অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা-৪১

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:৩৩

আলম রায়হান

প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ তার সন্দেহের বিষয়টি যাচাই করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেনারেল মাহমুদুল হাসানকে। এ দায়িত্ব পুলিশ অথবা অন্য কোনো সংস্থাকে দিলেই বোঝা যেত সরকারের দাঁতে কত বিষ! আবার সে সময় জেনারেল হাসানের পরিবর্তে ডা. মতিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকলেও বিপত্তি ঘটতে পারতো। যেমন ঘটেছিল স্বতন্ত্র এমপি মকবুল হোসেনের বেলায়।

এরশাদের সময় স্বতন্ত্র এমপি মকবুল হোসেন পরে বিএনপির দলীয় রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। তবে এলাকায় দলীয় পরিচয়ের চেয়ে স্বতন্ত্র এমপি হিসেবেই ছিল তার বেশি পরিচিতি। মকবুল হোসেন ওরফে লেচু মিয়ার ২০১৬ সালেও আলোচনায় এসেছেন টঙ্গীতে তার মালিকানার টাম্পাকো ফয়েলস-এর কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে এরশাদ সরকারের আমলে তিনি ডলার পাচারকারী হিসেবে বেশি আলোচিত হয়েছেন। ডলারসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ঢাকা বিমান বন্দরে। সে সময় এরশাদ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন অধ্যাপক ডা. মতিন। তখন আমি সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ-এর রিপোর্টার; নাজিমউদ্দিন মানিক, শ্রদ্ধেয় মানিক ভাই, ছিলেন সম্পাদকের দায়িত্বে।

এরশাদ আমলে মকবুল হোসেনের কথিত ডলার পাচার নিয়ে মিডিয়া তোলপাড়। উত্তপ্ত হয়েছিল জাতীয় সংসদও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মতিন স্বতন্ত্র এমপি মকবুল সম্পর্কে সংসদে বলেছিলেন, ‘স্মাগলার বাই প্রফেশন, এমপি বাইচান্স।’ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তখন উত্তপ্ত সংসদ-রাজনীতি-সংবাদপত্র। এ অবস্থায় মানিক ভাই বললেন, ‘এর পেছনে অন্য খেলা আছে! তা না হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এতোটা এগ্রেসিভ হতো না।’ এ বিষয়ে আইটেম তৈরি করতে বললেন আমাকে। তিনি আদেশ করেই খালাস। আমি বললাম, কীভাবে করবো? মানিক ভাই বললেন, ‘আগে নিজে খোঁজখবর নাও, তার পর আসো; যাও!’

সাদা ছড়ি ধরিয়ে দিয়ে অন্ধকে রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার মতো অবস্থা! এ উপমা তখনই আমার মনে পড়েছে। কিন্তু প্রকাশ করার উপায় ছিল না। সে সময় বসদের সঙ্গে বাহাস করার রেওয়াজ চালু হয়নি। অতএব নিরুপায় হয়ে ‘আদেশ শিরোধার্য’ করে মাঠে নামলাম। দিন-রাতের ব্যবধান ঘুচিয়ে দুই-তিন দিনে যা পাওয়া গেল তাতে মানিক ভাইর ধারণাই সত্য প্রমাণিত হয়েছিল।

এদিকে রিপোর্ট  তৈরির প্রয়োজনে যাদের সঙ্গে কথা বলেছি তাদের মধ্যে মকবুলের স্ত্রী ছিলেন সবচেয়ে অসহায়। নানান চাপে তিনি ছিলেন অতিষ্ঠ। এর ওপর সৃষ্টি হলো এক উঠকো ঝামেলা। সে সময় একটি পাক্ষিক পত্রিকার মালিক-সম্পাদক, আজকে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেব বিশেষভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব, ‘ভালো নিউজের’ জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেছিলেন। এ ব্যক্তি ছিলেন মকবুলের পারিবারিক বন্ধুস্থানীয়। বিপদের সময় বন্ধুর এ আচরণে খুবই ব্যথিত হয়েছিলেন মকবুলের স্ত্রী। ‘ভালো’ নিউজের জন্য টাকা না দেয়ায় মনগড়া নিউজ ছাপা হয়েছিল ‘বন্ধুর’ পত্রিকায়। এমপি মকবুলের বিত্ত-বৈভবের জেল্লা ফুটিয়ে তুলতে পাক্ষিক পত্রিকাটিতে লেখা হয়েছিল, ‘ড্রইংরুমে ঝাড় বাতির আলো ঠিকরে পড়ে।’ আরও অনেক কিছু লেখা হয়েছিল যার সাথে বাস্তবতার কোনো সংশ্রব ছিল না। যে কারণে সাংবাদিক এড়িয়ে চলার নীতি অবলম্বন করেছিলেন মকবুলের স্ত্রী। কিছুতেই তিনি কথা বলতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু শেষতক আমাকে এড়াতে পারেননি, রিপোর্টার নাছোরবান্দা হলে যা হয়। পরে কেবল কথা বলা নয়, আটক অবস্থায় পিজির প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন মকবুলের কাছেও নিয়ে গিয়েছিলেন আমাকে অন্য পরিচয়ে।

এমপি মকবুলের কথিত ডলার পাচার প্রসঙ্গে আমার তৈরি করা কাভার স্টোরি নিয়ে সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ বাজারে যাবার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মতিনের কারসাজি অনেকটাই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এজন্য চাপও এসেছিল। কিন্তু ‘আই পত্রিকার কিছু জানি ন’ বলে বিষয়টি পত্রিকার মলিক মোস্তাফিজুর রহমান চাপিয়ে দিয়েছিলেন মানিক ভাইর ওপর। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেবার নামে বেহুদা পেইন দিতে আসা এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে মানিক ভাই এমন এক ধমক দিয়েছিলেন যাতে তার কঠিন-তরল বেরিয়ে যাবার অবস্থা হয়েছিল; সে আর সাপ্তাহিক সন্দ্বীপমুখী হয়নি। সারাজীবনের অনটনে থাকা আওয়ামী ঘরানার সাংবাদিক নজিমউদ্দিন মানিকের জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছে নিদারুণ অর্থ কষ্টে।

এদিকে তিলকে তাল করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার খেসারত দিতে হয়েছে অধ্যাপক ডা. মতিনকে। কিছু দিনের মধ্যে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন চোখের ডাক্তার অধ্যাপক মতিন। এরপর তার ব্যাপারে অনেক রসালো রটনা শোনা গেছে। অবশ্য সামরিক জান্তার হাত ধরে ক্ষমতার রাজনীতিতে আসার আগে রোগী দেখার সময়ও একটি রসালো রটনা আছে অধ্যাপক ডা. মতিনকে ঘিরে। বিষয়টি ছিল বেশ আলোচিত। তিনি আরো একবার আলোচনায় এসেছিলেন তার ছেলের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় তরুন ছড়াকার বাপ্পি শাহরিয়ার চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবার ঘটনায়।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের কথিত ডলার পাচারের ঘটনা নিয়ে প্রচলিত প্রোপাগান্ডার বিপরীতে দাঁড়িয়ে সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ সত্য উদঘাটনে ভূমিকা রাখে। এতে পত্রিকাটি বেশ আলাচনায় আসে। এ কারণে মালিক মোস্তাফিজুর রহমান, মানিক ভাইসহ হাউজের সবাই খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু একমাত্র নাখোশ হয়েছিলেন আজকের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তখন তিনি দৈনিক বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ-এর নিয়মিত কলাম লেখক। এমপি মকবুলের ওপর রিপোর্টটি নিয়ে তিনি বেশ হৈ-চৈ করেছিলেন। কিন্তু সেদিনের মতো আজও অজানাই থেকে গেছে, এরশাদ সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মতিনের সঙ্গে আজকের প্রভাবশালী নেতা ওবায়দুল কাদেরের সখ্যতার নেপথ্য কারণ কী ছিল। নাকি কোনো সখ্যতাই ছিল না? তিনি প্রোপাগান্ডা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন মাত্র!

তবে এ প্রসঙ্গে ধারণা করা কঠিন; কারণ রাজনীতিকরা বহু রকমের ইকোয়েশনের মধ্যে থাকেন। আমাদের দেশের রাজনীতিকদের মধ্যে প্রকাশ্যে চরম বিরোধ দেখা গেলেও স্বার্থের প্রয়োজনে গোপনে সম্পর্ক থাকে গরম।

জেনারেল মাহমুদুল হাসানের আমন্ত্রণে সেদিনই ছিল কোনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার প্রথম একান্ত আলাপচারিতা। এ ধরনের ঘটনা সেদিনই শেষ হতে পারতো। কিন্তু তা হয়নি মেজর রফিকের কারণে। মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার প্রথম কেবিনেটে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তবে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মাত্র দুই বছরের কিছু বেশি সময়। এর পর তাকে করা হয় দপ্তরবিহীন মন্ত্রী। প্রায় ছয় মাস ‘উজিরে খামাখা’ থাকার পর পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর তার আর মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি। শেখ হাসিনার পরের দুই সরকারের আমলে যথাক্রমে মুক্তিযুদ্ধ এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন; এর বেশি কিছু নয়। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে একবার শোনা গিয়েছিল, মেজর রফিক মন্ত্রী হচ্ছেন; কিন্তু এখনো সেরকম কিছু ঘটেনি।

মেজর রফিককে ৯৬-এর সরকারের মাঝামাঝি সময়ে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দেয়া হয় মো. নাসিমকে। শুরুতেই তিনি হুংকার দিলেন, মাটির নিচ থেকে সন্ত্রাসী ধরা হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই করতে পারেননি। এ নিয়ে নানা বিদ্রুপ করা হয়েছে; কোদাল হাতে তার কার্টুনও ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অনেকেরই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। তবে এ ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা যায় ৯১ সালে খালেদা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরীকে।

খালেদা জিয়ার প্রথম সরকার গঠনের দিন আবদুল মতিন চৌধুরীর নাম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়; কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। শপথ নেবার জন্য তাকে ডাকা হচ্ছে বলে পাশের আসনের ব্যক্তি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মতিন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আমি না; অন্য কোন মতিন চৌধুরী হবে।’ পরে কিছু দিনের মধ্যে তাকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়; দেয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। রটনা আছে, পাকিস্তান কানেকশন ও জামায়াতের পছন্দের লোক হওয়ার কারণেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছিল মতিন চৌধুরীকে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তার দায়িত্ব ছিল জোটের মহানগর নেতাদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করা। মুক্তিযুদ্ধের সময় কাঁচপুর ব্রিজ পাহাড়ার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় জামায়াতের ঢাকা মহানগর সভাপতি ছিলেন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। পুরানা পল্টনে নগর জামায়াতের সুরক্ষিত অফিসে মুজাহিদ তথা জামায়েতের সঙ্গে মতিন চৌধুরীর ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার আমি প্রত্যক্ষ সাক্ষী। উল্লেখ্য, ৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেছিলেন জামায়াতের সমর্থন নিয়ে।

প্রচারণা আছে, ‘পাক কানেকশন’ ও জামায়াত পছন্দের কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় মতিন চৌধুরী খুবই ক্ষমতাধর ছিলেন। চিরকুমার এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভাতিজা ফারুক ও প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া আর কারো কথা শুনতেন না; এভাবে তিনি দাপটের সঙ্গে পূর্ণ মেয়াদে চালিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর ড. খন্দকার মোশাররফকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। আর মতিন চৌধুরীকে করা হয় যোগাযোগ মন্ত্রী। কিন্তু বেঁকে বসলেন তিনি; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সব সুযোগসুবিধা আঁকড়ে থাকলেন। সেই সরকারের বয়স ছিল মাত্র ২৮ দিন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বল্পতম মেয়াদের সরকারের আমলে ‘কমান্ডের বাইরে যাবার’ খেসারত দিতে হয়েছে মতিন চৌধুরীকে পরবর্তী সময়ে। বিএনপির মন্ত্রিসভার দরজা তার জন্য চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দলেও দ্রুত তার গুরুত্ব কমিয়ে দেয়া হয়। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় যে মতিন চৌধুরী ভাতিজা আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কারো কথা শুনতেন না, সেই মতিন চৌধুরীই মন্ত্রিত্ব হারিয়ে নাসিরউদ্দিন পিন্টুর কথাও গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। আমাদের দেশের বাস্তবতায় মন্ত্রী থাকা-না থাকার মধ্যে পার্থক্য প্রায় আলো-আঁধারের ব্যবধানের মতো।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। পরের বার ২০০১-এর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত জোট। এ সরকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় পাকিস্তান কানেকশনের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত অবসরপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর প্রধান আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে। কিন্তু ক্ষমতার মানদণ্ডে তাকে ছাড়িয়ে যান বিমান বন্দর এলাকায় ছিঁচকে চোরাকারবারী মহলে এক সময় ‘ক্যাসিও বাবর’ হিসেবে পরিচিত লুৎফুজ্জামান বাবর। সে সময় বিমান বন্দর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে টোকাই সাগরের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে যান বাবর। নাসিরউদ্দিন পিন্টু এক পর্যায়ে টোকাই সাগরের পক্ষ নেয়ায় বিমান বন্দর এলাকা ছাড়তে হয় বাবরকে। পরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে সে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হলে দেশ ছাড়ে আমেরিকা প্রবাসী হন টোকাই সাগর; আর এমপি থাকা অবস্থায়ই বিএনপি সরকারের আমলেই জেলে যেতে হয় পিন্টুকে। হাওয়া ভবনের আশির্বাদে লুৎফুজ্জামান বাবর এক পর্যায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন। ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী। আরও অনেক কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর অভিজ্ঞতা শেষতক সুখকর হয়নি। মেয়াদের মাঝামাঝি সময় তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। সেখানেও তিনি শেষতক মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি; শেষের কয়েক মাস ছিলেন দপ্তরবিহীন মন্ত্রী। মেজর রফিককে যা করা হয়েছিল শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে। তবে মেজর রফিক ছয় মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন, আলতাফ চৌধুরী তা করেননি। এই যা পার্থক্য! এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অভিজ্ঞতা সুখকর নয় অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনেরও। এ হিসেবে আবদুর মতিন চৌধুরীকে বলা যায় সৌভাগ্যের বরপুত্র!

ছবি: আবদুল মতিন চৌধুরী ও মকবুল হোসেন

লেখক: জেষ্ঠ্য সাংবাদিক; ইমেইল: [email protected]