মিল্কি হত্যার পাঁচ আসামি জামিন নিয়ে পলাতক

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৮:০৮

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস

আলোচিত মিল্কী হত্যা মামলার তদন্ত শেষে বিচার শুরু হবে আগামী ২৬ অক্টোবর। সেদিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য আদালতে শুনানি হওয়ার কথা। তবে জামিনে বেরোনো পাঁচ আসামি এখনো পলাতক।

আদালত সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলার জামিনে যাওয়া ওই পাঁচ আসামি আদালতে হাজির হচ্ছেন না। ফলে তাদের পলাতক দেখিয়ে আদালতে এই মামলার কার‌্যক্রম চলছে।

সূত্র জানায়, অন্য আসামিরাও জামিনে বাইরে রয়েছেন। তবে তারা নিয়মিত হাজিরা দেন। আগামী ২৬ অক্টোবর মামলাটির আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

মিল্কি হত্যা মামলায় দুই দফা তদন্তে মোট ১৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। প্রথম দফা তদন্তে ১১ জনকে আসামি করা হয়, তবে বাদিপক্ষের নারাজির কারণে দ্বিতীয় দফা অধিকতর তদন্তে আরো সাতজনকে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়।

আদালত সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলায় মোট ছয়জন আসামি দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে  ঢাকার চার নম্বর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুহাম্মদ নুরুল আমিন বিপ্লবের আদালতে মামলাটি বিচারাধীন।

২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে গুলিতে নিহত হন রিয়াজুল হক খান মিল্কি। বিপণিবিতানের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় এ খুনের দৃশ্য ধরা পড়ে। রাতেই উত্তরার একটি ক্লিনিক থেকে চিকিত্সাধীন অবস্থায় যুবলীগ দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ সিদ্দিকী তারেকসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন তারেকসহ দুজন।

মিল্কী হত্যার ঘটনায় তার ভাই মেজর রাশেদুল হক খান বাদী হয়ে তারেকসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে গুলশান থানায় মামলা করেন। এর এক দিন পর এই খুনের মামলা তদন্তে র‌্যাবকে দায়িত্ব দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল মামলাটিতে ১১ জনকে অভিযুক্ত করে র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার কাজেমুর রশিদ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে বাদি নারাজি দাখিল দিলে আদালত তা আমলে নিয়ে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস আরও সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। নতুন আসামিরা হলো তুহিন রহমান ফাহিম, সৈয়দ মুজতবা আলী রুমী, মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ ওরফে আলী হোসেন রাশেদ ওরফে মাহমুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, মো. সুজন হাওলাদার, ডা. দেওয়ান মো. ফরিউদ্দৌলা ওরফে পাপ্পু ও মো. মামুন উর রশীদ।

প্রথম অভিযোগপত্রের ১১ আসামির মধ্যে রয়েছেন মিল্কির গাড়িচালক মারুফ রেজা সাগরের স্ত্রী ফাহিমা ইসলাম লোপা, সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, মো. জাহাঙ্গীর মন্ডল, মো. সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, মো. চুন্নু মিয়া, মো. আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, মো. সাহিদুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ও  মো. শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু।

প্রথম দফা চার্জশিটের আসামিদের মধ্যে পাঁচজন জামিনে বেরিয়ে গা ঢাকা দেন। পলাতক চঞ্চল, আরিফ হোসেন, ইব্রাহিম, পাপ্পু ও লোপাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।

ঢাকার চার নম্বর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মহিউদ্দিন দেওয়ান জানান, আগামী ২৬ অক্টোবর মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/মোআ)