রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী হলে আপনিও সন্ত্রাসী

শেখ আদনান ফাহাদ
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:২৮

স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। প্রতিবেশী বখাটে রাষ্ট্র মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্থানীয় সাম্প্রদায়িক জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে রাখাইন রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী নিধনে নেমেছে। বুলেটে ঝাঝরা করার পাশাপাশি দা দিয়ে কেটে কেটে, জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। শিশুদের ঘাড় মটকে দিচ্ছে বর্মি সন্ত্রাসীরা। এই গণহত্যায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নোবেল পুরস্কারের কলঙ্ক অং সান সু চি, যিনি মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা।

অন্যদিকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে উড়ে যাচ্ছেন রোহিঙ্গাদের দেখতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী গিয়ে বলে এসেছেন, কয়েক হাজার একর জায়গা দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী নিবাসের জন্য। অথচ বুঝে, না বুঝে বাংলাদেশেরই একদল মানুষ উঠে-পড়ে লেগেছে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী প্রমাণ করার জন্য।

রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী প্রমাণ করতে ব্যস্ত লোকজনের মধ্যে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন আছেন। দুই-তিন বছর আগের নিউজ ফেসবুকে ভাইরাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যু সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অথচ বিচ্ছিন্নতাবাদী ছোট গোষ্ঠীটি রাত-দিন ব্যস্ত ভুখা-নাঙ্গা রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী প্রমাণে। ‘শিক্ষিত’ মানুষের ভেতরে যে কী পরিমাণ সাম্প্রদায়িকতা ও হঠকারিতা থাকতে পারে, তা এই কদিনে আমাদের অনেকের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।

রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসছে। অথচ আপনারা উঠে পড়ে লেগেছেন রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী প্রমাণে! রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী হলে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিচ্ছে কেন? রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী হলে কিংবা এদের সন্ত্রাসী প্রমাণ করলে আমাদেরই সবচেয়ে বড় ক্ষতি। মিয়ানমার এটাই চায়। এই সন্ত্রাসীদের আর ফেরত নেবে না বর্বর মিয়ানমার। মিয়ানমারকে যেখানে সর্ব উপায়ে চাপ দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য করা দরকার, সেখানে সাম্প্রদায়িকতার কারণে হোক আর দূরদর্শিতার অভাবজনিত কারণে হোক, অনেকে মিয়ানমারের বর্বর সরকারের মুখপাত্র হয়েই যেন কাজ করছে।

রোহিঙ্গাদের মানুষ ভাবতে পারছেন না কেন আপনারা? এরা ধর্মের পরিচয়ে মুসলিম বলে? রোহিঙ্গাদের মধ্যে হিন্দুও আছে এবং এদেরও হত্যা করা হচ্ছে; প্রায় হাজার খানেক হিন্দু রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। টুপি-দাড়ি বাদ দিয়ে রোহিঙ্গা মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন, এরা তো দেখতে আপনার মতোই। রোহিঙ্গাদের সাথে একটাই পার্থক্য আমাদের; এরা মিয়ানমারের নাগরিক, আমরা বাংলাদেশের।

আপনার বাসার‍ কাজের মহিলার মুখের দিকে তাকান, আপনি যে রিকশায় চড়ে বাতাস খেতে খেতে যাচ্ছেন, সে রিকশাওয়ালার দিকে তাকান, বাসার নিচের দারোয়ানের মুখে নজর দেন, বাসায় আপনার সন্তানের জন্য গরুর দুধ দিয়ে যায় যে চাচা, তার মুখের দিকে কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে একটু তাকান। দেখবেন এরা সবাই একেকজন রোহিঙ্গা। আপনি না হয় আধুনিক বা উত্তরাধুনিক সংস্কৃতির ধারক, ক্লিন শেভ, কোট-টাই পরে ক্লাবে আসেন, আপনার বাবার চেহারা মনে করুন, দাদা-চাচার মুখখানি স্মরণ করুন। গ্রামের বাড়িতে বিছানায় কিংবা কবরে শুয়ে আছে যে মা, তার মুখখানি মনে করুন। আর একজন রোহিঙ্গা নারী কিংবা পুরুষের ছবির সাথে মিলিয়ে দেখুন। দেখবেন আপনি, আপনার বাবা-মাও একজন রোহিঙ্গা। আপনার ছেলেবেলার ছবি বের করুন, রোহিঙ্গা শিশুদের সাথে মিলিয়ে দেখুন। হয়তো দেখবেন, আপনিও ছোটবেলায় এভাবে লেংটা হয়ে, কাঁদায় মাখা শরীর নিয়ে বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে আছেন। আপনার পাঁচ/সাড়ে পাঁচ ফুটের শরীর আর শ্যামবর্ণের চেহারার দিকে তাকান, আভিজাত্যের কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন, দেখবেন আয়নার সামনে একজন রোহিঙ্গা দাঁড়িয়ে আছে।

বাংলাদেশের একটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রফেসরের ফেসবুকের টাইমলাইনে কয়েক দিন ধরে নজর রাখছি। ইনি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। ক্লাসে নিশ্চয় শেক্সপিয়র, শেলি, কিটসের লেখনী থেকে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বিতরণ করেন। অথচ রোহিঙ্গাসংক্রান্ত প্রতিটি পোস্টে এদের শুধু মুসলিম হিসেবে উল্লেখ করে অখ্যাত সব অনলাইন নিউজপেপার থেকে উদ্ভট সব নিউজ প্রচার করছেন। উনার মূল উদ্দেশ্য, যেনতেনভাবে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী বলে প্রমাণ করা। উনি বিশ্বাসই করতে চান না, অন্যদের বিশ্বাস করতে দিতে চান না যে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ না শুধু, বিশ্বের প্রায় সব সংবাদমাধ্যমে গেলেই রোহিঙ্গা গণহত্যা সম্পর্কে নিউজ, ছবি, ফিচার ও প্রবন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বখ্যাত মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু এক খোলা চিঠিতে অং সান সু চিকে গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

শুধু রোহিঙ্গারা মুসলমান বলে একদল মানুষ গণহত্যাকে জায়েজ করতে ইনিয়ে-বিনিয়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করে সাম্প্রদায়িক পোস্ট দিচ্ছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা স্বাধীন দেশে থেকে, রাষ্ট্রের সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, বড় বড় পদে অবস্থান করে নিজেদের সাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার ওপরে নিতে পারছেন না। তাহলে কীভাবে আশা করেন, জগতের সবচেয়ে অসহায় জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গারা প্রগতিশীল হবে? মাটির মূর্তি ভাঙলে আমরা যে দরদ নিয়ে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই, রক্তমাংসের মানুষকে কচুকাটা হতে দেখেও আপনার পাষাণ হৃদয় এতটুকু গলে না, আপনি কিসের প্রগতিশীল, কিসের অসাম্প্রদায়িক?

সংখ্যালঘু আসলে কে? যে সর্বহারা, সেই সবচেয়ে প্রকৃত সংখ্যালঘু। আরাম বিছানায় শুয়ে, ইংরেজি সাহিত্য পড়ে, রবীন্দ্রসাহিত্য পড়ে, ‘শুদ্ধ’ সঙ্গীত শুনে, চর্চা করে, ফাইভ-স্টার হোটেলের নীল স্বচ্ছ কৃত্রিম পুকুরে সাঁতার কেটে আপনি নিজেকে সংখ্যালঘু বলে মজলুম সাজার চেষ্টা করছেন, আর শুধু ধর্মে মুসলিম বলে এরা আপনার সংখ্যাগুরু প্রতিপক্ষ! এ কেমন বিচার? বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হয়ে আপনি শুধুই একজন ধর্মপরায়ণ হয়ে রইলেন? তাহলে বাবার ডেরাতে আশ্রয় নিন। বিশ্ববিদ্যালয় আপনার জন্য নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, পজিশন, আর্থিক সক্ষমতা, দামি কাপড় ও ভালো খানাপিনা, ক্লাব কিংবা পার্টি আপনাকে অসাম্প্রদায়িক করতে পারেনি, ঠিক আছে। কিন্তু রাষ্ট্রের ভালো-মন্দ তো আপনাদের বোঝা উচিত। যে রোহিঙ্গাকে আপনি বা আপনারা সন্ত্রাসী প্রমাণের পণ করেছেন, সে রোহিঙ্গাদের তাহলে শেখ হাসিনার সরকার অস্থায়ীভাবে আবাসন বানিয়ে দিচ্ছে কেন? হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দিচ্ছে কেন? ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অনেক নন-মুসলিম মানুষ পর্যন্ত সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে কেন? বিশেষ করে বাংলাদেশের বৌদ্ধসমাজ কেন রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে আকুতি জানাচ্ছে? বৌদ্ধসমাজের প্রতিনিধিরা মিয়ানমারের ঢাকাস্থ দূতাবাসে স্মারকলিপি পর্যন্ত দিয়ে এসেছে? আপনারা যারা রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী বলছেন, কী ভেবে বলছেন? রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী হলেই তো মিয়ানমারের লাভ। মিয়ানমার বলবে, বাংলাদেশ থেকে কোনো সন্ত্রাসী তারা ফেরত নিবে না। ইতোমধ্যে সেটি বলা শুরু করেছে তারা। অথচ রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে আমাদের।

যুদ্ধ দরকার হলে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী সাধারণ মানুষকে নিয়ে অবশ্যই করবে। কিন্তু এই মুহূর্তে দরকার, মানবিক কারণে মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা, খাদ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা। মানুষের জীবনের চেয়ে দামি আর কিছু হতে পারে না। সরকার মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘে, ওআইসিতে প্রস্তাব আনা হচ্ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে একটি নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে। জনমত তৈরি হচ্ছে পৃথিবীতে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং রাশিয়ার শুরুর দিকের অবস্থান আর বর্তমান অবস্থান কিছুটা হলেও বদলে গেছে। তুরস্ক, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আর আপনারা আছেন রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী প্রমাণের দৌড়ে!

হ্যাঁ, এটা ঠিক, রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের উত্থান হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করা হতে পারে। রোহিঙ্গারা নির্যাতিত, মা-বাবার সামনে মেয়েদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, ধর্ষণ করে আবার মেয়েগুলোকে কেটে আগুন দিয়ে দেহ পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। শিশুদের পা দিয়ে পিষে, ঘাড় মটকে হত্যা করা হচ্ছে। কিছুসংখ্যক নির্যাতিত রোহিঙ্গাকে জঙ্গিতে রূপান্তর করা সম্ভব। কে করতে পারে এই কাজ? ইতোমধ্যে তথাকথিত আরকান সেলভেশন আর্মির (আরসা) কমান্ডারের সাথে এক পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তার ফোনালাপ রেকর্ড করা হয়েছে। পাকিস্তানের আইএসআই ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএর সাথে মিলে আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আর প্রকাশ্যে গণহত্যা চালানোর জন্য দায়িত্ব পেয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাশূন্য আরাকানের জ্বালানি সম্পদের বিশাল ভাণ্ডার নিয়ে ব্যবসা এবং সে ব্যবসার আড়ালে সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে এই অঞ্চলে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করতে চায় ইহুদি নেটওয়ার্ক। মিয়ানমারে চীন ও ভারতের প্রভাব কমিয়ে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ব্লক। আর চীনের ভয় দেখিয়ে মোদি বাবুকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে মিয়ানমারে সু চির কাছে।

রোহিঙ্গা মেরে সাম্প্রদায়িক আর জাতিগত পৈশাচিক আনন্দ পেতে চায় বর্মি সেনাবাহিনী আর আদর্শচ্যুত বৌদ্ধ নেতারা। অর্থের লোভে আর সাম্প্রদায়িক ক্রুদ্ধতায় এরা মহামতি গৌতম বুদ্ধের সব বাণী ভুলে একেকজন খুনিতে রূপান্তরিত হয়েছে। রোহিঙ্গা নিশ্চিহ্ন হলে বর্মি সেনাবাহিনীর লাভ, ইসরায়েলের লাভ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাভ। সু চি এবং সেনাবাহিনী সেখানকার বৌদ্ধ সমাজের কাছে জনপ্রিয় হয়ে থাকবে। অন্যদিকে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র পাবে খালি জায়গা, তেল-গ্যাস উত্তোলনের। এই তেলগ্যাস ব্যবসার লভ্যাংশের একাংশ পাবে সেনাবাহিনী আর সরকারি আমলা-রাজনীতিবিদরা; বাকিটুকু ব্যবসার নামে পাচার হবে যুক্তরাষ্ট্রে-ইসরায়েলে। পাশাপাশি চীন ও ভারতকে চাপে রাখতে শক্ত সামরিক ঘাঁটি তৈরি হবে আরাকানে।

কিন্তু এত রোহিঙ্গা যাবে কোথায়? তাই কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে নৃশংসভাবে মেরে, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সহজ অপশন। কারণ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে পারি না আমরা। আমাদের মানবিক, জাতিগত ও সাম্প্রদায়গত সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়েছে এই দুষ্টচক্র। রোহিঙ্গাদের ঢুকতে না দিলে, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ধস নামবে, দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। ক্রমে এখানে পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান মিলে সরকার ফেলে দেয়ার চেষ্টা করবে। এই জন্যই শোনা যাচ্ছে, খালেদা জিয়া আর তারেক জিয়া লন্ডনে বসে প্রতিনিয়ত আইএসআইয়ের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।

শুধু একটা বিষয় ভাবলেই হবে। কফি আনান যেদিন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের তাগিদ দিয়ে রিপোর্ট দিলেন, সেদিনই কেন রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের পুলিশের ওপর হামলা করবে! হামলা করেছে আইএসআই, সিআইএ আর মোসাদের সৃষ্টি আরসা। এই সুযোগে সন্ত্রাসবাদের অজুহাত খাড়া করে নতুন করে শুরু হয়েছে রোহিঙ্গা নিধন। আর ভয়ানক সংকটে পড়েছে প্রিয় বাংলাদেশ। তাই সাম্প্রদায়িক বেড়াজাল ছিন্ন করে মগজ দিয়ে, মানবিকতা দিয়ে এই সংকট মোচনে সবার কাজ করা উচিত।

লেখক: শিক্ষক ও সাংবাদিক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :