‘থাপ্পড়’ মেরে তোপের মুখে উপজেলা চেয়ারম্যান

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:১১ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:১৫

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

জনপ্রিয় এক গ্রাম্য চিকিৎসককে ‘থাপ্পড়’ মেরে নিজের এলাকায় সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়েছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু।

বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামবাসী তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

এরপর শুক্রবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান সান্টুর শাস্তির দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়।

সান্টু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ি বাগমারার খালিশপুরে। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি খালিশপুর বাজারে অনুসারীদের নিয়ে বসেছিলেন। এ সময় তার কয়েকজন অনুসারী আবদুর রশিদ নামে বাজারের একটি ওষুধের দোকানের মালিক ও গ্রাম্য চিকিৎসককে ধরে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যান।

ওসি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগ্নে শিশিরের সাথে ওই গ্রাম্য চিকিৎসেকর কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এ জন্য তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আবদুর রশিদকে একটি ‘থাপ্পড় মারেন’ চেয়ারম্যান সান্টু। চেয়ারম্যানের অনুসারীরাও তাকে মারপিট করেন। কিন্তু আবদুর রশিদ এলাকায় খুব জনপ্রিয়। এ কারণে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসী।

এক পর্যায়ে স্থানীয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীদের ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা খালিশপুর বাজারের বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেন। এরপর স্থানীয়রা ওই বৃদ্ধাশ্রম ভবনও ঘেরাও করে রাখেন। পরে গ্রামবাসী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

স্থানীয়রা জানায়, বিক্ষুব্ধ লোকজন রাতে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেয়। পরে রাত ১২টার দিকে পুলিশ এসে অবরুদ্ধ উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের উদ্ধার করে।

এর আগে স্থানীয়রা আহত গ্রাম্য চিকিৎসক আবদুর রশিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে বড়বিহানলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে এলাকার প্রায় দেড় হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেন। তারা উপজেলা চেয়ারম্যান সান্টুর শাস্তি দাবি করেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান আলী হিরু, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মতিন, স্থানীয় যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবরি ইয়াসমিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল মালেক নয়ন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা প্রমুখ।

বাগমারা থানার ওসি নাসিম আহমেদ বলেন, মারপিটে আহত গ্রাম্য চিকিৎসক আবদুর রশিদ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। একটু সুস্থ হয়ে উঠলে থানায় লিখিত অভিযোগ করতে চেয়েছেন। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু দাবি করেন, তিনি কাউকে মারপিট করেননি। আবদুর রশিদই তার লোকজনকে মারধর করেছেন।

সান্টু বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাই দলের একটা অংশ তার বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্র করছে। এর অংশ হিসেবেই তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/আরআর/এলএ)