বহিরাগত ক্লিনারের নিয়ন্ত্রণে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল!

ইফতেখার রায়হান, টঙ্গী (গাজীপুর)
 | প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৩:২৫

টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের নিয়ন্ত্রক কে? এই প্রশ্ন এখন শুধু হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নয়, চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের। চিকিৎসাসেবার নামে হয়রানিসহ নানা রকম অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কয়েকবার ঢাকাটাইমস ও জাতীয় পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশের পরও টনক নড়ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে এই এলাকার নিরীহ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালের নিয়ন্ত্রক বা অভিভাবক হিসেবে আবাসিক মেডিকেল অফিসারকেই বুঝানো হয়। তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল! এই হাসপাতালের নিয়ন্ত্রক একজন বহিরাগত ক্লিনার। তার নাম তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়। স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার স্নেহধন্য হওয়ায় হাসপাতালের আরএমও হৃদয়কে অস্থায়ী ভিত্তিতে ক্লিনার হিসেবে নিয়োগ দেন। অথচ এই হৃদয় হাসপাতালের স্থায়ী কর্মকর্তাদের চেয়েও বেশি প্রভাব খাটিয়ে চলছেন। সরকারি কোন কর্মকর্তা না হয়েও দিনের পর দিন হাসপাতালের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। হৃদয়কে টাকা দিলেই মিলছে সার্টিফিকেটসহ সরকারি ওষুধ।

পেশায় একজন ক্লিনার হলেও বিলাসবহুল গাড়ি দিয়ে ঘোরাফেরা করেন তিনি। আর রাত হলেই টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন এই হৃদয়। অথচ এক বছর পূর্বেও হাসপাতালের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে সংসার চালাতো হৃদয়।

গত কয়েকমাসে হাসপাতালের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা ও দালালচক্র নিয়ে ঢাকাটাইমসসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সেসব সংবাদে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার সাথে হাসপাতালের আরএমওর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। যার কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল সার্জনের কড়া সমালোচনা শুনতে হয়েছে আরএমও ডা. পারভেজ হোসেনকে। এরপর থেকেই আরএমওর অনুপস্থিতিতে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ শুরু করে ক্লিনার হৃদয়।

মাসখানেক আগে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করে নামকরণ করা হয় শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। এ উপলক্ষে ক্লিনার হৃদয় হাসপাতালের প্রধান ফটকে চারটি ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণ নির্মাণ করে। এছাড়াও যেসব দালাল চক্রের সদস্যদের হাসপাতালে প্রবেশে নিষেধ করা হয়েছে সেই সকল দালাল সাথে নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঘোরাফেরা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে হৃদয়ের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে হৃদয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, হাসপাতালের কোন অনিয়মের সাথে আমি জড়িত না। আরএমও স্যারের নির্দেশে হাসপাতাল চত্বরে যেন কোন দালাল প্রবেশ করতে না পারে আমি সেদিকে খেয়াল রাখি।

গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, হৃদয় হাসপাতালের সরকারি কোন কর্মকর্তা নয়। অস্থায়ী ভিত্তিতে আউটসোর্সিং হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগেও তাকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে দালাল সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :