তৌফা-তহুরার বাড়িতে গাইবান্ধা ডিসি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৫৯

পিঠের নিচ থেকে কোমরের নিচ পযন্ত পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে জন্মেছিল গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঝিনিয়া গ্রামের তোফা-তহুরা। শিশু দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে রবিবার রাতে নিজ বাড়িতে ফিরেছে।

জমজ কন্যা শিশু তৌফা-তহুরাকে দেখতে সোমবার বিকালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে যান জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল। এসময় তিনি শিশুদের জন্য কেনা উপহারসামগ্রী তুলে দেন শিশু দুইটির মা সাহিদা বেগম ও বাবা রাজু মিয়ার হাতে। পরে তিনি তৌফা ও তহুরাকে কোলে নিয়ে আদর করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গোলাম আজম, সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আতিয়ার রহমান, সুন্দরগঞ্জ পল্লী বিদুতের এজিএমকম রকিবুল ইসলামসহ অনেকে।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, তৌফা ও তহুরা জন্মের সময় শারীরিকভাবে যুক্ত ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাদের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে শিশু দুইটিকে পৃথক করার কাজে সফল হয়েছেন। সরকার এই বিষয়টি সার্বিকভাবে তদারকি ও সহায়তা করেছে। গাইবান্ধা জেলাবাসী ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমরা সকলে প্রাণভরে দোয়া করি তারা যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে বড় হয় এবং জীবনে তারা সফল হয়।

তিনি বলেন, তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো খেয়াল রাখা ও পরবর্তীতে তাদের লেখাপড়া বা বড় হওয়ার ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজনীয় বিষয় আছে প্রশাসনিকভাবে আমরা সার্বিকভাবে সহায়তা করব। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যা কিছু প্রয়োজন আছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের লোক এখানে এসেছেন, বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করব। বাচ্চাগুলো যাতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সুন্দরভাবে বড় হতে পারে, যা যা সহায়তা দরকার আমাদের তরফ থেকে আমরা তা চেষ্টা করব।

এদিকে, তৌফা ও তহুরাকে একনজর দেখতে সকাল থেকেই ওই বাড়িতে ভিড় করেন আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন।

গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বিকাল তিনটায় তৌফা-তহুরার নানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আঙ্গিনায় মা সাহিদা বেগম ও নানা শহীদুল ইসলাম তৌফা ও তহুরাকে কোলে নিয়ে আছেন। ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে কষ্ট পেয়ে তৌফা ও তহুরা কান্নাকাটি করছিল। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এসেছেন শিশু দুইটিকে দেখতে।

সাহিদা বেগম ও রাজু মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন তৌফা ও তহুরা হাসপাতালের এসি কক্ষে ছিল। কিন্তু আমাদের এখানে কোন বিদ্যুৎ নেই। তাই তৌফা ও তহুরার কষ্ট হচ্ছে। ঠিকমত ঘুমাতে পারছে না। শুধু কান্নাকাটি করছে।

রবিবার রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাম্বুলেন্সযোগে তৌফা ও তহুরা নানার বাড়িতে ফেরে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে নানার বাড়িতে তৌফা ও তহুরার জন্ম হয়। এরপর ৭ অক্টোবর তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মলদ্বার একটি থাকায় পরে ১৬ অক্টোবর প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর চলতি বছরের ১ আগস্ট তাদেরকে আলাদা করার জন্য করা হয় দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার। পরে সুস্থ হলে গত রোববার রাতে ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফেরেন তৌফা ও তহুরা।

সরকারিভাবে তাদের চিকিৎসার সকল ব্যয় বহন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :