‘এইবার মনে অয় রাস্তাডা ঠিক অইবো’

আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৮:১৩

প্রায় এক বছর পর রাজধানীর রামপুরার ডিআইটি সড়কের মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। এতে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন রিকশাচালক কেরামত। ‘বুড়া মানুষ পেটের টানে রিসকা চালাই। এই বয়সে এক হাত সমান গাতা (গর্ত) ভাইঙ্গা রিসকা টানতে যে কত কষ্ট বুঝাইতি পারমু না। এইবার মনে অয় রাস্তাডা ঠিক অইবো।’ বিটিভি কার্যালয়ের সামনের সড়কটির ভোগান্তির বর্ণনা এভাবেই দিলেন তিনি।

রামপুরাবাসী যখন দুর্ভোগে অতিষ্ঠ ঠিক তখনই ডিআইটি সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর দিলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বছরব্যাপী বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়িতে সৃষ্ট বিপদজনক খানাখন্দ অবশেষে মেরামতের কাজে হাতে নিয়েছে ডিএনসিসি’র প্রকৌশল বিভাগ। একই সাথে বড় ধরনের বৃষ্টির বাধা না এলে এক মাসের মধ্যেই রামপুরা টিভি সেন্টার থেকে মালিবাগ আবুল হোটেলের উড়াল সেতুর শুরু পর্যন্ত সড়কটি সম্পূর্ণ মসৃণ করা হবে।

হাতিরঝিল, বনশ্রী ও রামপুরা-বাড্ডা অংশের যানজট নিরসনে ২০১৬ সালের ২৫ জুন রামপুরা ব্রিজ-সংলগ্ন বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের সামনের একটি ইউলুপ উদ্বোধন করা হয়। নকশা অনুযায়ী ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ইউলুপটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের শুরুতে। ফলে ইউলুপ নির্মাণের সময়টাজুড়ে রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন সড়কটি মেরামতের বাইরে থাকে। ইউলুপ নির্মাণ শেষে মেরামত শুরু হয় সড়কটি।

কিন্তু ওয়াসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পিচঢালাই এই মসৃণ সড়কটির সুখ বেশি দিন সইলো না। মাস কয়েক না যেতেই আবার শুরু হয় খোঁড়ার কাজ। প্রথমে মূল সড়কের মাঝে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার বড় পাইপ ও পরবর্তী সময়ে ফুটপাতে কেটে ছোট ড্রেন নির্মাণ। ধীরগতির খোঁড়াখুঁড়ি এবং খোঁড়া অংশের মেরামতের অভাবে সড়কটির পরিবহনব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে।

মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরা হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সব থেকে কম ট্রাফিক সিগনালের ডিআইটি ও প্রগতি সরণি’র ভারী যান চলার এই ব্যস্ত সড়কটি খানাখন্দে ভরা। বিশেষ করে কুড়িল থেকে রামপুরা হয়ে মালিবাগ যেতে। পাশাপাশি মওসুমজুড়ে বৃষ্টি বেশি থাকায় জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বৃষ্টিতে কাদা ও রোদে সড়কটি যেন ধুলার রাজ্য।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে রামপুরা অংশে ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সড়কের মাঝামাঝি অংশ বড় করে খুড়েছিল। কাজ শেষে আর মেরামতও করা হয়নি সড়কটি। ফলে মূল সড়ক ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় সড়কটি এড়িয়ে চলারও কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না পরিবহন চালকরা।

অন্যদিকে সাত মাস আগে রামপুরা ব্রিজ থেকে উত্তর দিকে পূর্ব অংশের সড়কের সোয়ারেজ লাইনের গর্ত ইটের টুকরো দিয়ে ভরাট করা হলেও পিচ ঢালাইয়ের কোনো উদ্যোগ নেই। সড়কটি ধরে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ওই অংশগুলো ধীরে ধীরে বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে পরিবহনগুলোর গতি মন্থর হয়ে পড়ছে। এসব মিলিয়ে স্বল্প লেনের সড়কটিতে বেধে যাচ্ছে যানজট।

ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রামপুরার এই সড়কটি আমি দেখেছি। সড়কিতে আসলেই অনেক ভোগান্তি। এতদিন বৃষ্টির ও একের পর এক খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কটির কাজে হাত দিতে পারিনি। তবে এখন বৃষ্টি প্রায় শেষের দিকে। বৃষ্টির বাধা না এলে আশা করি আগামী এক মাসের মধ্যে রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত রাস্তা মসৃণ করে ফেলতে পারবো। পাশাপাশি দুই মাসের মধ্যে, নতুন রাস্তা, ওয়াপদা রোডসহ গলির পথগুলোও মেরামত করে ফেলবো।’

ফ্লাইওভারের নিচের সড়কটিও ভয়াবহ উল্লেখ করে ডিএনসিসির এই প্রকৌশলী বলেন, ‘ফ্লাইওভার নির্মাণকারী ঠিকাদারদের দায়িত্বে থাকার কারণে চাইলেও ওই অংশে আমরা কোনো ধরনের ইনভেস্ট করতে পারছি না।’

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এএকে/জেবি)‌

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :