‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিদেশিরা প্রধানমন্ত্রীকে পাত্তাই দেয়নি’

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশিরা পাত্তাই দেয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বলেছেন, ‘প্রধামন্ত্রী শুধু দাম্ভিকতা করে বলেছেন আমাদের কোনো প্রত্যাশা ছিল না। আসলে আমেরিকা আপনাকে পাত্তা দেয়নি, বিশ্ববাসী আপনাকে পাত্তা দেয়নি। আপনি কূটনীতিতে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।’

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে দুদু এসব কথা বলেন।‘চালের দাম কমাও মানুষ বাঁচাও’ শীর্ষক এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ নামের  বিএনপিপন্থী একটি সংগঠন।

জাতিসংঘের অধিবেশনের এক ফাঁকে আমেরিকার পেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার বিষয়ে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কোনো সাহায্য আশা করি না। কারণ শরণার্থী নিয়ে ট্রাম্প নিজেরক ভাবনা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছেন, তারা কোনো শরণার্থীকে সে দেশে ঢুকতে দেবেন না। আমি তাদের কাছ থেকে কী আশা করতে পারি, বিশেষ করে সে দেশের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে?

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে শামছুজ্জামান দুদু বলেন, ‘জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী মাত্র দুই মিনিট আলোচনা করেছেন ট্রাম্পের সাথে, সেটাও আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে। কী কথা বলেছেন আমরা আমেরিকার কাছে কিছু প্রত্যাশা করি না। প্রত্যাশার জন্যেই তো সেখানে আপনি গিয়েছিলেন। ট্রাম্প, জাতিসংঘসহ বিশ্ববাসীকে আপনি অনুরোধ করবেন রোহিঙ্গারা যেভাবে আসছে স্ব-সম্মানে আবার যেন তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু আপনি গিয়ে সে কথা তো বলেননি।’

চালের দাম বৃদ্ধি নিয়েও কথা বলেন শামসুজ্জামান দুদু। বলেন, ‘মিয়ানমার এখন সারা বিশ্বে ভয়ংকর শাসকদের নৃশংশতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আমাদের খাদ্যমন্ত্রী সেই মিয়ানমার গেলেন চাল কিনতে। যে চালে সাধারণ মুসলিম-হিন্দুদের রক্তমাখা সেই চাল আনতে গেলেন খাদ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে নিম্নমানের চাল আমদানি করলেন।’

দুদু বলেন, ‘একেবারে খাওয়ার অযোগ্য কিছু চাল ইতিমধ্যে দেশে ঢুকে গেছে। সরকার ট্রাকে করে যে চাল বিক্রি করছে তা আতপ চাল, এর আগে কোনো সরকার এই চাল বিক্রি করেনি। এই সরকারের আমলে চালের যে সংকট খাদ্যের যে সংকট অতীতে কোনো সরকারের আমলে তা দেখা যায়নি। এই সরকারের কোনো রকম যোগ্যতা নেই দেশ পরিচালনা করার।’

দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশে ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। শেখ মুজিবের জামানায় কবি লিখেছিলেন ভাত দে হারামজাদা, না হলে মানচিত্র চিবিয়ে খাব। তখন রাস্তাঘাটে মানুষ না খেয়ে, ফ্যান খেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, লাখে লাখে মানুষ মরেছে। সেই দুর্ভিক্ষ ইতিহাস হবে বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু তারা কন্যার আমলেও ৭৪ সালের মতো দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে যাচ্ছে।’

শামছুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দেশে অপশাসন, খুন, গুম, নিখোঁজের মতো বিষয় আছে, সংবিধানকে পদদলিত করার যেসব বিষয় আছে, নির্বাচনকে পদদলিত করার মতোও বিষয় আছে, আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত করার মতো ব্যাপার আছে। ঠিক তেমনি মোটা চালের দাম ৭০ টাকা হওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে আজ হাহাকার উঠেছে। সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য কামরুদ্দীন এহিয়া খান মজলিশ সরোয়ার, ন্যাপের মাহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/জিএম/জেবি)