গমের পর এবার পচা চাল আমদানি করছে সরকার: রিজভী

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পচা গমের পর সরকার এবার পচা চাল আমদানি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।’ তিনি বলেন, ‘ভোটারবিহীন সরকার পচা সরকার। তাই পচা সরকারই পচা গম-চাল আমদানি করতে পারে। পচা গমের পর এবার পচা চাল আমদানি করা হয়েছে। এই চাল নিয়ে দেন-দরবার করতে গিয়ে দুদিন আগে ফাঁস হয়ে যায় পচা চালের গোমর, যেগুলো একেবারেই খাওয়ার অনুপযোগী।’

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা প্রায় ৩২ হাজার ১৪০ টন চাল নিয়ে দু’টি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। এর মধ্যে গত ৩১ আগস্ট এমভি থাই বিন বে নামের একটি জাহাজ ১২ হাজার ২৯০ টন চাল নিয়ে এবং এমভি ডায়মন্ড-এ নামের অপর চালবাহী জাহাজ ১৯ হাজার ৮৫০ টন চাল নিয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। এসব চাল নিয়ে দেনদরবার করতে গিয়ে দু’দিন আগে ফাঁস হয়ে যায় পচা চালের গোমর, যেগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের ও খাওয়ার অনুপযোগী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেহেটু পচা চালের ঘটনা ফাঁস হয়ে গেছে সেজন্য এগুলো খালাস করা যাবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। তাই খাদ্য বিভাগ থাইল্যান্ডের জাহাজ দুটিকে তাদের চাল ফিরিয়ে নিতে বলেছে। কিন্তু জাহাজের সংশ্লিষ্টরা চাল ফেরত না নিয়ে চালগুলো বেসরকারিভাবে হলেও বিক্রি করে যাবেন। সেজন্য গত মঙ্গলবার থেকে তারা যোগাযোগ করেন চট্টগ্রামসহ দেশের বেশ কয়েকটি চাল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এরপর থেকে পচা চাল নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় চট্টগ্রামজুড়ে। প্রায় এক মাস আগে থাইল্যান্ড থেকে পচা গমের চালান আসার পরও এখনও জাহাজ দুটি চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকায় একটি জিনিস পরিষ্কার যে, এর পেছনে সরকারের রাঘব-বোয়ালরা জড়িত।’

রিজভী বলেন, চাল সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা এবারের সংসদ অধিবেশনে আলোচনায় গুরুত্ব পেল না। সত্যিকার অর্থে যেটা জনসাধারণের মরা-বাঁচার বিষয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ভোটারবিহীন সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসন ও লুটেরা নীতির কারণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এখন শূন্যের কোঠায়। বিনিয়োগ না হওয়ায় এবং উৎপাদন দিন দিন কমতে থাকায় আমদানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে দেশ। ফলে আমদানি খাতে ব্যয় বাড়তে থাকায় বাইরের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। সাত বছরের সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস শেষে এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে চার গুণের বেশি।’

রিজভী বলেন, ‘দেশে একদলীয় শাসন বিদ্যমান থাকায় পোশাক রপ্তানিতে ধ্স, সরকারের চরম ব্যর্থতার কারণে বিদেশে কর্মক্ষম শ্রমিক পাঠানো বন্ধ রয়েছে। ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহের ক্রমাবনতি, চামড়াশিল্পে ব্যাপক ধ্স, বিশেষ করে আর্থিক খাতে ভয়াবহ নৈরাজ্য ও লুটপাটের কারণে দেশে বর্তমানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নেই। যে কারণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। সুতরাং বর্তমানে ভয়াবহ খাদ্য সংকটের পাশাপাশি সীমাহীন বেকারত্ব যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে কোনোভাবে দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যাবে না।’

সংবাদ সম্মলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কাজী আবুল বাশার, সানাউল্লাহ মিয়া।

ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এমআর