জীবন্ত মসজিদের প্রতিচ্ছবি

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১০:০৮

ইসলাম ডেস্ক

মসজিদকে কেন্দ্র করে যাত্রা শুরু হয় ইসলামের। ইসলামের সূচনালগ্নে মসজিদে নববিই ছিল সবকিছুর প্রাণ। খেজুর পাতার ছাউনিতে বসেই ১২ লাখ বর্গমাইলের বিশাল সাম্রাজ্য শাসন করেছেন তিনি। দিকে দিকে ইসলামের বিজয় মশালের শুভযাত্রা শুরু হয় এই মসজিদ থেকেই। খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগেও মসজিদই ছিল প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ নিছক ইবাদতখানা হিসেবেই গণ্য হতে থাকে। মসজিদের ভূমিকাও অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ের মতো হয়ে যায়। আজকাল মসজিদ বলতেই মনে হয় শুধু নামাজ আর ফজিলতসংক্রান্ত কিছু ওয়াজ-নসিহতের জায়গা এটি অথচ মুসলিম জাতির অধঃপতন, সমাজের অবক্ষয় ও ব্যক্তিত্বের চরম অবনতির এই মুহূর্তে মুসলমানদের নেতা ইমামরা মিম্বর থেকে দিতে পারেন প্রকৃত নির্দেশনা। কেননা বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম বা শহর পাওয়া যাবে না যেখানে কোনো মসজিদ নেই।

প্রতিটি মসজিদেই রয়েছেন কমপক্ষে একজন করে ইমাম। ইসলামের প্রচার-প্রসার, সামাজিক গণসচেতনতা ও জাগরণ সৃষ্টিতে ইমামদের ভূমিকা হতে পারে মুখ্য। ইমাম সাহেব জুমাবারের খুতবাতে উপস্থিত শ্রোতা-মুসল্লি এবং তার আওতাধীন সমাজে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় এবং সামাজিক সমস্যা কী তা চিহ্নিত করে এর সমাধানের জন্য সচেতনতা ও প্রেরণা জোগাতে পারেন। পাশাপাশি ইসলামের সোনালি যুগের ইতিহাস থেকে প্রাসঙ্গিক হƒদয় গলানো ঘটনাবলি উল্লেখপূর্বক শ্রোতা-মুসল্লির চিন্তাধারাকে শাণিত করার প্রয়াস চালাতে পারেন। সমসাময়িক মুসলিম বিশ্বের সমস্যা ও এর থেকে উত্তরণের পন্থা নির্দেশ করতে পারেন। মুসলমানরা তাদের নিজেদের ইমানি দায়িত্ব আঞ্জাম না দিলে তাদের পরিণতির কথা কোরান-হাদিসের ভাষ্য উল্লেখপূর্বক তুলে ধরতে পারেন। সমাজে সংঘটিত সবধরনের অপকর্ম, অনৈতিক আচরণের বিরুদ্ধে মুসলিদের সচেতন করে তোলার দায়িত্ব ইমামদের। যুবসমাজের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি জাগ্রতকরণ এবং দেশ ও জাতির স্বার্থে অবদান রাখার জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করতে পারেন ইমামরা। সমাজে প্রচলিত ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, ধর্মের আবরণে ভণ্ডামি এবং সবধরনের শিরক-বিদআতের প্রতি সবাইকে সজাগ এবং প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাতে পারেন তারা।

মোটকথা, ইসলামি সমাজের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে মসজিদকে সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু বানাতে হবে এবং মসজিদের ইমামদের নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। যথার্থভাবে মসজিদগুলো জীবিত হলে এদেশের মুসলিম সমাজের চিত্র অনেকটা পাল্টে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/জেবি)