দলবেঁধে ধর্ষণ: অবশেষে মামলা নিল পুলিশ

নেত্রকোণা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:০৮

অবশেষে নেত্রকোণা সদরে এক কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর আট দিনের মাথায় গণধর্ষণের মামলা নিয়েছে পুলিশ। এই মামলায় অন্য আরো দুই যুবকের সাথে প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে।

এর আগে প্রভাবশালী মহলের সাথে পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠে গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অপচেষ্টা চালানোর। এরই প্রতিবাদে নেমে এলাকাবাসী মানববন্ধন, বিক্ষোভ করে।

মেয়েটির স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৩ নভেম্বর মেয়েটিকে (১৪) ধর্ষণ করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। পরদিন সোমবার বাড়ির পাশে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

আসামিরা হচ্ছেন- উপজেলার ঠাকুরাকোণা গ্রামের কাজল সরকারের ছেলে অপু চন্দ্র সরকার, গফুর মিয়ার ছেলে মামুন ও মৃত চান মিয়ার ছেলে সুলতান। এদের মধ্যে অপু জেলা ছাত্রলীগের কৃষিবিষয়ক উপ-সম্পাদক বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান জনি।

নেত্রকোণা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ নূর এ আলমকে। তবে এই মামলার তত্ত্বাবধান করছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক নিবাস চন্দ্র মাঝি, নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী।

পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ নূর এ আলম জানান, কিশোরী পান্নার মা আলপনা আক্তার বাদী হয়ে দায়ের মামলাটিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩)ও ৯(ক) ধারায় গণধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আসামিদের ধরতে সাড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত আসামিদের ধরতে পারব।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, প্রথমে লাশ উদ্ধারের পর হত্যা না আত্মহত্যা জানতে চেয়ে ময়নাতদন্তে লাশটি পাঠানো হয়েছিল। সেই প্রতিবেদন এখনও আসেনি। তবে ধর্ষণ হয়েছে কিনা তা জানতে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্যে কবর থেকে লাশ উত্তোলনে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, গত রবিবার সন্ধ্যায় ঠাকুরাকোনা গ্রামের তিন যুবক তার মেয়েকে (১৪) পাশের মাছের খামারে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে তিনি কৌশলে সেখানে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তখন মেয়েকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল।

তিনি বলেন, ঘরে এসে তার মেয়ে ওই তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানান। কিছুক্ষণ পর ‘ধর্ষণকারী’ যুবকদের একজন তাদের ঘরে এসে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জেনে ফেলে।

পরদিন (সোমবার) বেলা ১১টার দিকে পাশের ঘরের আড়ার সঙ্গে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

মেয়েটির বাবা বলেন, গত বুধবার তিনি থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে আগে পুলিশের করা অপমৃত্যুর মামলাটিই চলবে বলে জানায়।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি আমীর তৈমুর ইলী বলেন, ‘মেয়েটি গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। কোনো রেপ টেপ হয়নি। প্রেমসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিমানে মরেছে।’

এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়র হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে ওইদিন তার পরা পোশাকসহ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :