নরসিংদীতে বেড়েই চলেছে মেঘনার ভাঙন

এম. লুৎফর রহমান, নরসিংদী
 | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:২৯

জেলার রায়পুরার চানপুর ও চরমধুয়ার পর এবার মেঘনার কড়াল গ্রাসে পতিত হয়েছে নরসিংদী সদরের চরাঞ্চল। গত ১ সপ্তাহে করিমপুর ইউনিয়নের শুটকিকান্দা গ্রামে। গত এক সপ্তাহে শুটকিকান্দা গ্রামের কান্দাপাড়া এলাকায় কমবেশি শতাধিক বাড়িঘর মেঘনা গর্ভে তলিয়ে গেছে। হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে আরো কয়েকশত বাড়িঘর। ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রামবাসীরা দেড় শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে। এ সময় আহত হয়েছে কমবেশি ১৫ জন গ্রামবাসী।

আহতদের মধ্যে ভাঙনের সময় ঘরের চালার নিচে চাপা পড়ে আহত হয়েছেন ফজলুল হক, করিমপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য সেন্টু মিয়া, খায়রুল মিয়া, হনুফা বেগম ও আফাজ উদ্দিন। এদের প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পরে আফাজ উদ্দিন ও ফজলুল হককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

করিমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হরমুজ খান জানান, গত বুধবার থেকে হঠাৎ করিমপুর ইউনিয়নের বগারগোত এলাকার শুটকিকান্দা গ্রামে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের প্রকৃতি ভয়াবহ। প্রথমে মেঘনা তীরবর্তী বাড়িঘরগুলো খণ্ড খণ্ডভাবে ভাঙতে শুরু করে। পরে শুরু হয় ধস। হঠাৎ করে ১০-২০টি করে বাড়ি ঘর নিয়ে কয়েক বিঘা জায়গা হঠাৎ নিচের দিকে ধসে মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এইভাবে কয়েকটি বড় বড় ধসের কারণে কয়েক ঘন্টার মধ্যে শতাধিক বাড়িঘর মেঘনার পানিতে তলিয়ে যায়। এই অবস্থায় গ্রামের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দেয়। সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ি ঘর সরিয়ে নেয়ার জন্য তৎপর হয়। তারা ঘর ভেঙে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে থাকে।

গত ৪-৫ দিনের দেড় শতাধিক বাড়ি ঘর ভেঙে মেঘনার তীর থেকে দূরে সরে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি অনেকের। ইতোমধ্যেই অনেক বাড়িঘর ও ভিটে বাড়ি মেঘনার পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মন্জুর এলাহী, ভাইস চেয়ারম্যান কবির আহমদ শহর বিএনপির সভাপতি একেএম গোলাম কবির কামাল।

মেঘনার ভাঙনে কমবেশি আড়াইশ পরিবারের কমবেশি ১৫শ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা এখন সহায় সম্বলহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।

এলাকার লোকজন জানায়, এ পর্যন্ত কমবেশি ২ থেকে ৩ কোটি টাকার সম্পদ মেঘনার পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন বলেন, এই এলাকা আগে থেকেই ভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল। সেদিকটা মাথায় রেখে আগেই আমরা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। শিগগিরই ভাঙন রোধে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বর্ষার পর থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :