নতুন বার্তা নিয়ে ফিরবেন খালেদা, অপেক্ষায় নেতাকর্মীরা

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৮:১২ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:১০

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

হাঁটু ও চোখের চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার অধীর অপেক্ষায় দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। সরকারি দলের নেতারা তার দেশে ফেরা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা তাতে গা করছেন না। তারা বরং আশা করছেন, আগামী দিনের জন্য নতুন বার্তা নিয়ে আসবেন বেগম খালেদা জিয়া, যাতে দলের সাংগঠনিক কর্মসূচি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে নতুন দিকনির্দেশনা থাকবে। উজ্জীবিত করবে দলকে।

খালেদা জিয়া লন্ডন গেছেন দুই মাস হলো। দেশে ফেরার সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে এত দিন যা শোনা গেছে, সেটি পার হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে তার। কবে নাগাদ ফিরবেন তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ।

গত ১৫ জুলাই বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। ৮ আগস্ট লন্ডনের মুরফিল্ড হাসপাতালে তার ডান চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর শুরু হয় তার পায়ের চিকিৎসা।

গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছিলেন, পায়ের চিকিৎসা শেষ হলে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে চেয়ারপারসন দেশে ফিরবেন।

লন্ডনে নেতাকর্মীসহ সাধারণের কাছ থেকে অনেকটা দূরে আছেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার পাশাপাশি পুরো সময়টা পরিবারকে দিচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসায় যেন কোনো ছেদ না পড়ে তাই তারেক রহমান নিজেই বিষয়টি দেখভাল করছেন বলে জানা গেছে।

পূর্ব লন্ডনের কুইসস্টোন এলাকায় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। বাসায় তারেকের স্ত্রী জোবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান রয়েছেন। ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শামিলা রহমান, তার দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানও আছেন সেখানে।

বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারা আশা করছেন শিগগিরই চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরবেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দেশে ফিরে নির্বাচনী সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবেন।

বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) অনুপস্থিতিতে দলীয় কাজকর্ম চলছে ঠিকই, তবে তিনি হলেন আমাদের জন্য উদ্দীপনার বাণী। তিনি পাশে থাকলে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়, অনুপ্রেরণা পায়।’ বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় এখন বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো ও রোহিঙ্গাদের সহায়তার কার‌্যক্রম চালছে বলে জানান বাবুল।

তিনি বলেন, ‘দেশে ফিরে চেয়ারপারসন আগামী দিনের আন্দোলন, নির্বাচন ও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে গতি আনতে নানা নিকনির্দেশনা দেবেন। আশা করি এবার একটি কার‌্যকর আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করতে পারব। আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি চিকিৎসা শেষে দ্রুত দেশে ফিরে সেই নির্দেশনা দেবেন চেয়ারপারসন।’

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ঢাকাটাইমসকে বলেন, যত দূর জানি চেয়ারপারসন চোখের অপারেশনের পর এখন পায়ের চিকিৎসা নিচ্ছেন। আশা করি দ্রুত চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরবেন এবং নতুন দিকনির্দেশনা দেবেন।

চেয়ারপারসনের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা কী থাকবে- এমন প্রশ্নে বাচ্চু বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) দেশে ফিরে সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন। আশা করি সরকার দাবি মেনে নিয়ে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবে। অন্যথায় নেতাকর্মীরা সে দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে প্রস্তুত। চেয়ারপারসন সে ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দেবেন বলে আশা করি।’

‘তা ছাড়া দলের প্রধান ও দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা (তারেক রহমান) এক জায়গায় যেহেতু আছেন, স্বাভাবিকভাবেই দল ও দেশ পরিচালনার জন্য আলাপ-আলোচনা হবে তাদের মধ্যে। আগামী দিনের আন্দোলন, নির্বাচনসহ সার্বিক বিষয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবেন তারা। আমরা এখন তার ফেরার অপেক্ষায় আছি।’ যোগ করেন আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা।

যুবদলের নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, তিনি একজন রাজনৈতিক নেত্রী। তার সঙ্গে বহির্বিশ্বের সম্পর্ক আছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি সুযোগ তৈরি হবে। যেহেতু সামনে নির্বাচন, সে ক্ষেত্রে নির্বাচন ও আন্দোলনের জন্য দলকে প্রস্তুত করার জন্য দলের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন। এ ছাড়া দলে এখনো বেশ কিছু পদ খালি আছে। সেসব বিষয়ও তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে বলে আমরা মনে করি।’

মামুন বলেন, ‘চেয়ারপারসন দেশে ফেরার পর তার কাছ থেকে নিশ্চয়ই আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দলীয় বিষয় নিয়ে নতুন দিকনির্দেশনা পাব।’

 (ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/মোআ)