানি ঈদের সময় লঞ্চে জায়গা পাওয়া যায় না। তাই খুব সকালেই বাসা থেকে রওনা হয়েছি। এত মানুষের ভিড়ে জায়গা পাওয়া কষ্টকর। কষ্ট হলে হোক তবুও আত্মীয়স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দটা ভাগ করতে বাড়ি যাচ্ছি।’
মুসলমানদের ঈদ উৎসব হলেও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও ছুটি পেয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। বিজয়ী রাণী নামের এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কোনো উৎসব না থাকলেও কয়েক দিন ছুটি থাকায় বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছি। অন্য সময় কাজের চাপও বেশি থাকে। তখন কাজ কর্ম ফেলে বাড়ি যাওয়া যায় না।’
হাসান নামে পারাবত লঞ্চের এক কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে জানান, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে সময়মতো লঞ্চ ছাড়া যাচ্ছে না। লঞ্চে যাত্রী ভরে গেলে প্রশাসনই লঞ্চ ছাড়ার জন্য বলছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যাত্রীদের মানা করা সত্ত্বেও তারা ছাদে গিয়ে জায়গা দখল করে বসছে। কী করবে লঞ্চের ভেতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে যাচ্ছে।’
(ঢাকাটাইমস/৩১আগস্ট/আইএইচ/জেবি)