চুল পড়ছে? জেনে নিন বন্ধ করার উপায়

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:০০ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:১৬

তাজরিন জাহান তারিন,ঢাকাটাইমস

প্রতিদিন ৫০-১০০টি চুল পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। এর থেকে যখন বেশি চুল পড়তে থাকে তা খালি চিন্তার না, রীতিমত দুশ্চিন্তার কারণ হয়েই দাড়ায়। কিন্তু এ সময় খুব কম মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন না। বাজার থেকে নানা ধরনের চুলের যত্ন নেবার জিনিস কিনে ব্যবহারও করেন তাদের কেউ কেউ। অথচ তারপরও চুল পড়ে। কেননা এমন অনেক পণ্যই বাজারে মেলে যেগুলো চুল ঠিকতো করেই না, উল্টো আরো চুলের ক্ষতি করে ফেলে। অথচ আমাদের প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করলে এবং ঘরোয়া কিছু উপকরণ ব্যবহারে প্রতিদিন চুলের যত্ন নিলে চুল পড়ার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বোনাস হিসেবে সাথে পাওয়া যাবে মসৃণ এবং এবং স্বাস্থ্যবান চুল।

নিয়মিত তেল ব্যবহার করুন

সপ্তাহে অন্তত একবার চুলে তেল দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারকেল তেল চুলের জন্য সবচেয়ে আদর্শ। তেল চুলের আদ্রতা রক্ষা করে এবং চুলের প্রোটিন হারানোর হার কমায়। যার ফলে চুলের ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে কম। এছাড়াও নারকেল তেলের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ চুলকে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা করে।

নারকেল তেল ছাড়াও রোজমেরি ল্যভেন্ডার তেল চুল পড়া রোধে সাহায্য করে এবং চুল গজাতে সাহায্য করে। এছাড়াও জোজোবা অয়েল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টার অয়েল, আমলকির তেল চুল গজাতে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।

বাজারের শ্যাম্পুকে না বলুন

বাজারের কেনা শ্যাম্পু চুলে না দিয়ে ঘরে তৈরি করা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন চুল পরিষ্কারের জন্য। বীটরুটের নির্যাস, অম্ল বীজ কোন ধরনের ক্ষতি ছাড়াই চুল পরিষ্কার করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে।

কন্ডিশনার ব্যবহার করুন

আমাদের ধারণা কন্ডিশনার শুধু চুল মসৃণই করে। কিন্তু বাস্তবে এটি চুলকে মজবুত, স্বাস্থ্যবান এবং মসৃণ করতে সাহায্য করে। তাই চুলে শ্যাম্পু করার পরে অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে যে সে ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার না করাই ভালো। তাই কেনার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকুন। যে কন্ডিশনার চুলে ব্যবহার উপযোগী হবে শুধু সেটাই ব্যবহার করুন নয়ত ফলাফল উল্টোও হতে পারে।

কুসুম গরম পানিতে চুল ধোবেন

গরম পানি মাথার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে। চুলের গোড়া নরম করে এতে চুল পড়ার হারও বৃদ্ধি পায়। তাই চুল ধুতে হাল্কা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন।

খাবার বিষয়ে সতর্ক থাকুন

খারাপ খাদ্যাভ্যাস, যেমন অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড খাওয়া, কিংবা শাক সব্জি না খাওয়া, এসব অভ্যাস পরিপাকতন্ত্রে এবং সামগ্রিকভাবে শরীরে বাজে প্রভাব ফেলে। অস্থিরতা বাড়ায়। দুশ্চিন্তা বাড়ে, মনে তৈরি হয় চাপ। আর এসব কারণে চুল পড়ে যায়। প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাবার চুল পড়া রোধ করে। তাই ভাজাপোড়া কিংবা ফাস্টফুড না খেয়ে প্রতিদিন সুষম খাবার খান।

হেয়ার ড্রায়ারকে না বলুন

যে কোন ধরনের তাপ চুলের জন্য ক্ষতির কারণ। চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ার বা হেয়ার স্ট্রেইটনার আয়রণের মতন কোনো ধরনের স্টাইলিং যন্ত্র ব্যবহার না করাই ভালো। নিতান্তই যদি ব্যবহার করতে হয় তাহলে আগে তাপরোধক স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করে নিন।

ঘরোয়া শ্যাম্পু

যদি চুল অনেক বেশি পড়তে থাকে তবে কেমিকেল শ্যাম্পু ব্যবহার করা বন্ধ করে দিন। তার বদলে ভেষজ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। কিংবা তাতে বিশ্বাস না থাকলে নিজেই ঘরে বসে তৈরি করে নিন নিজের শ্যাম্পু। শিকাকাই এবং রিঠা ভেজানো পানি দিয়ে চুল শ্যাম্পু করতে পারবেন সহজেই। আর সপ্তাহে অন্তত একদিন ঘৃতকুমারির নির্যাস, আমলকি বাটা নিমপাতার গুড়ো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে মাথায় মাখুন। এটিই আপনার চুলের ভেষজ চিকিৎসার কাজ করবে। সপ্তাহে একদিন অন্তত চুলে মেখে ২০-২৫ মিনিট রেখে তারপর কুসুম গরম পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি চুলের গভীর থেকে পুষ্টি দেয় এবং চুলের ভাঙ্গন রোধ করে চুল গজাতে সাহায্য করে।

ঢাকাটাইমস/১১ সেপ্টেম্বর/টিজেটি/কেএস