সিরাজগঞ্জে শেষ মুহূর্তেও জমে উঠেনি কোরবানি পশুর হাট

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:৩০

চলতি বছরের দুই দফা বন্যায় সিরাজগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে ছোট বড় খামারিদের আগাম গবাদি পশু বিক্রি, সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসা, গো-খাদ্যের সংকট এবং অন্যান্য বছরের তুলনায় পাইকাররা কম আসায় এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় খামারীরা বিপাকে পড়েছেন।

সিরাজগঞ্জের বৃহত্তর গরুর হাট উল্লাপাড়ার বোয়ালিয়া। প্রতি বৈশাখ মাসে হাটটি সরকারিভাবে ইজারা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকা দিয়ে ইজারা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন লিটন আহমেদ।

এদিকে সরকারি নিয়মনীতি না মেনে মহাসড়কে বসছে পশুর হাট। যানবাহন চলাচলে পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে। এর কারণে যেকোন সময় হতে পারে দুর্ঘটনা।

বোয়ালিয়া হাটের ইজারাদার লিটন আহমেদ বলেন, প্রতি বছর আমরা এই হাট ইজারা নিয়ে থাকি। কিন্তু এবার মাত্রাতিরিক্ত ডাক হওয়াতে আমরা বিপাকে পড়েছি। আগে জানলে এবার হাট নিতাম না। এবার বন্যায় গরুর হাটটি পুরোপুরি পানির নিচে ডুবে রয়েছে। গরু রাখার জায়গা নেই। মানুষের উঁচু জমি ভাড়া নিয়ে হাটের গরু রাখতে হচ্ছে। তার পরও জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মহাসড়কের উপর দিয়ে গরু রাখতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এবার ইজারার অর্ধেক টাকা উঠানো সম্ভব হবে না।

জেলার ৯টি উপজেলা এলাকার স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটে চলছে পশু কেনা-বেচা। জেলা সদরের কান্দাপাড়া, শালুয়াভিটা, পাংগাসীসহ বিভিন্ন উপজেলায় পশুর হাটে গরু ও ছাগলের সমাগম হয়েছে। কিন্তু ক্রয়-বিক্রয় একদম কম এমনটাই বলেন বিক্রেতারা।

পশু কিনতে আসা কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার বিক্রেতা পশুর দাম বেশি চাওয়ায় ক্রেতারা গরু দেখোড়ী ফিরছে। এজন্য বিক্রিও ছিল কম। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততই হাটগুলোতে পশু আমদানি বাড়ছে, কিন্তু ক্রেতারা ভাবছে আগামী হাটে হয়তো পশুর দাম আরও কমবে। বিভিন্ন হাটের গরু বেপারি জানান, ভারত থেকে আসা পশুর কারণে জেলায় এবার গরুর দর না বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এজন্য হয়তো তাদের লোকসানও গুনতে হতে পারে। হতাশ হয়ে পড়ছেন গরুর মালিকরা।

শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলাতেই সিংহভাগ কোরবানির গরু উৎপাদন হয়ে থাকে। আর বাকি উপজেলাগুলোতেই কমবেশি হয়ে থাকে। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জেলার ৯টি উপজেলাতেই গরু ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়েছে।

বোয়ালিয়া হাটের গরু বিক্রেতা আমজাদ হোসেন, লিয়াকত আলী, হায়দার আলী সেখ, মোয়াজ্জেম হোসেন, মহির সেখ জানান, খড়, ঘাস, ধানের কুড়া, খৈলসহ প্রাকৃতিক খাবারে বেড়ে ওঠা ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদাই বেশি। এসব দেশি গরু ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকার মধ্যে এবং আকার ভেদে ৭০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এ বছর গরু পাইকার ও ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। একেবারে কেনাবেচা কম।

তিনি বলেন, বিক্রি না করতে পেরে গরু বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হারুন-অর রশিদ জানান, প্রতিটি হাটে প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে একটি করে মেডিকেল টিম দেয়া হয়েছে। তারা প্রতিটি হাটে একটি করে ক্যাম্প করা হয়েছে। পুরো হাট মনিটরিং করা হচ্ছে। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জেলায় প্রায় ১ লাখ ৬৯ হাজার গরু মোটাতাজা করে প্রস্তুত করে হাটে আনা হচ্ছে। জেলার প্রায় ১ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা পূরণ করবে বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :