জার্মানিতে আজ ভোট, এগিয়ে মের্কেল

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৮:৪২

ইউরোপ ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

রাত পোহালেই জার্মানির জাতীয় নির্বাচন। আজ রবিবার জার্মানির উনিশতম নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই  মুহূর্তে বিশ্বের  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন বলা যায় এটিকে। কিন্তু মিছিল নেই, মিটিং নেই, মাইক নেই, নেই পথসভা হইহুল্লোড়। নির্বাচন নিয়ে যা আছে তা হলো দেশজুড়ে নির্ধারিত জায়গায় বিলবোর্ডে দলের ও প্রার্থীদের ছবি বা বক্তব্য-সংবলিত পোস্টার এবং পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে দলীয় বিজ্ঞাপন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন আজ রবিবার নির্বাচন হওয়াই রেওয়াজ এ দেশে। সুতরাং নির্বাচনের খাতিরে বাড়তি ছুটির বরাদ্দ নেই। জার্মানির নির্বাচন আইন অনুযায়ী নির্বাচন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হলো জার্মানির নির্বাচন প্রশাসনের। নির্বাচনী প্রশাসন ইতিমধ্যেই ভোটারদের বাড়িতে ছয় সপ্তাহ আগে নির্বাচনী এলাকার নাম ও ভোটকেন্দ্রের ঠিকানা ও ভোট দেওয়ার সময়সহ কার্ড পাঠিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনে সহয়তার জন্য প্রশাসন জার্মানিজুড়ে ছয় লাখ স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দিয়েছে। এসব স্বেচ্ছাসেবীরা নির্বাচনের দিন সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন। এরাই ভোট গণনাসহ সব কাজ সম্পন্ন করে নির্বাচনের ফলাফল স্থানীয় নির্বাচন প্রশাসনিক দপ্তরে পাঠিয়ে দেবেন। ভোটাররা তাদের কাছে পাঠানো নির্বাচনী কার্ড ও পরিচয়পত্র নির্বাচনী স্বেচ্ছাসেবীদের দেখিয়ে ভোট দিতে পারবেন।

এ বছর জার্মানে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ছয় কোটি ১০ লাখ। নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি ১০ লাখ আর পুরুষ ভোটারের সংখ্যা তিন কোটির কাছাকাছি। এই ভোটাররা প্রত্যেকে দুটি করে ভোট দিতে পারবেন। একটি ভোট প্রার্থীকে অপরটি দলকে। কোনো দল মোট ভোটের ৫ শতাংশ ভোট না পেলে সেই দলের সংসদে যাওয়ার সুযোগ নেই। জার্মান পার্লামেন্টে ৫৯৮ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হবে, আর বাকি ২৯৯ আসনে দলীয় ভোটপ্রাপ্তির শতাংশের হিসাব অনুযায়ী বিভিন্ন দলের তৈরি করা সাংসদ প্রার্থী তালিকা থেকে সংসদ সদস্য হবেন।

নির্বাচন হওয়ার চার দিন আগে পার্লামেন্টের শেষ অধিবেশনে সব দলের সাংসদেরা বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে একে অপরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং জার্মানির গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করেছেন।

জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ও ক্ষমতাসীন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন দলের সভানেত্রী জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল এবারও চতুর্থবারের মতো তার দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের নেতা ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাবেক সভাপতি মার্টিন শুলজ। তবে এর বাইরে রয়েছে বর্তমান পার্লামেন্টের বিরোধী দল, বাম দল, পরিবেশবাদী সবুজ দল, লিবারেল গণতান্ত্রিক দল এবং কট্টর ডানপন্থী জার্মানির জন্য বিকল্প নামক দলটি।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ক্ষমতাসীন জোট সরকারের বড় শরিক দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পেতে যাচ্ছে ৩৬ শতাংশ ভোট, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দল ২২ শতাংশ আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে চার বছর আগে গঠিত কট্টর ডানপন্থী জার্মানির জন্য বিকল্প নামক দলটি পেতে যাচ্ছে ১০ শতাংশ ভোট। ইসলাম, শরণার্থী ও অভিবাসী বিরোধী জার্মানির জন্য বিকল্প বা অল্টানেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড নামের দলটি এবারের পার্লামেন্টে ভোট প্রাপ্তির শতাংশ হিসাবে ৭০ আসন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জার্মান পররাষ্টমন্ত্রী সামাজিক গণতান্ত্রিক দলের নেতা সিগম্যার গাব্রিয়েল বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ৭০ বছর পর জার্মানিতে এই ধরনের অতি জাতীয়তাবাদী বর্ণবাদী ধর্মবাদী দল অল্টানেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড দলটিকে সমবেত রাজনীতি দিয়েই  মোকাবিলা করতে হবে।

জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল বলেন, গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে আপনারা সবাই ভোট দিতে যাবেন এবং জার্মানির সংবিধানকে যারা শতভাগ নিরাপদ রাখবেন, সেই দলগুলোকেই ভোট দেবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/জেএস)