টেকনাফে পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের নতুন বস্তি
মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে বানের পানির মতো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। নতুন আসা এসব রোহিঙ্গার ঠাঁই মিলছে না কোথাও। এসব রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, টেকনাফের লেদা ও শাপলাপুরে স্থান না পাওয়ায় নিয়ন্ত্রণহীন পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে। উখিয়ার কুতুপালং থেকে শুরু করে থাইংখালী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা পাহাড়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
একই সঙ্গে এবার টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রং এর পশ্চিমের পাহাড়ে রইক্ষ্যং নামক এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন এক রোহিঙ্গা বস্তি। যেখানে লাখের কাছাকাছি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তবে অন্যান্য বস্তিতে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও রইক্ষ্যং বস্তিটি পুরোটাই বিজিবির নিয়ন্ত্রণে।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফের ১৫টি পয়েন্ট দিয়ে পুরোদমে রোহিঙ্গাদের দলে দলে আসতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের অনন্ত ১০টি স্থানে আগুনের ধোঁয়া লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশে আসা এসব রোহিঙ্গার কাছে নির্যাতনের বর্ণনা ও ধরণ একই ধরনের। অনেকটা গণহত্যার মতো পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন তারা।
এ পর্যন্ত কত রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ হয়েছে এর সঠিক পরিসংখ্যা কেউ বলতে পারেননি। তবে সীমান্তবর্তী মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকদের মতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা তিন লাখের কাছাকাছি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী ঢাকাটাইমসকে জানান, তার ইউনিয়নের ১০টি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয় ৩১ আগস্ট থেকে। পাঁচ দিনে কম হলেও এই ১০টি পয়েন্ট দিয়ে লাখের বেশি রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ হয়েছে।
পালংখালী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোজাফফর আহমদ ঢাকাটাইমসকে জানান, তাদের ইউনিয়নের ২৫ আগস্ট থেকে ১১ দিনে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে অনন্ত দেড় লাখের মতো। এর বাইরে আরও ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে করেছে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে।
যদিও এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সংস্থার দাবি ৯০ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ করেছে। তবে এটা মানতে রাজি নয় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে জানান, রোহিঙ্গার সংখ্যা তিন লাখের মতো হবে।
এদিকে, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রং এর পশ্চিমের পাহাড়ে রইক্ষ্যং নামক এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন এক রোহিঙ্গা বস্তি। যেখানে অনন্ত কাছাকাছি রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন বলে মনে করেন স্থানীয় সাংবাদিক তাহের নাঈম।
অন্যান্য বস্তিতে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও রইক্ষ্যং বস্তিটি পুরোটাই বিজিবির নিয়ন্ত্রণে। বিজিবির টেকনাফস্থ ২ নম্বর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম আরিফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে জানান, কোনো না কোনো কারণে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ হয়েছে। তাই তাদের এক স্থানে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। সরকারের সিদ্ধান্তের পর ব্যবস্থা নিতে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে এসব মানুষকে মানবিক সহায়তাও দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে প্রতিহত করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)