তারা দু’জন

মনোনেশ দাস, ময়মনসিংহ
 | প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:৪০

মানুষ কুকুরকে পোষ মানিয়েছে সভ্যতার সেই শুরুর সময়কার দিনে। তখন থেকে আজ অবধি কুকুর মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী, অকৃ্ত্রিম বন্ধু হয়েই আছে। কুকুর পোষা মানেই এ প্রাণীটির সাথে ভালোবাসার এক নিঃশর্ত বন্ধনে জড়িয়ে যাওয়া। মানুষ ভুলে যায়, বিশ্বাসঘাতকতা করে, কিন্তু কুকুর করে না। কুকুর যার পোষ মানে তার পাশেই থেকে যায় আমরণ।

জীবন সায়াহ্নে এসে এমনই এক বিশ্বস্ত বন্ধুর দেখা পেয়েছেন এক হতদরিদ্র বৃদ্ধা। একটি কুকুর তার জীবনে এনে দিয়েছে পূর্ণতা। পোষা কুকুরের সাথে এই বৃদ্ধার এমনই গভীর সম্পর্ক যে, তারা একে অপরের খেলার সঙ্গীই শুধু নয়, একজন অপরজনের নিসঙ্গতারও সঙ্গী। তারা দুজন ফুটপাতে থাকেন একসাথে। এ পথে হাঁটাচলা করা বহু মানুষকে এই দুজন জীবনকে ভালবাসতে শিখিয়েছেন, দায়িত্ব নিতে শিখিয়েছেন।

বৃদ্ধার ঠিকানা ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলা পৌরশহরের মসজিদ মার্কেটের সামনের ফুটপাত।

গেলো দু’বছর হলো, স্থানীয়রা রাত হলে এখানেই পোষা কুকুর নিয়ে একসাথে ঘুমাতে দেখেন বৃদ্ধাকে। সারাদিন একসাথে তাদের ঘোরাফেরা।

নাম জানা নেই বলে ছেলে-বুড়ো সবাই এই বৃদ্ধাকে ডাকেন কুকুর বুড়ি বলে। তিন কূলে কেউ তার আছে কিনা তা কেউ জানে না। নাম না জানা এই বৃদ্ধার ঘর নেই, পরিবার নেই, নেই কোনো আত্মীয় স্বজন। আছে ফুটপাতে পোষা এক কুকর, আর তাকে নিয়েই ভালো থাকার চেষ্টা।

কুকরটিকে মায়ের মমতায়, স্নেহে হাত বুলিয়ে দিতে দেখা যায় বৃদ্ধাকে। কুকুরও বৃদ্ধার গালে গাল লাগিয়ে আদর করে দেয়। সন্তানের মতন দেখে শুনে রাখে বৃদ্ধাকে। কেউ তাকে জ্বালাতে এলে কুকরটা তেড়ে যায়। তখন বৃদ্ধা পেছন থেকে ডাকলে কুকুরটি নতজানু হয়ে ফিরে আসে তার কাছে।

এই বৃদ্ধাকে কারো কাছে হাত পেতে কখনও কিছু চাইতে দেখেননি কেউ। কেউ কিছু দিলে অথবা কোথাও থেকে কুড়িয়ে বাড়িয়ে কিছু পেলে তাই এনে সিএন্ডবি অফিসের সামনে কাগজ জালিয়ে রান্না করেন তিনি। কি রাধেন কিভাবে রাধেন কে বলবে? তবে রান্না শেষ হলে তাকে আর তার কুকুরকে একসাথে খাওয়া সারতে দেখেন লোকজন। যেন একটা ছোট্ট সংসার, এভাবেই চলে যাচ্ছে ওদের।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/ব্যুরো প্রধান/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :