রাম রহিমের ডেরায় অনেক লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে

আরও বড় কেলেঙ্কারির আভাস পাওয়া গেল ভারতের ডেরা সাচ্চা সওদার সদর দপ্তরের ভেতর থেকে। ৮০০ একরের সুবিশাল আশ্রমের অন্দরে বহু দেহাবশেষ পুঁতে রাখা হয়েছে, এমন জল্পনা ছড়াচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরেই।

এ বার ডেরার মুখপত্র ‘সাচ কহুঁ’-তেও স্বীকার করা হলো সে কথা। হরিয়ানা রাজ্যের সিরসায় ডেরা সদর দপ্তর চত্বরে অনেক ভক্তের দেহাবশেষই পুঁতে রাখা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার ‘সাচ কহুঁ’-তে লেখা হয়েছে। তবে সেই সব সমাধি নিয়ে জল্পনার কোনও কারণ নেই বলে পত্রিকাটির দাবি। অনুগামীরা 'বাবা' গুরমিত রাম রহিমের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের দেহাবশেষ দান করে গিয়েছিলেন বলে লেখা হয়েছে ডেরা মুখপত্রে।

‘সাচ কহুঁ’-তে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর পর দেহাবশেষ নদীতে ভাসালে পরিবেশ দূষণ হয়। তাই দেহাবশেষ ডেরাকে দান করে দেয়ার জন্য ভক্তদের উৎসাহিত করতেন বাবা রাম রহিম। ভক্তদের দেহাবশেষ ডেরা চত্বরে সমাহিত করে তার ওপরে গাছ পুঁতে দেয়া হত বলেও সংগঠনটির কাগজে লেখা হয়েছে।

জল্পনা অবশ্য অন্য রকম। ডেরা প্রধান গুরমিত রাম রহিম অনেককে খুন করিয়েছিলেন এবং তাদের দেহই ডেরা চত্বরে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ অনেকের। এক সময়ে ডেরা সাচ্চা সওদার অনুগামী ছিলেন, কিন্তু পরে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন, এমন বেশ কয়েক জন সম্প্রতি এই অভিযোগ তুলেছেন। তারপর থেকেই নতুন কেলেঙ্কারির আভাস মিলতে শুরু করেছে।

রাম রহিম ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই যেভাবে ডেরা সম্পর্কে নানা রকম চাঞ্চল্যকর তথ্য বাইরে আসতে শুরু করেছে, তার সত্যতা খতিয়ে দেখতে হরিয়ানা সরকার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ডেরা সাচ্চা সওদার সদর দপ্তরের ভেতরে চিরুনি তল্লাশি চালানোর অনুমতি চাওয়া হয়। আদালত মঙ্গলবার সেই অনুমতি দেয়। বুধবার থেকে সিরসায় ডেরা সদর দপ্তর ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালত নিযুক্ত কমিশনারের তত্ত্বাবধানে শুক্রবার থেকে যে তল্লাশি শুরু হবে, তা আগেই জানা গিয়েছিল।

তল্লাশি শুরুর ঠিক আগের দিনই ডেরার সংবাদপত্রে স্বীকার করা হল, ডেরা চত্বরে অনেক দেহাবশেষ পুঁতে রাখা রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে নেতিবাচক জল্পনার কোনও কারণ যে নেই, তাও প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা হল ‘সাচ কহুঁ’-তে।

জোড়া ধর্ষণ মামলায় গত ২৫ অগস্ট পঞ্চকুলার বিশেষ সিবিআই আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন ডেরা সাচ্চা সওদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম। ওই দিন হরিয়ানার পঞ্চকুলায় ডেরা ভক্তদের লাগামছাড়া তাণ্ডবের বলি হয়েছিলেন ৩৮ জন। আহত হয়েছিলেন ২৫০-র বেশি মানুষ।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

(ঢাকাটাইমস/৮সেপ্টেম্বর/এসআই)