শরীয়তপুরে তিন লঞ্চডুবিতে উদ্ধারকাজে অগ্রগতি নেই

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:২১

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটে ডুবে যাওয়া লঞ্চ তিনটি উদ্ধারে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর ডুবুরিরা। লঞ্চ ও নিখোঁজ যাত্রীদের খুঁজে পাওয়ার জন্য বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় পুনরায় উদ্ধার কাজ শুরু করেন তারা। কিন্তু পদ্মার প্রবল স্রোতে উদ্ধার কাজ বিঘ্নিত হয় বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।

বুধবার পারভীন নামে নিখোঁজ এক যাত্রী পারভীনের (৩১) এবং অজ্ঞাতনামা আরও এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুলারচর এলাকায় একটি লঞ্চের অবস্থান শনাক্ত হলেও প্রবল স্রোতের কারণে এখনো লঞ্চটি উদ্ধার করতে পারেনি উদ্ধার কর্মীরা। শনাক্ত করা লঞ্চটি অন্তত ৪০ ফুট পানির নিচে রয়েছে বলে ধারণা করছে বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরিরা। স্রোতের কারণে পাঁচ থেকে ছয় ফুটের বেশি নিচে যেতে পারছে না ডুবরিরা। লঞ্চটি রশিতে বাঁধতে না পারায় উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। বাকি লঞ্চ দুটি এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা পদ্মার পাড়ে আহাজারি করছে। যাত্রীদের জীবিত উদ্ধারের আশা অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে। লাশের সন্ধানে ট্রলার নিয়ে নদীতে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রেখেছেন স্বজনরা। নিখোঁজ যাত্রী ও লঞ্চ কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরা সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এক হৃদয় বিদারক অবস্থা তৈরি হয়েছে নিখোঁজদের বাড়িতে।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে জানান, দুপুরে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পেয়ে জেলেরা থানায় খবর দেয়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নড়িয়া থানায় নিয়ে আসে। লঞ্চ ডুবিতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মোহাম্মদ আলী লাশটিকে তার স্ত্রী পারভীনের লাশ হিসেবে শনাক্ত করে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি নিহতের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় আরও এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম পরিচয় কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। লাশটি পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নড়িয়া থানায় রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ‘র (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) ফজলুর রহমান জানান, লঞ্চ ও নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধার করার জন্য আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সকাল থেকে আমরা বাকি লঞ্চ দুটির অবস্থান শনাক্ত করতে ‘সাইড স্কেনার সোনার” মেশিনের সাহায্যে অভিযান পরিচালনা করেছি। এ মেশিনটি নদীর দেড়শ মিটার নদীর গভীরের ছবি তুলতে সক্ষম। এ মেশিনের মাধ্যমেই ডুবে যাওয়া নৌযান শনাক্ত করা হয়ে থাকে।

মঙ্গলবার দুলারচর এলাকায় শনাক্ত করা লঞ্চটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। স্রোতের কারণে ডুবরিরা ওই লঞ্চের সাথে কোনো দড়ি বাঁধতে পারছে না। তাই লঞ্চটি টেনে উঠানো সম্ভব হয়নি।

গত সোমবার পদ্মা নদী ভাঙনের কারণে নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটের পল্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পানির স্রোতে পল্টুনে নোঙর করা মৌচাক, নড়িয়া- ২ ও মহানগর নামের তিনটি লঞ্চ ডুবে যায়। লঞ্চে থাকা তিন যাত্রী ও ১২ জন কর্মী এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)