তুফান-মতিনের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:২৭ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:৪০

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে

কিশোরীকে ধর্ষণ ও মাকে নির্যাতনের ঘটনার পর বগুড়ার বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার ও তার বড়ভাই মতিন সরকারের অবৈধ অর্থের সন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২১ সেপ্টেম্বর তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের অনুমতিপত্র পেয়েছে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়।

জানা যায়, গত জুলাই মাসের শেষে তুফান সরকার ও মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদের কথা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান (যাচাই বাছাই) শুরু করে। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কৃত তুফান সরকার ও তার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বড়ভাই বগুড়া শহর যুবলীগ নেতা (বহিষ্কৃত) আব্দুল মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য মিলেছে।

তুফান সরকার গত ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির প্রলোভন দিয়ে এক ছাত্রীকে বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুরের নিজ বাসায় কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর ঘটনা জানাজানি হলে ২৭ জুলাই বিচারের নাম করে শহরের বাদুরতলাস্থ বাসায় ধর্ষিতা কিশোরী ও তার মাকে মারপিট করে মাথা ন্যাড়া করে দেন তুফান সরকারে স্ত্রী আশা সরকার ও তার বড় বোন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ সহযোগীরা। আহত মা-মেয়েকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করার পর হৈ চৈ পড়ে যায়। ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মূল হোতা তুফান সরকারসহ তার চার সহযোগীকে।

এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় তুফান সরকারকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাথা ন্যাড়া ও মারপিটের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলার অপর আসামি তুফানের স্ত্রী আশা, বড়বোন মার্জিয়া হাসান রুমকি, রুমকির বাবা, মা, তুফানের সহযোগীসহ ১১ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর কয়েক দফা তাদের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জেলহাজতে পাঠায়।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুইজনের জামিন হয়েছে। মামলার ভিকটিম মা ও মেয়ে বর্তমানে নিরাপত্তার কারণে রাজশাহী ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছেন।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই মাসের শেষে প্রথমে গণমাধ্যমে তুফান সরকার ও মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদের সংবাদ প্রকাশিত হলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান (যাচাই বাছাই) শুরু করে। এরপর বগুড়া কার্যালয় থেকে ২ আগস্ট প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক (তদন্ত) বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে তাদের সম্পদ অনুসন্ধানের অনুমতি চাওয়া হয়।

দুদক বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের অনুমতি চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছিল। এই পত্রের পর গত ২১ সেপ্টেম্বর আমাদেরকে সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তুফান ও মতিন সরকারের সব স্থাবর অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দেয়া হবে তাদের। হিসাব জমা দিলে সে হিসাবের তদন্ত শেষ করা হবে। এরপর জমা দেয়া হিসাবের সাথে মিল না হলে মামলার অনুমতি চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হবে।

এ ধরনের মামলায় সর্বোচ্চ ১৩ বছরের শাস্তি হতে পারে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)