ভাঙা রাস্তার অজুহাতে একদিনেই ভাড়া বেড়ে দ্বিগুণ
ভাঙা রাস্তার অজুহাতে যাত্রী পরিবহন ভাড়া বেড়েছে রাজধানীর মোহাম্মাদপুর বেড়িবাঁধে। ব্যাটারিচালিত অটোর ভাড়া হয়েছে দ্বিগুণ। আর হঠাৎ এমন ভাড়া বৃদ্ধিতে নাখোশ স্থানীয় যাত্রীরা। দুষছেন সরকার ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের।
রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড় থেকে ঢাকাউদ্যান পর্যন্ত কয়েক দিন আগেও ভাড়া ছিল পাঁচ টাকা। আকস্মিকভাবেই তা হয়ে গেছে ১০ টাকা। শুরুতে ঈদের অজুহাত দেখিয়ে ভাড়া বাড়ানোর কথা বললেও এখন সেই ভাড়াকেই নিয়মিত করবার পাঁয়তারা কষেছেন চালকও। ভাঙা রাস্তার কারণে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, এমন দাবি এই রাস্তায় চলাচলকারী অটো চালকদের।
ভাড়া বাড়ানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে, এ্রই রুটের অটোচালক মাসুম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঈদ না, রাস্তা ভাঙা। এর লাইগাই ভাড়া বাড়ছে। ক্যান আপনারা দেহেন না? ডেলি (দৈনিক) ২-৪ ডা গাড়ি পল্ডি খায়। কেউ আহে আমগো ক্ষতিপূরণ দিতে? যাত্রী দুইজন কম লই, ভাড়া ১০ ট্যাকা। যেহানেই নামুক ১০ ট্যাকা। আমগোও কিছু করার নাই। কিছু কওয়ার থাকলে সরকাররে কন। রাস্তা ঠিক করতে কন।’
ভাড়া পাঁচ টাকা থাকাকালে আটজন করে যাত্রী বহন করতো এক একটি অটো। এখন যাত্রীসংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে ছয়জনে। দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেতেই তাদের এ পদক্ষেপ। অবশ্য একথাও ঠিক যে, গাবতলী থেকে শুরু করে সিকসন কিংবা বাবুবাজার, এপথে চলতে হলে পড়তে হবে ভাঙা রাস্তার ফাঁদে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। যাত্রীবাহী কিংবা পণ্যবাহী, প্রায়ই চোখে পড়ে রাস্তার পাশে কাত হয়ে পড়া যানবাহন। বেড়িবাঁধটির নামমাত্র সংস্কার কাজ করা হলেও, তা কোনো ভাবেই চলার উপযোগী হয়নি। এখানকার বাসিন্দাদের এ নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট আপত্তি।
এ রুটে চলাচলকারীদের অধিকাংশই স্বল্প আয়ের মানুষ, দিনমজুর। মাত্র এক কিলোমিটার পাড়ি দিতে ১০ টাকা ভাড়া দেয়া তাদের জন্য গায়ে লাগার মতোই ঘটনা। এমন দাবি স্থানীয় যাত্রী শহীদ মোল্লার। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘ঢাকাউদ্যানে কাম করি। ডেলি আইতে অয় যাইতে অয়। আইতে যাইতে বিশ টাহা রোজ দিলে কেমনে চলি? রোজ হাজিরা দিলে তিনশো টাকা পাই, বিশ টাকা যদি রাস্তায় দেওন লাগে! সদাইপাতি হাতে নিয়া তো হাইটাও আইতে পারি না!’
তবে শহীদ মোল্লার মতন মানুষদের তোয়াক্কা করেনি পরিবহন মালিক কিংবা চালকরা। আরেক অটোচালকের তাচ্ছিল্য ভরা উক্তিতেই বোঝা গেল সেটা। কবির বলেন, ‘ভাড়া বাড়লে প্রথম প্রথম যাত্রীরা চার-পাঁচ দিন চিল্লাইবো। তারপর এমনেই ঠিক হইয়া যাইবো।’
এদিকে এনিয়ে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করলে কতটুকু লাভ হবে সেটা নিয়েও শঙ্কিত যাত্রীরা। তাছাড়া ভাড়া বৃদ্ধি পেলে বিকল্প বাহন হিসেবে বাস ও মিনিবাস ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু যাত্রী সংখ্যার তুলনায় বাসের স্বল্পতা অনেক। আর সেক্ষেত্রে সাধারণ যাত্রীদের উপরেই পড়বে বাড়তি চাপ, বাড়বে খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি।
(ঢাকাটাইমস/০৬সেপ্টেম্বর/কারই/কেএস/জেবি)