'সবাইকে মেরে ফেলছিল, প্রিয় হলুদ ড্রেসটা সঙ্গে আনতে পারিনি'

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:৪২ | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:৪৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

জাতিসংঘের তথ্য মতে, মিয়ানমার সেনা ও পুলিশের দমন-পীড়নের শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, মিয়ানমার সেনা ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তারা বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন। মিয়ানমার সরকার অবশ্য হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

রোহিঙ্গাদের পালানোর জন্য খুব অল্প সময়ই পেয়েছেন। দ্রুত পালাতে গিয়ে তারা সামনে যা পেয়েছেন তাই সঙ্গে এনেছেন।

বাংলাদেশে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন রেহেনা নামে এক রোহিঙ্গা নারী।

বিবিসিকে রেহানা বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনারা আমাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমার ভাইদের একজন আগুন লেগে মারা যায়। এই সময় আমার হৃদয় ভেঙে যায়।’

‘পালিয়ে আসার জন্য দু’ঘন্টা সময় পেয়েছিলাম। তখন ভাবছিলাম সঙ্গে কি নেয়া যায়? আমরা কি খাব?’

আসিয়া বিবি নামে ১০ বা ১১ বছর বয়সী এক কিশোরীও তার পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।

আসিয়া বলেন, ‘আমি সাজতে পছন্দ করি তাই পালিয়ে আসার সময় মেকআপের জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছি।’

নূর মোহাম্মদ নামে বয়োবৃদ্ধ এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমি বয়স্ক মানুষ, হাঁটতে পারি না। কোনো কিছু বহন করতে পারি না, পকেটে অল্প কিছু টাকা ছিল, তাই সঙ্গে নিয়ে এসেছি।’

রেহেনা আরো বলেন, ‘আমার কিছু সোনার গহনা ছিল। বিপদের সময় কাজে লাগানোর জন্য।কিন্তু যখন দাঙ্গাহাঙ্গামাকারী উশৃঙ্খল জনতা আমাদের এলাকায় আক্রমণ চালাল, তখন আমার গহনাগুলি মাটিতে পুঁতে ফেলি। এরপর পালিয়ে আসি।’

‘এখন আমরা খুব খারাপ অবস্থায় আছি। অথচ সোনার গহনাগুলো আমার সঙ্গে নেই। এখন আমি কীভাবে বাঁচব?’

আসিয়া বলেন, ‘উশৃঙ্খল জনতা সবাইকে মেরে ফেলছিল। তাই আমি আমার পছন্দের হলুদ পোশাকটা আনতে পারিনি।’

নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সবকিছু ফেলে এসেছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল গরুগুলো। তাদের আমি নিজের সন্তানের মতো লালনপালন করেছি। খুব মনে পড়ে তাদের কথা।’

(ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/এসআই)