তালাবদ্ধ বৃদ্ধা মা পেলেন খাবার

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:৩৮

বয়সের ভারে দুই চোখে দুনিয়ার আলো দেখা অনেক আগেই নিভে গেছে বৃদ্ধা জবেদা বেওয়ার (৭০)। তাই তো বিছানাই তার শেষ ভরসা। কোথাও যেতেও পারেন না তিনি। ঈদে ছেলে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সিংড়ায় শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। বন্ধ রান্না ঘরে তালা দিয়ে আটকে রেখে গেছেন বৃদ্ধ মাকে। বাড়িতে ছোট্ট নাতি থাকলেও, সে গেছে স্থানীয় একটি গ্যারেজে কাজ করতে। কিন্তু সকাল থেকেই ক্ষুধার জ্বালায় ওই বদ্ধ ঘরের বিছানায় ছটফট করতে থাকে বৃদ্ধা জবেদা বেওয়া। শেষমেশ ক্ষুধার জ্বালা আর প্রচণ্ড গরম সইতে না পেরে বৃদ্ধ জবেদা বেওয়া কান্নাকাটি শুরু করেন।

ছুটে আসনে প্রতিবেশীরা। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। কারণ চারদিকে তালাবদ্ধ থাকায় কেউ বৃদ্ধাকে খেতে দিতে পারেনি। পরে গণমাধ্যমকর্মী মাহবুব হোসেন বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানালে বুধবার রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে ইউএনও জেসমিন আক্তার বানু এবং পুলিশ এসে তালা ভেঙে বৃদ্ধ মাকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। এমন ঘটনা ঘটেছে, নাটোর শহরের দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকায়।

প্রতিবেশীরা জানায়, ৪-৫ মাস আগে শহরের দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকায় বৃদ্ধা মা জবেদা বেওয়া, স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে একটি টিনশেড বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছে বৃদ্ধা জবেদার ছেলে মাহবুব হোসেন। ঈদের পর মঙ্গলবার স্ত্রী সন্তান নিয়ে বৃদ্ধা মাকে রান্না ঘরে আটকে শ্বশুর বাড়িতে যায় সে। পরে ক্ষুধার্ত জবেদা বেওয়া খাবারের জন্য সকাল থেকে কান্নাকাটি করতে থাকে। কিন্তু চারদিকে তালাবদ্ধ থাকা অবস্থায় কেউ খাবার দিতে পারেনি। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীর বাসার সামনে এমন ঘটনা দেখে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনকে বিষয়টি অবগত করা হয়।

পরে জেলা প্রশাসক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু সদর থানা পুলিশের সহাতায় এসে বাড়িটির তালা ভেঙে ফেলেন। বৃদ্ধা জবেদাকে বদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।

এসময় মোবাইল ফোনে তার ছেলে মাহবুব হোসেনকে বৃদ্ধ মাকে দেখভালের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু জানান, সকালে ছেলে মাহবুব হোসেন তার বৃদ্ধা মাকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে বাইরে চলে যান। পরে মা জোবেদা বেওয়া ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে কান্নাকাটি ও চিৎকার করতে থাকেন। এসময় এক গণমাধ্যম কর্মী বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানান। পরে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের নির্দেশে পুলিশের সহযোগিতায় জোবেদা বেওয়াকে উদ্ধার করে রাতের খাবার খাওয়ান হয়।

জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, বিষয়টি একেবারেই অমানবিক। আগামী দিনে আইন অনুয়ায়ী বৃদ্ধা মাকে ভোরণ পোষণ করতে তার ছেলে মাহবুব হোসেনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :