ঢাকা-১১
পলাতক কাইয়ুমই বিএনপির ভরসা, আছেন স্ত্রীও
ওয়ার্ড পর্যায়ের পদ লাভের মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে আসেন আলোচিত নেতা এম এ কাইয়ুম। ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক থেকে বর্তমানে মহানগর উত্তরের সভাপতি কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। তবে আগামী নির্বাচনে ঢাকা-১১ (বাড্ডা) আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপিতে তিনিই সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন।
আলোচিত তাবেল্লা সিজার হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি এম এ কাইয়ুমের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, মামলা-মোকাদ্দমা মোকাবেলা করেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন তিনি।
ঢাকা-১১ আসন থেকে ওয়ান-ইলেভেনের পর নবম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী সংকটের কারণে তড়িঘড়ি করে কাইয়ুমকে এ মনোনয়ন দেয় বিএনপি। তবে তিনি বিজয়ী হতে পারেননি। আগামী নির্বাচনেও তিনি এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির এলজিআরডি মন্ত্রী আবদুস সালাম তালুকদারের করণিক ছিলেন কাইয়ুম। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আলোচনায় আসতে থাকেন তিনি। সম্পর্ক গড়ে তোলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে।
এদিকে ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যা মামলায় নাম আসার আগে থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ুম। গুঞ্জন ছিল তিনি মালয়েশিয়ায় পালিয়ে গেছেন। গত এপ্রিলে নতুন কমিটি দেয়ার পর প্রায় দুই বছর আত্মগোপনে থাকা এই বিএনপি নেতা কুয়ালালামপুরে এক রাজনৈতিক সভায় যোগ দেন।
গত ১৯ এপ্রিল এম এ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসান উল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি করা হয়।
এদিকে অন্যদিকে তাভেল্লা সিজার হত্যা মামলায় গত বছরের জুনে এম এ কাইয়ুম ও তার ভাই এম এ মতিনসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে।
আন্দোলন কর্মসূচি রাজপথে সক্রিয় না হলেও নেতা-কর্মীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় কাইয়ুম। এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন এটা নিশ্চিত হলেও মামলাসংক্রান্ত কিংবা অন্য কোনো কারণে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবেন কি না তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যেও সংশয় আছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের একজন সহ-সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কাইয়ুম ভাই নির্বাচন করবেন এটা নিশ্চিত বলতে পারেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে মামলা আছে সেটা নিয়ে একটা চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়।’
জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত কাইয়ুম নির্বাচন করতে না পারলে তার সহধর্মিণী শামীম আরা বেগম দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমানও মনোনয়ন পেতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। এলাকায় তিনিও কাইয়ুম সমর্থিত বলে এলাকায় পরিচিত।
এদিকে নিজের মনোনয়নের বিষয়ে এম এ কাইয়ুম বলেছেন, মামলা, জেল-জুলুম নির্বাচনে পথে কোনো সমস্যা হবে না। আর দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকে মনোনয়ন দেবে এতে সমস্যার কিছু নেই। তবে আমি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।’
তবে ভাটারার ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ঢাকাটাইমসকে নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলতে কিছুটা অনীহা প্রকাশ করেন। বলেন, ‘কাইয়ুম ভাই আমার নেতা। তিনি নির্বাচন করতে না পারলে অন্য কারো প্রশ্ন আসে। আগেভাগে এসব বিষয় নিয়ে বলতে চাই না।’
(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/মোআ)