দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শাঁখারিবাজার

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:০৩ | প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:২৭

শারদীয় দুর্গা উৎসবের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। একদিকে চলছে প্রতিমার গায়ে শেষ তুলির আঁচড় দেয়ার কাজ। অন্যদিকে চলছে মণ্ডপের সাজসজ্জা। ধুমছে চলছে পূঁজার নৈবেদ্যর বেচাকেনা। এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ প্রধানত উৎসবের আয়োজনে যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক পাহারায় রয়েছে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

বরাবরই দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রয়াস আর প্রচেষ্টার কমতি থাকে না। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুরনো ঢাকার শাঁখারিবাজার এলাকায় শারদীয় দুর্গা উৎসবের মূল অনুষ্ঠান পালিত হবে তিনটি মণ্ডপে। শনি মন্দির, শিব মন্দির ও প্রতিদ্বন্দ্বী পূজা কমিটির আয়োজনে হচ্ছে পূজা। এছাড়া স্থানীয় অন্যান্য সংগঠনের উদ্যোগে পালিত হবে ছোট আকারে। প্রায় সবগুলো অনুষ্ঠানই আয়োজিত হবে শনিমন্দিরের কোল ঘেঁষে, শাখারিবাজারের মূল সড়কটিকে কেন্দ্র করে।

প্রতিমা শিল্পীরা এখন ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে শেষ তুলির ডগা দিয়ে শেষ আঁচড়টুকু কাটতে। প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষের পথে। এখন চলছে রঙ ও প্রলেপের কাজ। আগামি দুই-তিনদিনে প্রতিমার তৈরির শতভাগ কাজ শেষ হবে বলে দাবি প্রতিমা শিল্পীদের।

শাঁখারিবাজারের একটি মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন কারিগর কৃষ্ণপাল। সাথে তার সহযোগী। বিরাম নেই কারোরই। কারণ আরো দুটি মন্দিরের প্রতিমা তৈরির ভার তাদের কাঁধে ন্যস্ত।

হাতের কাজ না থামিয়েই ঢাকাটাইমসকে বললেন, ‘এবার বেশি কাজ নেইনি। এটা ছাড়া আর দুইটা আছে। তাড়াতাড়িই শেষ করে দেবো। গতকাল থেকে রঙ করার কাজ করছি। সময় লাগবে কয়েকদিন। পঞ্চমীর আগের দিন প্রতিমা মন্দিরে উঠে যাবে।’

শাঁখারিবাজার এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে পাঁচ প্রবেশ পথ। চলছে বাঁশ দিয়ে প্রবেশ তোরণ তৈরির কাজ। শাঁখারিবাজারে প্রবেশের মূল পথের দু-পাশে বসবে মেলা। চলছে তার প্রস্তুতিও। প্রতিটি প্রবেশ তোরণেই দেখা গেছে পুলিশি নিরাপত্তা। সমস্ত শাঁখারিবাজার জুড়ে রয়েছে পুলিশের টহল টিম।

আয়োজনে ঘটতি থাকছে না শাঁখারিবাজারের স্থায়ী দোকানগুলোতে। দেবী দুর্গার আগমনের সাথে আশানুরূপ ক্রেতার আশা করছেন শাঁখারিরা। বিক্রি হচ্ছে শাখা, শাখ, দেবী দুর্গার নানা প্রতিকৃতিসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপকরণ। সেই সাথে বিক্রি হচ্ছে পারিবারিক মন্দির ও গৃহ সজ্জার ধর্মীয় উপকরণাদি।

শাঁখা বিক্রেতা বিকাশ সু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বেচাকেনা আজ থেকেই শুরু হয়েছে, কিন্তু কম। কাল থেকে একটু বাড়বে। ২২-২৩ তারিখে মূল বেচাকেনা হবে।’

ব্যস্ত সময় পার করলেও আশার আলো দেখছেন না এখানকার ঢোলের কারিগররা। প্রতিবার ঢোল মূলত একটু আগেভাগেই বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু এবারের চাহিদা ঢোলের চাহিদা একদম কম। দু-একদিনে বিক্রি বাড়বে, এমন আশার কথাও শোনা গেলো না কোনো বাদ্য বিক্রেতার মুখে।

নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই স্থানীয় পূজা আয়োজনকারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। কেননা, এ পর্যন্ত পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এ এলাকায়। তবে, শাঁখারিবাজারের বাহিরে এবং দেশব্যাপী পূজা আয়োজনে নিরাপত্তা শঙ্কা আছে তাদের মনে। ঢাকার বাইরের সব মণ্ডপে হয়তো একই রকম নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হবে না পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে, এমনটি মনে করেন শাঁখারিবাজারের ব্যবসায়ী সুবল চন্দ্র মনি দাশ।

ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমাদের এ এলাকার নিরাপত্তা ঠিক আছে। কিন্তু বাহিরে তো সমস্যা হয়। মানিকগঞ্জে প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এমন তো আরো ঘটতে পারে। সরকারের এই দিকে নজর দেওয়া উচিত। সব জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার।’

ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/কারই/কেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :