ছয় লাখ টাকার জন্য শাহাবুলকে গলাকেটে হত্যা
জমি কিনতে বায়না দেয়া ছয় লাখ টাকার জন্য রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাশিয়াডাঙা ফেরতাপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলামকে গলাকেটে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছেন তার মা মালেকা বেগম। ছেলে খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে তিনি এমন দাবি করেছেন।
শুক্রবার রাতে মালেকা বেগম বাদী হয়ে পবা থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে শুক্রবার সকালে পবার কৈকুড়ি এলাকার একটি রাস্তার পাশের জঙ্গল থেকে শাহাবুলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শাহাবুল রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ফেরতাপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পুকুরে মাছ চাষ করতেন। এছাড়া তিনি জমি কেনা-বেচার ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। গত বেশ কিছুদিন ধরে একজন জমি বিক্রেতার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলে আসছিল বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পবা থানার পুলিশ পরিদর্শক হাসমত আলী জানান, মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি তদন্ত কর্মকর্তা।
যদিও শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত শাহাবুলের মায়ের বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, একটি জমি কিনতে শাহাবুলকে জমির মালিককে ছয় লাখ টাকা বায়না দিয়েছিলেন। বাকি টাকা জমির রেজিস্ট্রি দেয়ার সময় পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই জমির মালিক রেজিস্ট্রি দিচ্ছিলেন না। আবার বায়নার ছয় লাখ টাকাও তিনি ফেরত দিচ্ছিলেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
এই দ্বন্দ্বের মীমাংসার নামে বৃহস্পতিবার রাতে কাশিয়াডাঙা মোড় থেকে একটি প্রাইভেটকারে করে এক আত্মীয়ের সামনে থেকেই শাহাবুলকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এ কারণে জমির ওই বিক্রেতাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে। বাকি পাঁচ আসামির মধ্যে জমি বিক্রেতার ছেলেসহ তার নিকটাত্মীয়রা আছেন।
মামলার এজাহারে শাহাবুলের মা এমন দাবি করলেও স্থানীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, জমি কেনা-বেচার ব্যবসার পাশাপাশি নিহত শাহাবুল ক্রিকেট খেলায় বাজি খেলতেন। আসামিদের একজনের কাছে তিনি ছয় লাখ টাকা জিতেছিলেন। তিনি টাকা পরিশোধ করতে না পেরে তার একটি জমি শাহাবুলকে লিখে দিতে চেয়েছিলেন। এরই মধ্যে শাহাবুলকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।
জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা হাসমত আলী বলেন, এ বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। তবে নিশ্চিত হতে পারেননি। মামলার এজাহারসহ পুরো বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই অপহরণের পর হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসবে। তাদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/আরআর/এলএ)