বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কাজ মধ্য সেপ্টেম্বরে শুরু

প্রকাশ | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৮:০৬

মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

সারা দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হবে মধ্য সেপ্টেম্বরে। ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পরিসংখ্যান ও আর্থিক ক্ষতির পরিমাপ সংগ্রহ করছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়।

আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এবং তাদের কী পরিমাণ সহায়তা দরকার তার একটা তালিকা তৈরির কাজ শেষ হবে। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিকভাবে পুনর্বাসনের কাজ।

ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হিসাব নিরীক্ষায় বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি, সড়ক পরিবহন ও সেতু, রেল, এলজিআরডি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এসব মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করবে। এরপর সম্মিলিতভাবে বৈঠক করে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবে। এসব কার্যক্রমের সমন্বয় করবে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে মৎস্য অধিদপ্তর ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের সহায়তার জন্য ৪৫৯ কোটি টাকার সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ শুরু করেছে।

জানতে চাইলে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সারা দেশে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ নিরূপণের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো আলাদা আলাদা চাহিদা দেবে। এসব চাহিদা নিয়ে আমরা আনুষ্ঠানিক বৈঠক করব। সেখানেই নির্ধারণ হবে সবকিছু।’

পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তিন বান্ডিল টিন এবং ৬ হাজার টাকা দেবে বলে জানা গেছে। দেশের ৩৩টি জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭ লাখ পরিবার।

আর কৃষি মন্ত্রণালয় ফসলের হিসাব করবে। কত কৃষক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কী পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে- এসব হিসাব তৈরি করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। সে হিসাব অনুযায়ী কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ দেয়া হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মাছ ও গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তৈরি করবে। এরপর এসব খাতে পুনর্বাসনের প্যাকেজ ঘোষণা করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে মেডিকেল টিম গঠন করেছে। তারা ইতোমধ্যে কাজ করছে বন্যাকবলিত এলাকায়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সারা দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হিসাব ও চাহিদা দেবে। রেপর উদ্যোগ নেবে এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের। এ ছাড়া রাস্তাঘাট মেরামতের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে।

সত্যব্রত সাহা জানান, সারা দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু হবে। বন্যায় সারা দেশে রেল, কৃষি, মৎস্য ও সড়কের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

ঈদের মধ্যেও তাদের অফিস করতে হবে উল্লেখ করে এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আমরা আশা করছি ২৫ সেপ্টেম্বরের পর পানি থাকবে না। তাতে পুনর্বাসনের কাজ করতে সুবিধা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা জানান, ‘এবারের বন্যায় বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি মোকাবেলায় আমরা পরিকল্পনা করে এগুচ্ছি। আমাদের মন্ত্রণালয় ছুটির দিনসহ ২৪ ঘণ্টা বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করছে।’

ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন আকন্দ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দেশের উত্তর অঞ্চলের পানি নেমে যাচ্ছে। সবশেষ তথ্যানুযায়ী ৩৩টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন থেকে ৪টা জেলা থেকে পানি নেমেছে। ১৭ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১সেপ্টেম্বর/মোআ)