মোহাম্মদপুরে বিদ্যুৎ চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১১:৪৮

রাজধানীসহ দেশজুড়ে চলছে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অনিয়ম। মিটারবিহীন বিদ্যুৎ সংযোগের ছড়াছড়ি। বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে সরাসরিভাবে লাইন নামিয়ে অবৈধ ব্যবহার হচ্ছে এ রাষ্ট্রীয় সম্পদ। যেখানে মদদ দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও শীর্ষ স্থানীয়রা।

দেশজুড়ে যখন বিদ্যুৎ নিয়ে হাহাকার।ঠিক তখনই এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ব্যবসায় মেতেছেন। কিন্তু সরকারের খাতে জমা হচ্ছে না এক টাকাও। রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে বিদ্যুৎ চুরির এমন চিত্র স্বাভাবিক আকার ধারণ করেছে। অনেক বাড়িতেই দেখা যাচ্ছে মিটার বিহীন বৈদ্যুতিক সংযোগ।

বাঁশবাড়ী বস্তিতে ঘর রয়েছে প্রায় চার শতাধিক। প্রতিটি ঘরে আছে বিদ্যুৎ সংযোগ। অথচ একটি বাড়িতেও দেখা মেলেনি বৈদ্যুতিক মিটারের। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ঘর প্রতি ২০০ টাকা হারে বিদ্যুৎ বিল উত্তোলন করেন বলে জানালেন এখানকার বাসীন্দারা। স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, কয়েকজন জড়িত আছে বাঁশবাড়ী বস্তির বিদ্যুৎ ব্যবসায়। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগিতায় অবাধে ব্যবসা করছেন তারা।

একই চিত্র মোহাম্মাদীয়া হাউজিংয়ের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বস্তিতে। এখানে ঘর সংখ্যা অর্ধ শতাধিক। সোবাহান নামের একজন ব্যবসা করেন এখানে। অভিযুক্ত সোবাহান স্থানীয় ওয়ার্ড (৩৩নং) কাউন্সিলরের চাচা। ঘর প্রতি মাসিক বিল দুইশত টাকা।

প্রায় একই রকম পুকুর চুরি নজরে আসে মোহাম্মাদপুর জেনেভা ক্যাম্পে। মিটার থাকলেও সরাসরি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে লাইন নিয়ে রাতদিন ব্যাটারিচালিত রিক্সায় চার্জ দেয়া হচ্ছে এখানে। একই চিত্র মোহাম্মাদপুরের নবীনগর ও ঢাকা উদ্যান এলাকায়। ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও অটো চার্জ হচ্ছে অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে। আদাবর ১০ ও ১৬ নম্বর, সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় এই ব্যবসা বেশ জমজমাট। নিম্ন আয়ের মানুষ এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই রিক্সার গ্যারেজ ও বস্তিও অনেক। কিছু কিছু স্থানে মিটার থাকলেও বেশ কারিগরি ফলানো হয়েছে মিটারের সাথে। বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে আসা সংযোগ মিটারে প্রবেশের আগেই ভাগ হয়েছে আরো অনেকগুলো লাইনে। আর এই সংযোগ দিয়েই চলছে বস্তি ও রিক্সার গ্যারেজ।

স্থানীয় এক রিক্সা চালক বলেন, ‘মিটারের লাইন দিয়া চার্জ দিয়া পোষাইবো? গ্যারেজ আছে, রাইতে থুইয়া আহি। হ্যারাই চার্জ দিয়া দেয়।’

প্রায় একই অজুহাত বেড়িবাঁধ রুটে চলা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের। তারাও ১০০ টাকা হারে প্রতিদিন চার্জ করাচ্ছেন।

এক অটোচালকের দাবি, "জানি এইডা দোষ। কিন্তু দাদা ঝামেলার তো অভাব নাই। এরে ওরে দিয়াই তো তো আর কিছু থাহে। সারাদিন গাড়ি চালাইয়া যদি ঘরে কিছু নিতে না পারি, তাইলে চলুম ক্যামনে। জাগো গ্যারেজে গাড়ি রাহি, হঠাৎ হ্যাগো গ্যারেজ ছাড়লে পরুম আরের বিপদে। দেহা যাইবো, লাইনে (রুটে) রাখবো না। তহন কি করুম?"

কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। চার ব্যাটারি এই রিক্সাগুলো পুরোপুরি চার্জ হতে ৪-৫ ইউনিট বিদ্যুৎ প্রয়োজন পরে। বাণিজ্যিক মিটারের টাকার অংকে যা ৪৪-৫৫ টাকা। কিন্তু এখানকার রিক্সা চালকরা প্রতি রাতে গুনছেন ১০০ টাকা। অতিরিক্ত টাকা আদায় হলেও সরকারি খাতে জমা হচ্ছে না এক টাকাও। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ক্ষমতার উপর গড়ে উঠছে এসব বৈদ্যুতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/কারই/কেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :