আশি বছরের দাম্পত্যজীবনের সাথীহারা প্রথম ঈদ

মনোনেশ দাশ, ময়মনসিংহ
| আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:০৬ | প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:২১

আশি বছরের দাম্পত্যজীবনে এই প্রথম সাথীবিহীন ঈদ করলেন মো. কছিম উদ্দিন। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার পয়ারকান্দির বাসিন্দা তিনি।

ছেষট্টি দিন আগে স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে তার। তার পুত্র কিশোরগঞ্জ জেলার সরকারি গুরুদয়াল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আলী ইদ্রিস।

অধ্যাপক আলী ইদ্রিস বলেন, বাবা আজকাল খুব গম্ভীর হয়ে যাচ্ছেন। এসব তার চেনা চরিত্রের সাথে ঠিক মেলে না। খুব গুছিয়ে তিনি বৃটিশ আমলের গল্প করতে পছন্দ করতেন। তারপর বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের স্লোগান। তখন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তারপর পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সেই মোহ ভাঙলে জয় বাংলা স্লোগান।

বৃটিশ আমলে জন্মেছেন, পাকিস্তান আমলে বেড়ে উঠেছেন, যাপিত জীবন বাংলাদেশে। পেশায় একজন কৃষক মানুষ তুখোড় বোধ ও ধীশক্তির অধিকারী বাবা।

তিনি জানান, এ.কে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করতেন আগে। উত্তর তিনিই দিতেন, কিন্তু আমাকে ঘাম ঝরিয়ে ছাড়তেন। তার প্রায় আশি বছরের দাম্পত্যজীবনের সাথী বিবি আয়মনকে তিনি হারিয়েছেন ছেষট্টি দিন আগে। ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিনে। আমার জীবনেও এই প্রথম মা ছাড়া ঈদ। ঈদের সব আয়োজন সুচারুভাবে সম্পন্ন, কিন্তু সর্বত্রই শূন্যতা বিরাজ করছে। আমরা কেউ কাউকে বলছি না, কিন্তু যতই লুকাতে চাইছি- ততই তীব্রভাবে মা হাজির হচ্ছেন।

অধ্যাপক আলী ইদ্রিস বলেন, টের পেলাম বাবা মা-এর কবরটি দেখতে চান। মার জানাজা পর্যন্ত গিয়েছিলেন, কিন্তু গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এই ঈদে বাবাকে মার কবর দেখানো হতে পারে বাবার জন্য ঈদ উপহার। পথে হঠাৎ বাবা জিজ্ঞেস করলেন- এখানে কোথাও পাথরের শিব মন্দির ছিল। ময়েজ উদ্দিন মিস্ত্রির করা। পাটনার নবাব বাড়ির সৌখিন এই পাথরশিল্পীকে মুক্তাগাছার জমিদাররা বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এসেছিলেন। আমি তাকে ঘাসের ঝোঁপ ঝাড়ের আড়ালে নিয়ে শিব মন্দিরটি দেখাই। বাবা খুব অবাক হয়ে সেটি দেখেন।

(ঢাকাটাইমস/২সেপ্টেম্বর/ব্যুরো প্রধান/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :