লন্ডনে আবার অ্যাসিড হামলা, আহত ৬

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১০:২৪ | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:৩৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের পূর্বাংশের স্ট্রাটফোর্ড এলাকায় কথিত অ্যাসিড হামলার ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার রাত আটটার আগে ওয়েস্টফিল্ডের অপর পাশে স্ট্রাটফোর্ড সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, যারা আহত হয়েছেন বলে খবর হয়েছে তারা সবাই পৃথক অবস্থানে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুরুষদের একটি দল লোকজনের ওপর ক্ষতিকর পদার্থ স্প্রে করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর অ্যাম্বুলেন্স ও দমকল বাহিনীকেও খবর দেওয়া হয়। ঘটনাটি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের পল গিবসন জানান, ছয়জনকে ঘ্টনাস্থলেই চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের কারো আঘাতই প্রাণঘাতী বা জীবন পাল্টে যাওয়ার মতো গুরুতর নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একদল লোকের মধ্যে তর্কাতর্কি চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী তাহসিন তাজ জানান, ‘পৌনে নয়টার দিক থেকেই আমি অনেক অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের গাড়ির শব্দ পাই। কিন্তু এদিন ওয়েস্ট হ্যামের ম্যাচ থাকায় আমি ভেবেছিলাম, এটা ফুটবল নিয়ে কোনো ঝগড়া। কিন্তু কিছু সময় পরেও শব্দ শুধু বাড়তেই থাকে। পরে দেখি সেখানে অনেক দমকলের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স আর পুলিশ। সত্যি বলতে বেশ বিশৃঙ্খল অবস্থা। এ সময় আমি সত্যিই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম।’

চলতি বছর লন্ডনে বেশ কয়েকটি অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত জুলাই মাসে দুই ব্যক্তি মোটর সাইকেলে চড়ে মাত্র ৯০ মিনিটে পাঁচটি অ্যাসিড হামলা চালায়। এর আগে চলতি বছর লন্ডনে ইস্টার মানডেতে একটি নাইট ক্লাবে জড়ো হওয়া মানুষজনের ওপর অ্যাসিড মারা হয়। দুই জন এতে অন্ধ হয়ে যান। বাকিদের চেহারা বিকৃত হয়ে যায়। এছাড়াও লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস বারার বেথনালগ্রিন এলাকায় গত ২৬ জুলাই অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপে দুই বাঙালি আহত হন।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্যে জানা যায়, ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের রাজধানীতে ৪৫৮টি অ্যাসিড হামলা হয়, যেখানে তার আগের বছর হয়েছিল ২৬১টি। ইংল্যান্ডে অ্যাসিড হামলার ঘটনা ২০১২ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।

এসব হামলার অধিকাংশই ঘটেছে লন্ডনে। এই শহরে ২০১০ সাল থেকে এক হাজার ৮০০ এর বেশি হামলায় দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়। প্রথমদিকে প্রতিশোধমূলক হামলায় অ্যাসিডের ব্যবহার হলেও পরে ধীরে ধীরে গাড়ি ডাকাতি ও ছিনতাইয়েও তা ব্যবহার করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি কারণে হামলকারীরা প্রথম পছন্দ হিসাবে অ্যাসিডকেই বেছে নিচ্ছেন। প্রথমত, ছুরি নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ যতোটা গুরুতর, অ্যাসিড হামলার অভিযোগ  ততোটা নয়। তাছাড়া ছুরি হামলার চেয়ে অ্যাসিড হামলায় সাজাও কিছুটা কম হয়। দ্বিতীয়ত, অ্যাসিড হামলায় ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার সুযোগ তেমন থাকে না। একটি ছুরির তুলনায় এসিড হামলায় ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল নষ্ট করে ফেলা বেশি সহজ। তৃতীয়ত, অ্যাসিড খুবই সহজলভ্য।

(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/জেএস)