কলাপাড়ায় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:৪০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল থেকে শুরু করে সবকিছু এখন অনলাইনে পাওয়া যায়। আমরা সে সুবিধা জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে তথ্যপ্রযুক্তি সেন্টার নির্মাণ করে দিয়েছি। আমরা ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশের জন্য আবার কাজ করতে শুরু করেছি। আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বের কাছে একটি উন্নয়নের রোল মডেল। তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতাও থাকা প্রয়োজন।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের গোড়া আমখোলা পাড়া গ্রামে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশনের শুভ উদ্বোধন এবং এর ভিত্তিফলক উন্মোচনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রবিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

গণভবনের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

একই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন, প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর ও তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করতে ১৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে টিয়াখালী নদীর ওপর নবনির্মিত ১৭৫ মিটার দীর্ঘ সেতুর উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাংলাদেশে আট হাজার ২০০ পোস্ট অফিস স্থাপন করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ৭০টি কমিউনিটি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। উন্নয়নের ধার অব্যহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলো সাবমেরিন কেবলে বাংলাদেশকে যুক্ত করা হলে দেশের তথ্য প্রকাশ হয়ে যাবে। তখন কিন্তু আমারা বিনা পয়সায় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হতে পারত বাংলাদেশ। অথচ না জেনে না ধারণা থাকায় এ কথা বলেছিলেন তিনি। এটা ছিলো দুঃখজনক, ফলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছিল প্রযুক্তিগত দিকদিয়ে।

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও কথা বলেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মাছুমুর রহমান, জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. শাহজাজান মিয়া, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার, লতাচাপলী ইউনিয়নের তথ্যপ্রযুক্তি সেন্টারের উদ্যোক্তা মো. মঞ্জুরুল আলম, রাঙ্গাবালী উপজেলার উপকারভোগী আবুল কালাম বয়াতি ও মুকুল বেগম। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুজ্জামান, বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন এন্ড মেনটেইনেন্স) মশিউর রহমান, বিএসসিসিএলের প্রকল্প পরিচালক (সিমিউই-৫) পারভেজ মনন আশরাফ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) প্রকল্প পরিচালক (সিমিউই-৫) পারভেজ মনন আশরাফ জানান, ১৯টি দেশের টেলিযোগাযোগ সংস্থার সম্মেলনে গঠিত সাউথইস্ট এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ (এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫) আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের অধীনে এই সাবেমেরিন কেবলটিতে ২০ হাজার কি.মি.ব্যাপী অত্যাধুনিক ১০০জি আলোক তরঙ্গের ডিডব্লিউএম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। জাপানের এনইসি এবং ফ্রান্সের অ্যালকাটেল লুসেন্ট যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ এই সাবমেরিন কেবলটি নির্মাণ করেছে। কুয়াকাটা সৈকত থেকে একটি ব্রাঞ্চের মাধ্যমে মূল কেবলে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে।

কুয়াকাটা সংলগ্ন গোড়া আমখোলা পাড়া গ্রামে ১০ একর জমির ওপর ল্যান্ডিং স্টেশনের মূল ভবনসহ ফাংশনাল বিল্ডিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ সরকার ১৬৬ কোটি টাকা ও বিএসসিসিএল ১৪২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) প্রকল্পের বাকি প্রায় ৩৫২ কোটি টাকার ঋণসহায়তা দিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :