ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ‘যন্ত্রণা’ ভুলতা ফ্লাইওভার এলাকা

আতাউর রহমান সানী, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৯:৪৮ | প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৯:৪৩

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ও গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে দীর্ঘ প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনগুলো আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীসাধারণ। মঙ্গলবার দিনব্যপী এ যানজট লেগে থাকে।

যেখানে যেতে সময় লাগার কথা ২০ মিনিট, সেখানে যেতে সময় লাগে চার থেকে ছয় ঘণ্টা। এ দীর্ঘ যানযটের প্রধান কারণ হিসেবে জানা গেছে, ভুলতা ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ, যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা, চালকরা নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানো, হাটবাজারে লোড-আনলোড, অবৈধ ফুটপাট ও পুলিশের চাঁদাবাজি।

পরিবহন চালক, যাত্রী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ক্রস করেছে। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানাবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আবার এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানাবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। দুটি সড়কেই যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। তাই দুটি সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয় এবং যানজট সৃষ্টি হয়ে যায়।

এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রশস্ত হলেও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কটি তেমন প্রশস্ত নয়। যার ফলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে কোনো যানবাহন বিকল হয়ে পড়লেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে মঙ্গলবার গাউছিয়া কাপড়ের বাজার। হাজার হাজার ক্রেতা মালামাল কিনে সড়কে গাড়ি থামিয়ে লোড-আনলোড করার কারণে ওই দিন যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গাউছিয়া মার্কেটের সামনে কয়েক হাজার ফুটপাতের দোকান রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষকে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে অনেক সময় যাত্রীদেরকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। অনেকেই অভিযোগ করেন, মোটা অংকের চাঁদার বিনিময়ে ফুটপাতে দোকান বসিয়েছে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

রাস্তার মাঝে গাড়ি থামিয়ে পুলিশের চাঁদাবাজিতে এ দীর্ঘ যানযটের অন্যতম কারণ হিসেবে অভিযোগ করেছেন চালকরা। নাম না প্রকাশ শর্তে বেশ কয়েকজন চালক অভিযোগ করে জানান, তাদের গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক থাকার পরও পুলিশকে টাকা না দিলে গাড়ি ছাড়া হয় না।

আব্দুল্লাহ নামে এক বাসচালক জানান, ভুলতা ফ্লাইওভার ও রাস্তার নির্মাণের কাজ চলার কারণেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয় বলে তিনি মনে করেন। এ যানজটের কারণে তাদেরকে অনেক লোকসান গুণতে হচ্ছে।

ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গোলাকান্দাইল মজিবুর রহমান ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিনের এ দীর্ঘ যানজটের ফলে প্রতিদিনই তাদেরকে স্কুলে যেতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। সময় মতো স্কুলে না পৌঁছাতে পারলে তাদেরকে স্যারদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। যেখানে তাদের যেতে সময় লাগতো ২০ মিনিট কিন্তু দীর্ঘ যানযটের ফলে এখন সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। যানজটের কারণে কখনো শিক্ষার্থীদের স্কুলের ক্লাসের সময় পার হয়ে যায়। এতে করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাপকভাবে খারাপ প্রভাব পড়ছে।

এক চাকরিজীবী জানান, তিনি স্বল্প বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এ দীর্ঘ যানযটের কারণে তাকে প্রতিদিনই দেরি করে অফিসে পৌঁছাতে হচ্ছে। দীর্ঘ যানযট থাকার কারণে প্রতিদিন তাকে এক থেকে দুই ঘণ্টা দেরি করে অফিসে যেতে হচ্ছে। এতে উপর মহলের কর্মকর্তাদের কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হয়।

ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মাহাবুব বলেন, যানজট নিরসন করতে পুলিশ প্রশাসন সব সময়ই ধুলা-বালি ও রোদ-বৃষ্টি ঝড়কে উপেক্ষা করে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল আলম বলেন, ট্রাফিক পুলিশের পাশপাশি ফাঁড়ি পুলিশও যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। তবে আগের তুলনায় এখন যানজট অনেকটা কম বলে তিনি দাবি করেন।

(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :