টাঙ্গাইলে সড়কে ঝরল ১১ প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
| আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৩০ | প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:২৫

টাঙ্গাইলে বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জনের মৃত্য হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইলে লিংক রোড এলাকায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নয়জন ও মধুপুরে দুই মোটর সাইকেল আরোহী মারা গেছেন। এছাড়া সখীপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দশজন। এনিয়ে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে উপজেলার বাসাইল লিংক রোড এলাকায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাটাইমসকে জানান, দুপুরে বাসাইল লিঙ্ক রোডের সামনে ঢাকামুখী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সেতুমুখী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের চার যাত্রী নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে আরও চারজন মারা যান।

পুলিশ ও নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বাঁশতৈল খালপার গ্রামের হাবিল উদ্দিনের ছেলে ও ঢাকার আজিমপুরে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিষ্ঠান নিপোর্টের কর্মী মনিরুজ্জামান রতন তার নিজের ও শ্বশুরের পরিবারের লোকজন নিয়ে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার লতিফপুর গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন।

পথে এই দুর্ঘটনায় মনিরুজ্জামানের মা মমতাজ বেগম (৫৫), ছেলে রেজভী (১০), শ্বশুর কছিম উদ্দিন (৫৮), শ্বাশুরী হাজেরা বেগম (৫২), শ্যালক রায়হান উদ্দিন শুভ (৩৪), তার শ্যালক সোহেল রানা (১৮) ও তাদের পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে অজ্ঞাত, একই এলাকার মেহেদী হাসান (২৫), এবং আট বছর বয়সী এক মেয়ে মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় মনিরুজ্জামান রতন তার স্ত্রী তাহমিনা সোমা (৩০), ভাই সাইফুল ইসলাম পাপন ও শ্যালিকা সম্পা আক্তার (১৬) ও মাইক্রোবাসের চালক বুলু মিয়াকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তাহমিনা ও সাইফুলের অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা নেয়ার পথে কালিয়াকৈরে তাহমিনার মৃত্যু হয়।

সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে মনিরুজ্জামান রতনের চাচাতো ভাই আফাজ উদ্দিন এসে লাশগুলো শনাক্ত করেন। তবে বাকি তিনটি লাশ মনিরুজ্জামানের শ্বশুর বাড়ির কাদের তার পরিচয় তিনি দিতে পারেননি।

কাজীপুর থেকে মনিরুজ্জামানের শ্বশুর বাড়ির লোকজন আসার পর বাকি তিন লাশের পরিচয় জানা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মনিরুজ্জামান জানান, ঈদের পরদিন তিনি তার পরিবারের কয়েকজনসহ সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার কাচিহারা গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

এদিকে জেলার মধুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার টেলকি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন হাসনাত চৌধুরী হিমেল এবং সিরাজুল ইসলাম সোহাগ। নিহতের দুইজনের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার এনায়েতপুরে।

জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেলযোগে নেত্রকোণায় বেড়াতে যান হিমেল-সোহাগসহ বন্ধুরা। বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা থেকে টাঙ্গাইল ফেরার পথে উপজেলার টেলকি এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ করে তাদের মোটরসাইলেকটি একটি গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে সোহাগ নিহত হন। আহত হিমেলকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে হিমেল মারা যান।

মধুপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার বিষয়টি ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে জেলা সখীপুরে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সখীপুর-ঢাকা সড়কের প্রতীমা বংকী মাজারপাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সাগরদিঘী-ঢাকাগামী বাস ফেরদৌস পরিবহন ঢাকা মেট্রো-জ-১১-১৩১৮ ও বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী একটি ট্রাক ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৭৮৫৩ উপজেলার প্রতীমা বংকী মাজারপাড় এলাকায় সাইড দিতে গিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে বাস ও ট্রাকের চালকসহ ১০ জন আহত হন।

সখীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদুল আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন দুটি সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৭সেপ্টেম্বর/আরকে/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :