সবুজে মোড়ানো এক মহাসড়ক
‘বন্ধু একটু দাঁড়াও, এলোমেলো বাতাসের পাবে সাড়া, বন্ধু হবে স্বচ্ছ আকাশ, বন্ধু কৃষ্ণচূড়া’ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত প্রায় ৮৭ কিলোমিটার মহাসড়কের ১৩ ফুট ডিভাইডারের সবুজ বৃক্ষরাজি যেন পরিবহন যাত্রীদের ডেকেই যাচ্ছে সবুজের ছায়ায় গা জুড়িয়ে নেয়ার জন্য। তথ্যপ্রযুক্তির এ যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে ইট পাথর ঘেরা শহর ছেড়ে বেড়িয়ে পড়লেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চোখে পড়বে এক সবুজের হাতছানি। সড়কের ডিভাইডারের উপর বিভিন্ন জাতের বৃক্ষরাজির সমাহারে যানবাহনে থেকেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। বিভিন্ন ফুলের সমারোহে এখন বর্ণিল হয়ে উঠেছে এই মহাসড়ক।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডিভাইডারের উপর প্রায় ৪০টি প্রজাতির বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ আপনাকে স্বাগত জানাবে। ফুলের গাছগুলো মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে, নীল কাঞ্চন, কামিনী, কৃষ্ণচূড়া, জোগা টগর, রাধাচূড়া, অগ্নিশ্বর, পলাশ, গৌরীচূড়া, কনক চূড়া, কনক চাঁপা, কদম, কাঠ বাদাম, জারুল, রক্ত কবরীসহ ৪০টি ফুলের জাত মহাসড়কের ডিভাইডারের উপর রোপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ঔষধি গাছের মধ্যে শুধুমাত্র নিম গাছ রয়েছে। মহাসড়কে ভ্রমণ আনন্দদায়ক ও পরিবেশবান্ধব করতে ঋতুর সঙ্গে মিল রেখে নানান প্রজাতির গাছ এবং ঋতুভিত্তিক ফুলগাছ রোপণ করা হয়েছে। আর কিছু প্রজাতির গাছ বড় হয়ে যাওয়ায় তার ছায়ায় পথচারীরা বিশ্রাম নিয়ে থাকেন।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ময়মনসিংহ বিভাগের সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘœ ও নিরবচ্ছিন্ন করতে জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করতে প্রকল্প গ্রহণ করেন বর্তমান সরকার। ২০১০ সালের জুলাইয়ে এ প্রকল্পটি একনেক অনুমোদন দেয়। ৮৭ দশমিক ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৯৯২কোটি টাকা। অবশ্য পরবর্তী সময়ে একাধিকবার ব্যয় বেড়ে গিয়ে সংশোধিত প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়ায় এক হাজার ৮১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। মহাসড়কের ডিভাইডারের উপর সর্বমোট প্রায় এক লাখ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ১৭ইসিবি চারটি প্যাকেজে একাজের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ১৭ ইসিবি মেজর ও প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর সেলিম ঢাকাটাইমসকে বলেন, মহাসড়ক দৃষ্টিনন্দন করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন ৩০ জন শ্রমিক এই গাছগুলোর পরিচর্যা করে থাকে। ইতিমধ্যে, মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় গাছগুলো যাত্রীদের নজর কাড়ছে। গাছগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যাপকভাবে অবদান রাখবে।
(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)