গাবতলীতে ‘ছাদে ২০০’ হাঁকাহাঁকি
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ির দিকে ছুটছে মানুষ। ট্রেনে, বাসে, লঞ্চে এখন ‘ঠাঁই নাই আর নাহি রে’। কিন্তু নাড়ির টান বলে কথা। তাই ছাদে করেই ঘরমুখো হচ্ছেন অনেকে। তাই বলে ভাড়া কম নিচ্ছে ভাবলে ভুল হবে। বরং বাসগুলোর স্বাভাবিক ভাড়ার কয়েক গুণ বেশিতে ছাদে যাত্রী তুলছে তারা।
আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে গাবতলীতে দেখা গেছে এমন দৃশ্য- বাসের সহকারীরা হাঁকাহাঁকি করছে- ছাদে ২০০, ছাদে ২০০...
কোন পর্যন্ত ভাড়া ২০০ টাকা? বাসকর্মীরা হাঁকছে আবার- পাটুরিয়া ২০০, ডাইরেক্ট ২০০।
শুকতারা নামের ওই বাসের ভেতরটা পরিপূর্ণ যাত্রীতে। ইতিমধ্যে ছাদেও উঠেছেন অনেকে। বাসটি পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত যাবে। সেখান থেকে ফেরি পেরিয়ে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদাহ, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, খুলনা, বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া যায়।
তো গাবতলী থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক ভাড়া কত? আসনে বসে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সেই ভাড়া এখন ছাদেই ২০০ টাকা!
সেখানেই দেখা গেল ‘খালেক’ নামের এক লক্কড়-ঝক্কড় বাস দাঁড়ানো। আর সেটিতে করে চাঁপাইনবাগঞ্জ যাওয়ার জন্য হাঁকা হচ্ছে ৭০০ টাকা। হাঁকডাক করে যাত্রীদের টানা হচ্ছে। এই নিন্ম মানের গাড়ির ছাদেও তোলা হচ্ছে যাত্রী।
চাঁপাইনবাগঞ্জ যাবেন সফিউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘চিন্তায় ছিলাম টিকিট পাব কি না। গাড়িটি লক্কড়-ঝক্কড়। তবু বাড়ি যেতে পারছি এতেই খুশি।’
বস বাসই যে ছাদে যাত্রী নিচ্ছে তা নয়। ভালো পরিবহনগুলোর ছাদে কোনো যাত্রী নেওয়া হয় না। সেগুলোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। সেসব পরিবহনের টিকিট পাওয়ার আর সুযোগে না থাকায় লক্কড়-ঝক্কড় পরিবহনগুলো ডেকে ডেকে যাত্রী ওঠাচ্ছে।
টার্মিনালে কথা হয় গার্মেন্টসকর্মী হুমায়ুনের সঙ্গে। তিনি জানান, গতকাল তাদের গার্মেন্টস ছুটি হয়েছে। আজ সকালে এসেছেন গাবতলী টার্মিনালে। তার চারটি টিকিট লাগবে, কিন্তু একই বাসে তা পাচ্ছেন না। তাই এখনো অপেক্ষা করছেন তিনি।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, গার্মেন্টস সিল্পে ৪০ লাখ শ্রমিকের ১০ শতাংশ শ্রমিকের আজ ছুটি হবে। আমরা এবার একদিনে সবাইকে ছুটি দেইনি। ভাগ ভাগ করে ছুটি দিয়েছি যাতে যানজট না হয়।
এদিকে বরিশালগামী গাড়িতে সিট কভারে বসে যাওয়ার জন্য চাচ্ছে ৪০০ টাকা (ড্রাইভারের সিটের পাসে)। আর চেয়ার কোচে চাচ্ছে ৬০০ টাকা।
(ঢাকাটাইমস/১সেপ্টেম্বর/জেআর)